সিলেট ৭ই জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৩০শে জিলহজ, ১৪৪৫ হিজরি
প্রকাশিত: ৬:৫৪ অপরাহ্ণ, জুন ৪, ২০২৪
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সিলেটে গতকাল সোমবারের ভারী বর্ষণে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে ছিল সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটির প্রবেশপথ। ফটক থেকে শুরু করে প্রশাসনিক ভবন, কলেজ ফটক, ছাত্রীনিবাস ও ছাত্রাবাসেও পানি উঠে যায়। ফলে সেখানে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগী ও তাঁদের স্বজনদের পাশাপাশি দুর্ভোগে পড়েন চিকিৎসক, শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সূত্র জানায়, হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের নীচ তলায় হাঁটু পর্যন্ত পানি জমে বিপুল অর্থের সম্পদ নষ্ট হয়েছে। হাসপাতালের ঔষধপত্র, ব্যবহার্য্য সামগ্রী, রোগীদের আসবাবপত্র, খাট, আলমিরাসহ আনুষাঙ্গিক দ্রব্যাদি নষ্ট হয়েছে। নষ্ট হয়েছে লিফটের কেবল নেটওয়ার্কসহ সরবরাহকৃত বিদ্যুৎ লাইন।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ওয়ার্ডের মধ্যে ২৭ নং ও ২৬ নং নিউরোসার্জারী, অর্থোপেডিক্স ও ম্যাক্সিলোফেসিয়াল ওয়ার্ড। এ দু’টো ওয়ার্ডে নিউরোসার্জারী বিভাগের প্রায় ১৪০ জন, অর্থোপেডিক্সের প্রায় ৪০ জন ও ম্যাক্সিলোফেসিয়ালের (দন্ত বিভাগের) ২৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন। এদের মধ্যে অনেকেই মেঝেতে শয্যাশায়ী যাদেরকে বাধ্য হয়ে অন্য রোগীর বিছানায় অবস্থান নিতে হয়।
এছাড়া, হাসপাতালের প্রশাসনিক ব্লক, ৩০নং ওয়ার্ড, ফার্মেসী, ৩১নং ওয়ার্ডসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগ, অফিস, শেখ রাসেল স্ক্যানু সেন্টার, এম.আর.আই, সিটিস্ক্যান সেন্টার, প্যাথলজী ও হেমাটোলজী বিভাগসহ নিচ তলার সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনেক কিছুই পানিতে নষ্ট হয় বলে হাসপাতাল সূত্র জানায়।
অপরদিকে, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের নীচ তলার অধ্যক্ষের কক্ষ উপাধ্যক্ষের কক্ষ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কক্ষ, অডিটোরিয়াম, ল্যাব, ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ, এনাটমী বিভাগসহ সংলগ্ন কক্ষ সমূহে পানি ঢুকে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিভিন্ন জিনিসপত্র। মেডিকেল কলেজের নিচ তলার সোনালী ব্যাংকেরও অনেক উপকরণ নষ্ট হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ভোর থেকেই গুরুত্বপূর্ণ দ্রব্যাদি রক্ষার চেষ্টা চালান।
হাসপাতালের নিচতলার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন এক রোগীর স্বজন তাহমিনা বেগম বলেন, গত রোববার রাত ১২টার দিকে হাসপাতালের মেঝেতে কাপড় পেতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন তিনি। ওই সময় বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। এরপর ভোরের দিকে হাসপাতালে হই-হুল্লোড় শুরু হয়। পরে নিচতলার কয়েকটি ওয়ার্ডে গিয়ে দেখেন, সেখানে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। পরে তারা অন্য ওয়ার্ডে আশ্রয় নেন।
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের নিচতলায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। হাসপাতালের তিনটি ওয়ার্ডে পানি ঢুকেছে। এতে চিকিৎসাসেবায় ব্যাঘাত ঘটছে। সোমবারের পরীক্ষা ও ক্লাস বাতিল করা হয়েছে। পরবর্তীতে পরীক্ষার তারিখ জানানো হবে।
ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা: মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের নিচতলা পুরোটাতেই পানি ঢুকেছে। গত বছর বন্যার সময় পানি ঢুকে যায়। সংশ্লিষ্টদের বারবার জানানো হলেও কোনো ধরনের ব্যবস্থা না নেয়ায় বৃষ্টি হলে হাসপাতালটিতে পানি উঠে যায়।
মেডিকেল সূত্র বলছে, ওসমানী মেডিকেল কলেজের উত্তরপাশ ঘেঁষে প্রবাহিত ছড়ার আশ-পাশে বিভিন্ন ভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মিত হয়েছে। এ কারণে ছড়া দিয়ে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। অনেক বাসিন্দা পানির প্রবাহ ওসমানী মেডিকেলের একমাত্র ড্রেনের সাথে সংযুক্ত করেছেন। ফলে ড্রেন উপচে বৃষ্টির পানি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্রে প্রবেশ করে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd