গোয়াইনঘাটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি : সড়কে ৮০ থেকে ৯০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

প্রকাশিত: ৬:৫৮ অপরাহ্ণ, মে ৩১, ২০২৪

গোয়াইনঘাটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি : সড়কে ৮০ থেকে ৯০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

আলী হোসেন, গোয়াইনঘাট :: সিলেটের গোয়াইনঘাটে কমেছে বানের পানি। পানি কমে যাওয়ার সাথে সাথে ফুটে উঠেছে প্রলয়ংকারী এই বন্যার ভয়াবহতার চিত্র। উপজেলার এমন কোন সড়ক নেই যেখানে কোথাও না কোথাও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি। গোয়াইনঘাট-সালুটিকর রাধানগর-বঙ্গবীর-হাদারপাড় সড়কের প্রায় সবকটি সড়কের চিত্র একই। কোথাও কোথাও সড়ক উন্নয়নের কাজ শেষ হয়েছে। কোথাও চলমান ছিলো এমতাবস্থায় আকষ্মিক পাহাড়ী ঢলে সৃষ্ট বন্যায় মারাত্মক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে এসব সড়কের।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সড়কের উপর দিয়ে প্রবল স্রোতের পানি প্রবাহিত হয়ে যাওয়ায় এসব সড়কের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক গোয়াইনঘাট-রাধানগর রাস্তার। এই সড়কের গোয়াইনঘাট ৩ কিলোমিটার উত্তর পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে ছোট বড় শত শত গর্ত চোখে পড়ে। কোথাও কোথাও সদ্য সমাপ্ত সড়ক উন্নয়ন সম্পুর্ন বিনষ্ট হয়ে গেছে। গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় রাধানগর বাজার তথা জাফলং’র সাথে উপজেলা সদরের যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন থাকার পাশাপাশি গবাদি পশু নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকাবাসী। দেখলে মনে হবে রাধানগর সড়কে যেন সুনামির দ্বারা ক্ষত বিক্ষত হয়েছে।
এদিকে গোয়াইনঘাট-পিরিজপুর-সোনারহাট সড়কের গোয়াইনঘাট কলেজ মোড়, আলীরগ্রাম, উনাইর ভাঙ্গা, গোয়াইনঘাট সালুটিকর সড়কের তুড়কভাগ, পেকেরখাল, গোয়াইনঘাট রাধানগর-জাফলং সড়কের কাপাউরা এলাকা, বিন্নাকান্দি, সারী-গোয়াইনঘাট রাস্তা, ভাঙ্গা ব্রীজসহ বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন ও ব্রীজ সমূহের গুড়া থেকে মাটি সরে গিয়ে যোগাযোগ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার মানুষজন জানান, বন্যার ভয়াবহতার চিত্র ফুটে উঠার সাথে সাথে দূর্ভোগ যন্ত্রণাও বেড়ে চলেছে। সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ অথবা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে কোথাও কোথাও।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম জানান, এবারের বন্যায় গোয়াইনঘাটের সর্বত্র সড়ক, কৃষি, অবকাঠামোসহ মারাত্মক ক্ষতি সাধন হয়েছে। বিশেষ করে সড়ক যোগাযোগ এবং নিম্নাঞ্চলের বসতবাড়ী ঘরের চিত্র অত্যান্ত ভয়াবহ। উপজেলার সাথে বিভিন্ন সড়ক যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটছে। আকস্মিক বন্যায় বিভিন্ন ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ও ব্রীজ-কালভার্ট সমূহ-মধ্য জাফলং, পূর্ব জাফলং, লেংগুড়া, সদর ইউনিয়ন, পূর্ব আলীরগাঁও, ডৌবাড়ি, পশ্চিম আলীরগাঁও পরিদর্শনকালে এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো: শফিকুল ইসলাম, উপজেলা কৃষি অফিসার জনাব রায়হান পারভেজ রনি, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জনাব ডা. জামাল খান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জনাব শীর্ষেন্দু পুরকায়স্থ সমন্বয়ে গঠিত টিম উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নের রাস্তাঘাট, সড়ক, ব্রীজ-কালভার্টের অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি, গবাদিপশুর ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করছেন। এসময় এলজিইডি’র উপজেলা প্রকৌশলী কে,পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী এবং পিআইও কে অনতিবিলম্বে নদী ও খালের পার্শ্বস্থ গুরুত্বপূর্ণ স্থানের বাঁধ, ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তাঘাট ও ব্রীজ সমূহকে মেরামত ও সংস্কার করে যানবাহন ও জনচলাচল উপযোগী করতে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
এলজিইডি’র উপজেলা প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, এখনো অনেক রাস্তাঘাট পানির নিচে নিমজ্জিত থাকায় ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ নির্নয় করা যাচ্ছে না। তবে আনুমানিক ৮০ থেকে ৯০ কোটি হতে পারে বলে জানান তিনি।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..