সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৮:৩৩ অপরাহ্ণ, মার্চ ৭, ২০২৪
তাহমীদ ইশাদ রিপন, বড়লেখা :: মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার বড়লেখা সদর ইউনিয়নের সাতকরাকান্দি ও ডিমাই গ্রামের সিংহভাগ এলাকা পাথারিয়া পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। সাতকরাকান্দি-ডিমাই রাস্তার বেশিরভাগ স্থান উচু উচু টিলার মাঝ দিয়ে চলমান। স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুল আউয়ালের নেতৃত্বে লোকজন প্রায় একমাস ধরে এই রাস্তার মধ্যবর্তী স্থান বতাউরি, বেখিছড়া, আনুর উটনি নামক স্থানের প্রাকৃতিক টিলা কেটে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ করছেন। স্থানটি দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় হওয়ায় টিলা কাটার বিষয়টি লোকচক্ষুর আড়ালেই রয়ে গেছে। আর এই সুযোগে তারা নির্বিচারে পাহাড়-টিলা কেটেই চলেছে। কোথাও দুই টিলাকে চাপ দিয়ে রাখা পাথরের খিল (খুঁটি) কেটে ফেলা হয়েছে। রাস্তা সম্প্রসারণের নামে টিলার কঠিন শিলা পাথর কেটে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ডেকে আনছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লোকজন অনেকটা উৎসব করেই টিলা কেটে রাস্তা প্রশস্ত করছেন। একটি স্থানের দুই টিলার মধ্যখান কাটতে গিয়ে বেরিয়ে আসে লম্বা আকৃতির প্রশস্ত একটি পাথর। বিরল এই লম্বা পাথরটি দেখতে লোকজন ভিড় করছেন। দৃশ্যমান হয় এই পাথরটি দুই টিলাকে চাপ দিয়ে ধরে রেখেছে যাতে কখনও টিলাগুলো ধসে না পড়ে। খুদাই করে এই পাথরটির অংশ বিশেষ কেটে ফেলায় উভয় পাশের টিলায় দেখা দিয়েছে ফাটল। প্রত্যক্ষর্শীরা জানান, এধরনের আরো ৩টি পাথর কেটে ফেলা হয়েছে। ওই স্থানগুলোরও উভয় পাশের টিলা ফেটে গেছে। যে কোন সময় উচু টিলাগুলো ধসে পড়তে পারে।
পাথারিয়া পাহাড়ের পাদদেশের দুই টিলার মধ্যখানের রাস্তা সম্প্রসারণে বেরিয়ে এল কঠিন শিলা পাথরের বিরল বস্তু (খিল)। ধারণা করা হচ্ছে, দুই টিলাকে দাঁড়িয়ে রাখতে প্রকৃতিগত ভাবে এই ধরণের শিলা পাথরের (খুঁটি) সৃষ্টি হয়েছে। এই রাস্তা সম্প্রসারণে ইতিপূর্বে এধরণের একাধিক বস্তু কেটে ফেলা হয়েছে। পরিবেশবিদরা অবৈধভাবে নির্বিচারে পাহাড় টিলা কেটে রাস্তা ও নানা স্থাপনা নির্মাণে বড়ধরণের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশংকা করছেন ।
এদিকে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় হাজার হাজার বছরের পুরাতন প্রাকৃতিক টিলা কেটে রাস্তা সম্প্রসারণের খবর পেয়ে অবৈধভাবে পাহাড় কাটার কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজরাতুন নাঈম। তিনি বলেছেন, পরিবেশ ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে সবধরণের পাহাড়-টিলা কাটা সম্পুর্ণ নিষিদ্ধ। খোঁজ নিয়ে টিলা কাটায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল আউয়াল জানান, লোকজনের যাতায়াতে ও যানবাহন চলাচলের অসুবিধা হওয়ায় জনস্বার্থে এলাকাবাসির চাঁদায় প্রায় এক মাস ধরে রাস্তাটি সম্প্রসারণ করছেন। রাস্তা বড় করতে টিলা কাটায় কোন সমস্যা হবে না। তার দাবী শত শত বছর ধরে এগুলো এই ভাবেই আছে। ইউএনও নাজরাতুন নাঈম বুধবার বিকেলে জানান, এতদিন বিষয়টি তার নজরে আসেনি, কেউ জানায়ওনি। পরিবেশ আইনে সবধরণের পাহাড়-টিলা কাটা সম্পুর্ণ নিষিদ্ধ। টিলা কাটার একটি ছবি দেখেই তাৎক্ষণিক তিনি ভূমি কর্মকর্তাদের পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করিয়েছেন। এব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd