প্রশ্নবিদ্ধ জৈন্তাপুর থানা পুলিশের ভূমিকা

প্রকাশিত: ৭:৪৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৩, ২০২৪

প্রশ্নবিদ্ধ জৈন্তাপুর থানা পুলিশের ভূমিকা

নিজস্ব প্রতিবেদক :: প্রকাশ্যে দিনে-দুপুরে হরিপুর বাজারে চোরাই চিনির চোরাচালান আনা-নেওয়া হলেও জৈন্তাপুর থানা পুলিশ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করার অভিযোগ উঠেছে। গত রোববার রাতে এ প্রতিবেদক জৈন্তাপুর থানার ওসি তাজুল ইসলাম পিপিএমকে হরিপুরে চোরাই চিনি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি আশ্বর্যান্বিত হয়ে বলেন, প্রতিবেদকের কাছ থেকে প্রথম হরিপুরে চিনি চোরাচালানের বিষয়টি শুনেছেন। হরিপুরে চোরাই চিনির চোরাচালান আনা-নেওয়া হয় এমন খবর তিনি আগে কখনো শোনেননি। অথচ ডিবির জালে জব্দ হওয়া প্রায় দেড় কোটি টাকা দামের আড়াই হাজার বস্তা চিনি এই হরিপুর থেকেই পাচার করার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে খোদ ডিবির ডিসি তাহিয়াত আহমেদ চৌধুরী জানিয়েছেন।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে ডিবির একটি টিম গত বৃহস্পতিবার রাতে সিলেট-তামাবিল সড়কের সুরমা গেইট এলাকায় অবস্থান নেয়। রাত চারটার দিকে এক সাথে সাতটি ট্রাক আসতে থাকলে তারা ট্রাকগুলোকে থামাতে সিগন্যাল দেন। কিন্তু ট্রাক চালকরা আরও বেপরোয়া গতিতে ট্রাক চালাতে থাকলে পেছন থেকে ডিবির টিম ধাওয়া করে। পরে শাহপরান সেতুর উত্তর দিকে ছয়টি ট্রাক আটক করতে সক্ষম হলেও পেছনের ট্রাক ফিরিয়ে উল্টো দিকে যেতে থাকে। তাৎক্ষণিকভাবে ডিবির টিম শাহপরান থানা পুলিশকে বিষয়টি জানায়।

এ সময় ডিবি শাহপরান সেতু এলাকা থেকে ৬টি ট্রাকে থাকা মোট ২ হাজার ৪০ বস্তা চিনিসহ ট্রাকগুলো জব্দ করেন। জব্দকৃত চিনির দাম-১ কোটি ২০ লাখ টাকা। এ সময় গ্রেফতার করা হয় ৫ জনকে। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার আন্দরকুটা গ্রামের মৃত রহিম প্রমাণিকের পুত্র মো. হাফিজুর রহমান (২৭), রাজশাহী জেলার চারঘাট উপজেলার খরেরবাড়ি গ্রামের আত্তার আলীর পুত্র মো. শিমুল হক (২৯), নাটোর জেলার সদর উপজেলার রমজান আলীর পুত্র মো. আরিফুল ইসলাম (২৫), পাবনা জেলার সদর উপজেলার নাজিরপুর কাজিপাড়ার বাদল প্রামানিকের পুত্র মো. রফিক হোসেন (৩২) ও একই গ্রামের সিরাজ সিরাইর পুত্র মো. হাফিজুর রহমান (২৮)।

গ্রেফতারের পরে চিনি ভর্তি ৬টি ট্রাকসহ তাদেরকে শাহপরান থানায় নিয়ে আসা হয়। এ ঘটনায় ডিবির এএসআই কিশোলাল দে বাদী হয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার শাহপরান থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর – ১১।

চিনির মালিক হরিপুরের সালমান

জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড স্কুলের সামন থেকে ৪০০ বস্তা চিনিসহ গ্রেফতারকৃত ট্রাক চালক সাইফুল ইসলাম পুলিশকে জানিয়েছে, তার ট্রাকের চিনির মালিকের নাম সালমান (৩০)। সালমানের বাড়ি হরিপুর এবং তার বয়স ৩০ বছর হবে বলেও পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন সাইফুল। এছাড়াও গ্রেফতারকৃত অন্য ট্রাকের চালকরাও চিনির মালিক সম্পর্কে পুলিশকে তথ্য দিয়েছেন বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে। সূত্র জানায়, গ্রেফতারকৃতরা এ পর্যন্ত তিন জনের নাম স্বীকার করেছে। তিনজনই হরিপুরের বাসিন্দা। তাদের দেয়া তথ্য যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। ডিবির ডিসি তাহিয়াত আহমেদ চৌধুরীও জব্দকৃত চিনি চোরাচালানের মালিক হিসেবে কয়েকজনের নাম গ্রেফতারকৃতরা পুলিশকে জানিয়েছে বলে জানান।

সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন’র সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, যে সকল পুলিশ কর্মকর্তা চোরাই চিনির বিষয়ে নীরব তাদের বিষয়ে তদন্ত করলে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে। বিশেষ করে হরিপুরের চোরাচালান নিয়ে জৈন্তাপুর থানা পুলিশের এমন ভূমিকা রীতিমতো প্রশ্ন তৈরি করেছে। এতে করে সাধারণ মানুষের কাছে পুলিশের ব্যাপারে ভুল ম্যাসেজ যাবে-ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হবে। এ বিষয়ে তিনি পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

July 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  

সর্বশেষ খবর

………………………..