অর্থনীতিকে সচল করতে সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলো খুলে দেওয়ার বিকল্প নেই

প্রকাশিত: ৯:১১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৩১, ২০২৪

অর্থনীতিকে সচল করতে সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলো খুলে দেওয়ার বিকল্প নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটে পরিবেশ বিপর্যয়ের দোহাই দিয়ে ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর সিলেটের জাফলং, ভোলাগঞ্জ, শাহ আরেফিন টিলা, বিছনাকান্দি ও লোভছড়ায় পাঁচ কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ করে খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। তবে এ পাঁচ কোয়ারির মধ্যে জাফলং, ভোলাগঞ্জ ও বিছনাকান্দিতে পাথর উত্তোলনের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। পৃথক দুটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার জাফলং, বিছানাকান্দি ও ভোলাগঞ্জ থেকে পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা ছয় মাসের জন্য স্থগিতের আদেশ দেন বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদেশে কোনো যন্ত্রের ব্যবহার ছাড়া সনাতন পদ্ধতিতে ও জাফলংয়ের পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকার (ইসিএ) বাইরে থেকে পাথর উত্তোলন করতে বলা হয়েছে। এ খবরে বৃহত্তর সিলেটের শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা আনন্দিত হয়েছেন। ব্যবসায়ী নেতারা বলেছেন বর্তমান সরকারের অর্থনীতি চাঙ্গা করতে হলে এই পাথর কোয়ারিগুলো দ্রুত সচল করে দিতে হবে।
ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন, সংগ্রহ ও সরবরাহ করে এ অঞ্চলসহ দেশের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। এই পাথর কোয়ারি বন্ধ থাকায় শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। বেকার হয়ে পড়েছে পাথর কোয়ারি সংশ্লিষ্ট লক্ষাধিক শ্রমিক। বর্তমানে ওই শ্রমিকরা অনাহারে অর্ধাহারে দিনযাপন করছে। তাই শ্রমিকদের কথা বিবেচনা করে পরিবেশসম্মত ও সনাতন পদ্ধতিতে কোয়ারি সচল করার জন্য দাবি জানিয়েছেন শ্রমিক ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ।
এর আগে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) দায়ের করা একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলোয় যন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেন উচ্চ আদালত।
তবে এমন নির্দেশনা উপেক্ষা করে ব্যবসায়ীরা বোমা মেশিন নামে পরিচিত এক ধরনের যন্ত্র ব্যবহার করে পাথর উত্তোলন করতেন। প্রশাসনের অভিযানে প্রায় প্রতিদিন এ রকম যন্ত্র জব্দ করা হতো।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম বলেন, এর আগেও আদালত পাথর উত্তোলনে যন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছিলেন। কিন্তু ব্যবসায়ীরা সে নিষেধাজ্ঞা মানেনি। বোমা মেশিন ব্যবহার করে সব কোয়ারি এলাকার পরিবেশ ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন আবার আদালত যন্ত্রের ব্যবহার ছাড়া পাথর উত্তোলনের অনুমতি দিয়েছেন। এ অনুমোদন পেয়েই ব্যবসায়ীরা আগের মতো যন্ত্র দিয়ে পাথর উত্তোলন শুরু করবেন।
সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলোর পাথর এরই মধ্যে ফুরিয়ে এসেছে। এখন চাহিদার ৭০ শতাংশ পাথরই আমদানি করা হয়। তবে এ পাথর উত্তোলন করতে গিয়ে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে অনেক গুণ বেশি।
এদিকে পাথর উত্তোলন চালুর দাবিতে পরিবহন ধর্মঘটসহ বিভিন্ন বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি সিলেট বিভাগীয় শাখা। আদালতের অনুমতির পর ম্যানুয়েল পদ্ধতিতেই পাথর উত্তোলন করা হবে জানিয়েছেন এ সংগঠনের সভাপতি গোলাম হাদী ছয়ফুল। তিনি বলেন, পাথর ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারা কথা দিয়েছেন ম্যানুয়েল পদ্ধতিতেই তারা পাথর তুলবেন। আর কোনো যন্ত্রের ব্যবহার করবেন না। পরিবেশও ধ্বংস করবেন না। আমরাও বিষয়টি তদারকি করব।
সিলেট পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুল জলিল বলেন, পাথর খনিজ সম্পদ। আমাদের দাদারা খেয়েছেন, বাবারা খেয়েছেন, আমরা খাচ্ছি, আমাদের সন্তানরাও খাবেন। এভাবেই চলবে। এটি প্রকৃতির দান। কোনো দিনও এটি শেষ হবে না।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

August 2024
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  

সর্বশেষ খবর

………………………..