বারকি ডুবাও কাণ্ডে প্রত্যাহার কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও

প্রকাশিত: ৬:০০ অপরাহ্ণ, জুন ১১, ২০২৪

বারকি ডুবাও কাণ্ডে প্রত্যাহার কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : ধলাই নদে ‘বারকি ডুবাও’ কাণ্ডে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুনজিত কুমার চন্দকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ জুন) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাকে প্রত্যাহার করা হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে জানা যায়, সুনজিত কুমার চন্দকে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের বদলি করা হয়েছে। তাকে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে মোংলা বন্দরে পদায়ন করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে যোগাযোগ করলে সিলেট জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়, জনপ্রশাসনের আদেশের কপি এলে এ ব্যাপারে বিভাগীয় কমিশনারের দপ্তর ব্যবস্থা নেবে। নতুন ইউএনও পদায়ন বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।
গত ৩০ মে ধলাই নদে পাহাড়ি ঢল নামার সময় কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও সুনজিত কুমার চন্দের নির্দেশে বারকি নৌকা ডুবিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। বন্যাকবলিত হওয়ার মধ্যে এ রকম কাণ্ডকে অমানবিক বলে মন্তব্য করেন অনেকে।
এরপর ঘটনার বিচারের দাবিতে বারকি শ্রমিকরা জরুরি সভা করে ‘বারকি বাঁচাও আন্দোলন’ নামে একটি আঞ্চলিক সংগঠন গঠন করেন।
বারকি শ্রমিকসহ পেশাজীবী বিভিন্ন ব্যক্তিকে নিয়ে ১০১ সদস্যের বারকি বাঁচাও আন্দোলন ২ জুন প্রতিবাদ সভা করে এ ঘটনার বিচার দাবিতে তিন দিনের আলটিমেটাম দেয়। এরমধ্যে ইউএনওর পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে ৮ জুন ধলাই নদে বারকিবন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
‘বারকি ডুবাও’ ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইউএনও সুনজিত কুমার চন্দ অবশ্য বলেছিলেন, ‘বারকি ডুবাও এ রকমের কোনো ঘটনা সেখানে ঘটেনি।’
তাহলে কী ঘটেছিল? এ প্রশ্নে ইউএনও বলেন, ‘পাহাড়ি ঢল নামায় সাদাপাথর এলাকায় পাথর চুরির খবর পাওয়া গেছে। সেই স্থানটি পরিদর্শন করে ফেরার পথে আমাদের নৌকার সঙ্গে বারকি নৌকার ধাক্কা লেগেছিল।’
এদিকে, ইউএনওকে প্রত্যাহারের খবরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ স্থানীয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বারকি বাঁচাও আন্দোলনের উপদেষ্টা আবুল হোসেন ও সভাপতি ফয়জুল ইসলাম।
তারা বলেন, ‘একটি অমানবিক ঘটনার তাৎক্ষণিক বিচার না পেলেও ঘটনা সংঘটনকারীকে প্রত্যাহার করে নেওয়ায় বারকি শ্রমিকেরা কতৃজ্ঞ। আমরা এ বিষয়টিকে আন্দোলনের ফসল বলে মনে করছি।’
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা দিয়ে প্রবাহমান ধলাই নদ সিলেটের একটি বড় সীমান্ত নদ। ধলাই নদের উৎসমুখে পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথর। নদের এক পাশে বৃহত্তম বালু ও পাথর মহাল ভোলাগঞ্জ। মহালের বালু-পাথর বহনে ধলাই নদে চলে অন্তত ৫০ হাজার বারকি নৌকা। মালবাহী এসব নৌকার সঙ্গে জীবিকা নির্বাহ করে লক্ষাধিক বারকি শ্রমিক। পাথর মহাল বন্ধ থাকায় বারকি নৌকা চলাচল কমে গেলেও এ ঘটনাটি সাধারণ বারকি শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ধলাই নদে পাহাড়ি ঢল নামলেই জলজীবিকার বাহন হিসেবে বারকি চলাচল শুরু হয়। বর্ষা মৌসুমে একটি বারকি নৌকায় অন্তত চারজন শ্রমিকের জীবিকা নির্বাহ হয়। পাথর ছাড়াও বালু বা ভারী বাহন জলপথে বহনের জন্য ব্যাপকভাবে প্রচলিত নৌকাটি প্রায় ৩০০ বছরের পুরোনো। সিলেট অঞ্চলের সব সীমান্ত নদ-নদী দিয়ে চলাচল করে বারকি নৌকা।

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

June 2024
S S M T W T F
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  

সর্বশেষ খবর

………………………..