সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৭:৪১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৪
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সিলেট মহানগরীতে যে ক’জন পুলিশ কর্মকর্তা নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে তৎকালীন ক্ষমতাসীনদের দোসর হিসেবে কাজ করেছেন তাদের একজন হচ্ছেন মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপ-কমিশনার তাহিয়াত আহমদ চৌধুরী। তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের অন্ত নেই। ভুক্তভোগীদের দাবি ‘ছাত্র-জনতা, বিএনপি-ছাত্রদল-যুবদলের মিছিলে গুলি বর্ষণসহ নেতাকর্মীদের আটক-গ্রেপ্তার, বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিযানের নৈপথ্যে ছিলেন তিনি। এসব ছাড়াও আন্দোলনকালীন সময়ে তার ভূমিকা ছিল ছাত্রলীগ-যুবলীগ-স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতাকর্মীদের মতোই। গত ৫ আগস্ট পরবর্তী প্রেক্ষাপটে মামলায় আসামি হওয়া অন্যসব পুলিশ কর্মকর্তারা বদলি-বরখাস্ত হলেও অদৃশ্য ক্ষমতাবলে তিনি সিলেটের কর্মস্থলেই আছেন। ঘুরে বেড়াচ্ছেন বীরদর্পে।’ এটা মানতে নারাজ ছাত্রদল-যুবদল-স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতাকর্মীরা। এ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠছে জোরেসোরে।
ছাত্রদল-যুবদল-স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতাকর্মীদের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, গুলিবর্ষণ-হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত রাজনীতিবিদ ও পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের হলেও এখন অবধি কোনো পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার হননি। আওয়ামী লীগ-যুবলীগ-স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মী গ্রেপ্তারও প্রায় শূন্যের ঘরে। নামকাওয়াস্তে কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাকে সিলেট থেকে অন্যত্র বদলি-পদায়ন করা হয়েছে। কিন্তু মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) তাহিয়াত আহমদ চৌধুরীকে বদলি বা বরখাস্তও করা হয়নি। তিনি সিলেট মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের উপ-কমিশনারের চেয়ারেই আছেন।
নেতাকর্মীদের অনেকেই নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘তাহিয়াতের বাড়ি সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলায়। তিনি বিএনপির একজন প্রভাবশালী নেতার আশ্রয় নিয়ে সিলেটে বহাল থাকার এবং মামলা থেকে নিজেকে রক্ষার পায়তারা চালাচ্ছেন।’ এটা কোনোভাবেই হতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি করেন তারা।
সিলেট জেলা যুবদলের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুমিনুল ইসলাম মুমিন দৈনিক একাত্তরের কথাকে বলেন, আমরা এ বিষয়টি নিয়ে খুব হতাশ। এতো হতাহতের ঘটনা ঘটলো সিলেটে। কিন্তু কোনো পুলিশ সদস্যই এখনো গ্রেপ্তার হননি। শুধুমাত্র বদলি বা বরখাস্ত করে তো হত্যা-হত্যার উদ্দেশে নির্বিচারে গুলিবর্ষণের ঘটনার সমাধান হয় না।
হত্যাকাণ্ড ও গুলিবর্ষণের সাথে জড়িত পুলিশ সদস্যদেরকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করে তিনি বলেন, ‘আমাদের অভিভাবক সংগঠন বিএনপি নেতাদের পরামর্শ ও নির্দেশনা জানবো। তাদের পরামর্শ ও নির্দেশনানুসারে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে। গুলি-হামলার ঘটনায় সরাসরি পুলিশ সদস্যদের জড়িত থাকার দৃশ্য সামাজিক মাধ্যম-গণমাধ্যমে সয়লাব হয়ে গেছে। সেগুলো থেকেই স্পষ্টভাবে পরিস্কার কারা গুলি ছুঁড়েছে।’
জেলা ও মহানগর যুবদল, ছাত্রদলসহ অন্যান্য অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ পরিলক্ষিত হচ্ছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে যদি ‘হত্যাকাণ্ড ও নির্বিচারে গুলিবর্ষণের ঘটনা’র সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় না আনা হয় তবে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন তারা। এমনটিই জানান সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা।
প্রসঙ্গত, আন্দোলনকালীন সময়কার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলাগুলোর মধ্যে ২২ ও ২৮ আগস্ট দায়েরকৃত দুটি মামলার বাদি হচ্ছেন যথাক্রমে ছাত্রদল নেতা সাজন আহমদ সাজু ও ২১ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের আহ্বায়ক জুবেল আহমদ স্বপন। দু’টিতে তাহিয়াত আহমদ চৌধুরী আছেন আসামির তালিকায়।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd