সিলেট ৩১শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৪:৪৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২১, ২০২৪
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক :: সিলেটের অগ্রগামী বালিকা স্কুলের শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেট নগরীর জিন্দাবাজার অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক আবু ইউসুফ মো. সাহিদ’র বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। দেরীতে হলেও এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন প্রধান শিক্ষক। মঙ্গলবার ওই বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হ্যাপী বেগম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীরা আমার কাছে অভিযোগ করেছে।
আবু ইউসুফ মো. সাহিদ অগ্রগামী স্কুল এন্ড কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী শিক্ষক। ২০১৩ সাল থেকে তিনি এই কলেজে শিক্ষকতা করছেন। এর আগে তিনি মৌলভীবাজার সরকারি হাই স্কুলের শিক্ষক ছিলেন।
অগ্রগামীতে আসার কিছুদিনের মধ্যেই শিক্ষকের আসল চেহারা প্রকাশ পায়। তবে ফাঁস হয়নি। কোমলমতি মেয়েরা নিজের ঘনিষ্ঠবান্ধবীদের মধ্যে বিষয়টি ভাগাভাগি করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছেন।
তবে সম্প্রতি বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন তাদের চোখ খুলে দিয়েছে। তারা সবাই এক প্লাটফর্মে জড়ো হচ্ছেন। বর্তমানে এবং পূর্বে যেসকল মেয়েরা হয়রানির শিকার হয়েছেন তারা ফেইসবুকে একটি পেইজখুলে বিষয়টি খোলামেলা আলোচনা করছেন। শুধু আলোচনা নয়, ওই শিক্ষকের যাতে বিচার হয়, সেই ব্যবস্থার দিকে হাঁটছেন তারা। অবশ্য আন্দোলনের আগে তারা মঙ্গলবার প্রধান শিক্ষক হ্যাপী বেগমের সাথে দেখা করে আবারো বিষয়টি অবহিত করেন। তবে এবার প্রধান শিক্ষক অভিযোগ পাওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছেন। তিনি ব্যবস্থা নিবেন বলে আশ্বস্থ করেছেন শিক্ষার্থীদের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, শিক্ষক মো. সাহিদ তাদের যৌন হয়রানি করেন। তারা সরাসরি ভিকটিম। কয়েক বছর ধরে তার এ কার্যক্রম চলছে। মানসম্মান হারানোর ভয়ে কেউ এতোদিন মুখ খুলতে চায়নি।
সর্বশেষ মঙ্গলবার কয়েকজন শিক্ষার্থী এবং কয়েকজন অভিভাবক এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে জানান, নগরীর বন্দরবাজারস্থ নিউ নেশন লাইব্রেরির পাশে, একটি ভবনে বসবাস করেন এই শিক্ষক। এই বাসাতে শিক্ষকতার পাশাপাশি কোচিং বাণিজ্যও চালিয়ে আসছেন তিনি। দুদিন আগেও কয়েকজন তার বাসায় পড়তে যান। এসময় সালমা (ছদ্মনাম) নামে একজনকে তার শয়নকক্ষে মোবাইল ফোনটি নিয়ে আসতে বলেন। এর আগে তিনি অন্য ছাত্রীদের ছুটি দিয়ে দেন। ফোন আনতে যাওয়া মাত্র শিক্ষক সাহিদ দরজা বন্ধ করে দেন। এভাবে অনেক ঘটনা কোচিং সেন্টারের আড়ালে চালিয়ে গেলেও তা প্রকাশ পায়নি। তবে এখন সেই মেয়েরাই প্রতিবাদ জানাচ্ছে, ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে, গণ্যমাধ্যমে যোগাযোগ করছে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে শিক্ষক সাহিদ বলেন, ‘বিষয়টি মিথ্যা, উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আমার পেছনে কেউ লেগে গেছে।’
কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেছেন, শুধু অপসারণ নয়, শিক্ষকের বরখাস্ত না হওয়া পর্যন্ত তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
এ প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হেপী বেগম বলেন, আজ সকালেও (মঙ্গলবার) মেয়েরা আমার কাছে অভিযোগ দিয়েছে, ব্যবস্থা নেয়ার জন্য। এর আগে অন্য একটি বিষয়ে শিক্ষক সাহিদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন সিলেটের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার দেবজিৎ সিংহ। আর এখন করছে মেয়েরা। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবগত করেছি।’
বিষয়টি নিয়ে কথা হলে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. আব্দুল ওয়াদুদ জানান, ‘আমি বিষয়টি সম্পর্কে জেনেছি। লিখিত পেয়েছি। আমার জায়গা থেকে সব ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd