সিলেট ৭ই জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৩০শে জিলহজ, ১৪৪৫ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:৩৫ অপরাহ্ণ, জুন ১, ২০২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় এক প্রবাসীর স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। শনিবার সকালে উপজেলার পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের দেড়িখাই গ্রামের বাসিন্দা আরব-আমিরাত প্রবাসী জসিম উদ্দিনের স্ত্রী এক সন্তানের জননী সুহাদা বেগমের লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রবাসী জসিম উদ্দিন দেড়িখাই গ্রামের মুশাররফ আলীর ছেলে ও সুহাদা বেগম একই গ্রামের বাসিন্দা প্রতিবেশী মৃত আব্দুল খালিক খানের মেয়ে।
সুহাদার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৮ এপ্রিল জসিম উদ্দিনের সাথে সুহাদা বেগমের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে এক কন্যাসন্তান জন্ম নেয়। জসিম উদ্দিন প্রবাসে থাকায় সুহাদা বেগম শ্বশুরালয়ে তার ৫ বছর বয়সী কন্যাসন্তান নিয়ে ভাসুরের পরিবারের সাথে বসবাস করে আসছেন। সেই সুবাদে ভাসুর সেলিম আহমদ ও তার স্ত্রী সুনারা বেগম মিলে সুহাদার সাথে ঝগড়া করতে থাকেন। এমনকি সুহাদাকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করেন। কিন্তু সুহাদা প্রায় সময় তার পিত্রালয়ের লোকজনের সাথে বিষয়টি অবগত করতেন। পরে পারিবারিকভাবে বিষয়গুলি সমাধান হয়। কিন্তু ভাসুর সেলিম সুহাদার কাছে থাকা টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার হাতিয়ে নিতে মারিয়া হয়ে উঠে। সুহাদা সেগুলো না দেওয়াতে সেলিম আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।
গত শুক্রবার রাতে সুহাদার ভাসুর সেলিম ও তার স্ত্রী সুনারা বেগম মিলে সুহাদার উপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। এমনকি তাকে বিভিন্ন অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। সেই বিষয়টি সুহাদা বেগম তার স্বামীর কাছে ওয়াটসাপ ভয়েজের মাধ্যমে বলেন। এমনকি স্বামীর কাছে দেওয়া ভয়েজ তার পিত্রালয়ের পরিবারের লোকজনকেও দেন সুহাদা। সেই বিষয়টি জানতে পারেন সেলিম। এরপর থেকে আর সুহাদার সাথে তার পিত্রালয়ের লোকজন কোন প্রকার যোগাযোগ করতে পারেননি। পরে সকালে শুনতে ভাসুর সেলিমের ঘরে সুহাদার ঝুলন্ত লাশ।
জানতে নিহত সুহাদার বড় ফয়সল আমহদ খান কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ‘আমার বোন আত্মহত্যা করেনি। তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমার বোনের স্বামী প্রবাসে থাকায় তার ভাসুর সেলিম তাকে টাকার জন্য প্রায়সময়ই মারধর করতো। আমরা একাধিকবার মিমাংসা করেছি। আমার বোন শুক্রবার রাতে তাদের নির্যাতনের একটি ভয়েজ তার স্বামীর কাছে পাঠিছে। সে ভয়েজটি আমাদের কাছেও দিয়েছে। আমরা ঘুমে থাকায় শুনতে পারিনি। কিন্তু সকালে শুনতে পাই আমার বোনের লাশ। সেলিমই আমার বোনকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখেছে। সে আমার বোনকে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে। সেলিম আমার বোনের সকল টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে রাতেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করেছে। সেলিমকে পাওয়া যায়নি। সেলিমের মা ও তার স্ত্রী বলছেন সেলিম টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়েছেন।
সুহাদা বেগমের লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে গোয়াইনঘাট থানার এসআই জাহাঙ্গীর।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd