সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৬:৪৬ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৩, ২০২৩
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সিলেট-২ আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে আবারো স্বপ্ন দেখছেন বিশ্বনাথের মেয়র মুহিবুর রহমান। তিনি অতীতে শুধু ইউনিয়ন পরিষদ ছাড়া সংসদ, উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভাসহ সব নির্বাচনেই অংশ নিয়েছেন। তবে বাড়তি জনসেবা করতে তার এমপি নির্বাচিত হওয়ার স্বপ্ন কখনো পূরণ হয়নি।
তাই তিনি কখনো জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হাল ছাড়তে নারাজ। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে জোর প্রচারণায় রয়েছেন ব্যস্ত। তবে এবারের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে তিনি শ্যাম রাখি না কুল রাখি নীতি নিয়ে রয়েছেন দোটানায়।
কারণ গত ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হন। এবারের নির্বাচনেও যদি এমনটি হয় তাহলে তার আম-ছালা দুটোই হারাতে হবে। তাই তিনি মেয়র পদে থেকে পদত্যাগ না করে কিভাবে এমপি প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা যায় সেই আইনের খোঁজে রয়েছেন। তার মতে, মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ না করেই তিনি এমপি নির্বাচন করতে পারবেন।
কিন্তু তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশন বলেছেন চেয়ারম্যান মেয়রের পদ থেকে পদত্যাগ করে জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হতে হবে। আর এ ঘোষণার পর তিনি বলছেন কিভাবে পদত্যাগ করে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া যায় না সেটি খতিয়ে দেখছেন বলে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাসও দিয়েছেন। তার এই স্ট্যাটাসটি হুবহু ধরে তুলা হলো।
তিনি স্ট্যাটাসে বলেন, ‘বিভ্রান্ত হবেন না! নির্বাচন কমিশনের সাম্প্রতিক নির্দেশনায় নির্বাচন বিধি উল্লেখ করে মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ করে সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা বলেছে। কিন্তু গত সংসদ নির্বাচনে মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান বা ইউপি চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ না করেও সংসদ নির্বাচনে অনেকেই অংশগ্রহণ করেছেন এবং হাইকোর্টেও ওই সমস্ত মনোনয়ন বৈধ ঘোষিত হয়েছে। যেহেতু আমাদের জানামতে ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর এ সংক্রান্ত কোনো বিল জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হয় নাই বা আইনের পরিবর্তন বা পরিবর্ধন হয় নাই, সেহেতু মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ না করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণে বাধা না থাকারই কথা। আমরা বিষয়টি আরও গভীরভাবে খতিয়ে দেখছি এবং বিজ্ঞ সংবিধান বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিচ্ছি। যে অবস্থাতেই হোক আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহণ করতে প্রস্তুত।’
পৌরসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হওয়ার এক বছরের ভেতরে এবার এমপি হতে চান মেয়র মুহিবুর রহমান। গত ২০২২ সালের ২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। তবে মেয়র পদে নির্বাচিত হয়েই সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমে পড়েন। এ নিয়ে চলছে ওসমানীনগর-বিশ্বনাথে আলোচনা।
কয়েক মাস ধরে সিলেট-২ আসনের (বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর) সর্বত্র চষে বেড়াচ্ছেন। গ্রামে-গঞ্জে গিয়ে গণসংযোগও শুরু করেছেন। মেয়রের এমন প্রচারণা আর গণসংযোগকে অনেকেই সমর্থনও দিচ্ছেন।
জানা গেছে, ১৯৮৫ সালে প্রথম বিশ্বনাথ উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেন মুহিবুর রহমান। ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর কাছে পরাজিত হন তিনি। আর ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন চান; কিন্তু এ নির্বাচনে আলহাজ শফিকুর রহমান চৌধুরী নৌকা প্রতীক পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন।
এরপর মুহিবুর রহমান ২০০৯ সালে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে ইয়াহইয়া চৌধুরীকে পরাজিত করে দ্বিতীয়বারের মতো উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। গত ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে এই উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে তিনি সংসদ সদস্য প্রার্থী হন। ওই নির্বাচনে জাতীয় পার্টির নেতা ইয়াহইয়া চৌধুরীর কাছে পরাজিত হন।
এছাড়াও ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও প্রার্থী হন মুহিব। ওই নির্বাচনে গণফোরামের প্রার্থী মোকাব্বির খানের সঙ্গেও তিনি পরাজিত হন।
বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান বলেন, তিনি মেয়র থেকে পদত্যাগ না করেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন। রিটার্নিং অফিসার বাদ দিলে পরবর্তীতে হাইকোর্টে গেলে তার মনোনয়ন বৈধতা পাবে বলে তিনি আশাবাদী।
এছাড়াও তিনি বলেন, সংসদ নির্বাচনে যতবারই প্রার্থী হয়েছেন ততবারই ষড়যন্ত্র করে তাকে পরাজিত করা হয়েছে। জনগণ বারবারই তাকে চাচ্ছে। তাই তিনি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন করতে চান।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd