সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৬:৫৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৩
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে আট দিন ধরে দুলি আক্তার (২৪) নামে এক মেয়ে নিখোঁজ রয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুর পর্যন্ত ওই মেয়ের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় রবিবার (১৭ ডিসেম্বর) ওই মেয়ের বড় বোন মোছা. তাহেরা বেগম জলি কমলগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও পুলিশ সুপার বরাবরে মেইলের মাধ্যমে আবেদন করেছেন।
নিখোঁজ দুলি আক্তার মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের মধ্যভাগ গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমান পুতুল মিয়ার মেয়ে। কয়েক বছর ধরে দুলি আক্তার একই এলাকার জানু বেগম, নিমাই বেগম ও শাহিন তালুকদার এর সঙ্গে থাকেন। তারা সম্পর্কে খালা ও ভাই হয়।
নিখোঁজ দুলি আক্তার এর পরিবার ও থানায় জিডি সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ বছর ধরে দুলি আক্তার তাদের ছেড়ে নিকটবর্তী আত্মীয় (খালা) সঙ্গে বসবাস করছে। দুলিকে পরিবারের সদস্যরা নিতে চাইলেও সে আসতে রাজি হয়নি। সে তার খালার সাথে থাকবে জানায়। পরিবারের দাবী খালারা লোভ লালসার প্রলোভন দেখিয়ে দুলিকে আটক করে রাখে। পরিবারের দাবী দুলি যেহেতু পাশের বাড়িতে আমাদের খালার বাসায় আছে তাহলে আমাদের বাড়িতে না আসলেও সমস্যা না। পরিবারের সদস্যরা দেখভাল করছে। যেহেতু পাশের বাড়িতে আছে।
গত ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ফোন করেন চাচা মুজিবুর রহমান দুলির বড় বোন জলির কাছে। তিনি বলেন, তুমার সৎ খালাতো ভাই শাহিন তালুকদার, খালা জানু বেগম ও নিমাই বেগম এর কাছে দুলি ছিল এখন নাকি বাড়িতে নেই। সন্ধ্যায় পুকুরে কাপড় কাছতে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। অনেক সময় পার হয়ে গেলেও সে আর বাড়িতে ফেরেনি।
পরে তার আত্মীয়-স্বজনসহ পরিবারের লোকজন আশপাশের বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করেও তার কোনো সন্ধান পায়নি। এক পর্যায়ে গেত ১৭ ডিসেম্বর কমলগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন এবং জেলা পুলিশ সুপারের বরাবরে আবেদন পাঠান ইমেইলের মাধ্যমে।
নিখোঁজ দুলির বড় বোন তাহেরা বেগম জলি জানান, ‘আমার খালা জানু বেগম ও নিমাই বেগম ও সৎ ভাই শাহিন তালুকদার আমার বোনকে গুম করে আটক করে রেখেছে। তারাই জানে আমার বোন কোথায় আছে। পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাছে অনুরোধ করছি দ্রুত যেন আমার বোনকে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিতে সহযোগীতা করেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বাবা মা নেই। আমরা এতিম আর দুলি আমাদের সবার ছোট বোন। তাকে কেন আমার খালারা গুম করলো কি চায় তারা আমরা জানিনা। তবে আমার খালারা খারাপ কাজের সাথে লিপ্ত। জানিনা আমরা আমার বোনকে তারা কোন কাজে ব্যবহার করছে।’
অভিযোগের বিষয়ে দুলির খালা মিনাই বেগম জানান, ‘দুলি আমাদের কাছে ছিল এটা সত্য। ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ঘরের বাথরুম রেখে বাহিরের বাথরুমে যাবে বলে বের হয় দুলি। তখন আমি বলি তুমি কেন বাহিরে যাবে ঘরে বাথরুম আছে। ঘরে যাও। তখন দুলির হাতে একটা বাটি ছিল। বাটির মধ্যে ফুলকপির বাধাঁ ছিল। সে বললো খালা আমি বাধাগুলো ফেলে আসি এই বলে ঘর থেকে বের হয় আর ফিরে আসে না। মাত্র ৫ মিনিটের বিতরে দুলি কিভাবে উধাও হলো আমি বুঝতে পারছি না। আমি ফেইসবুকে জানিয়েছি দুলি নিখোজের বিষয়। সকলের সহযোগীতা চেয়েছি খুজে বের করার জন্য।’ পরিবারের দাবী আপনারা দুলিকে গুম করেছেন? উত্তরে বলেন, এসব মিথ্যা কথা। কিভাবে খালা তার মেয়েকে গুম করতে পারে। তারা তিন বোনকে আমরা লালন পালন করে বড় করেছি। দুই বোনকে বিয়ে দিয়েছি। আর দুলি সবার ছোট আমরা লালন পালন করছি। তাহলে দুলিকে কেনো গুম করবো! ’
স্থানীয় ইউপি সদস্য বলেন, দুলিকে উদ্ধারে জন্য আমরা সহযোগীতা করছি।
কমলগঞ্জ থানার এস আই জিয়াউল হক জানান, সাধারণ ডায়েরি হওয়ার পর থেকে এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। পুলিশ দ্রুত সময়ের ভিতরে দুলিকে উদ্ধারের চেষ্টা করছে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd