সিলেট ৩১শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৫:৫৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক :: পর্যটনের শুরু থেকে আওয়ামিলীগের প্রভাব খাটিয়ে চাঁদাবাজি করে আসছে ভোলাগঞ্জ গ্রামের আলমগীর হোসেন। আওয়ামিলীগ ক্ষমতায় থাকায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে পারেননি। পর্যটনের ব্যবসায়ী পাথর ব্যবসায়ী কিংবা ট্রাক সব জায়গা থেকে চাঁদা নিত সে।
ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর পর্যটনের সরকারি জায়গায় নির্মিত প্রতিটি দোকান থেকে ২-৪ হাজার টাকা মাসিক চাঁদা ভোলাগঞ্জ দশ নম্বর এলাকার বোল্ডার পাথর ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রতিদিন ৫ হাজার টাকা এবং এই পাথর বহনকারী ট্রাকের আকার বেধে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা চাঁদা নিচ্ছে সে। জেলা আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী এক নেতার আত্মীয় পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজির রামরাজত্ব তৈরি করা আলমগীরের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই মামলা হামলা কিংবা মারধরের শিকার হতেন। আওয়ামিলীগ সরকারের পতন হলেও থেমে নেই তার চাঁদাবাজি। সাদাপাথর পর্যটনের এক ব্যবসায়ী তাকে চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় ঐ ব্যবসায়ীকে মারধর ও মোটরসাইকেল ভাংচুর করেছে সে। এ ঘটনা ঐ বয়বসায়ী তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এছাড়াও সাদাপাথর লুটপাট করায় মঙ্গলবার পুলিশ বাদী হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করেছে। তার চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছেন পর্যটনের ব্যবসায়ীরা। তারা চাঁদাবাজ মুক্ত করে ব্যবসার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ইউএনও’র হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সাদাপাথর পর্যটনের ব্যবসায়ীরা মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবিদা সুলতানার বরাবর এই অভিযোগটি দেন।
অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন, আওয়ামীলীগের প্রভাব খাটিয়ে সাদাপাথর পর্যটন এলাকার সরকারি খাস জমি থেকে দীর্ঘদিন যাবৎ ভোলাগঞ্জ গ্রামের আলমগীর হোসেন ও তার দলবল চাঁদাবাজি করে আসছে। গত ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত প্রায় ৪ বছর থেকে সে পর্যটনের ব্যবসায়ীদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রতিটি দোকান থেকে চাঁদা আদায় করেছে। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থান পরবর্তী সময়ে সরকারি খাস জমিতে আর চাঁদা দেবে না বলে প্রতিবাদ করলে চাঁদাবাজ আলমগীর তার সঙ্গীয় দলবল নিয়ে পর্যটনের ব্যবসায়ীদের উপর হামলা করে। চাঁদা না দেওয়ায় গত শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সাদাপাথর পর্যটন এলাকার বন্ধু কসমেটিক্স শপের ব্যবসায়ী ও সাদাপাথর ব্যবসায়ী সমিতির দপ্তর সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম খোকনের উপর হামলা করে আলমগীর ও তার দলবল। এসময় আশরাফুল ইসলাম খোকন আহত হয় এবং তার মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। এ ঘটনায় আশরাফুল ইসলাম বাদী হয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এর আগেও আলমগীর হোসেনকে চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় সে তার দলবল নিয়ে পর্যটন এলাকার দোকানপাট ভাংচুর করে। দীর্ঘদিন থেকে তার এই চাঁদাবাজীতে পর্যটন এলাকার ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ।
ব্যবসায়ীরা জানান আলমগীর হোসেনকে চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে সে যে কারো উপর হামলা চালায়। দীর্ঘদিন থেকে আওয়ামিলীগের প্রভাব খাটিয়ে সরকারি খাস জমিতে নির্মিত পর্যটনের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায় করে আসছে আলমগীর হোসেন। কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাকে মারধর ও দোকানপাট ভাংচুর করে সে। এ বিষয়টি প্রশাসনকেও জানানো হয়েছে।
এদিকে থানায় দায়েরকৃত মামলায় উল্লেখ করা হয় ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম খোকনকে মারধর করে তার মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়। তখন তার দোকানের ক্রয়-বিক্রয়ের টাকা ছিনিয়ে নেয় সে।
সাদাপাথর পর্যটন ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সফাত উল্লাহ বলেন, শুনেছি আলমগীর নিজের জমি দাবি করে ব্যাবসায়ীদের কাছ থেকে মাসিক একটা টাকা আদায় করে। কিন্তু এই জমি কোন ব্যক্তি মালিকানা নয় এটা সরকারি জমি।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি বদিউজ্জামান বলেন, চাঁদাবাজ যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবিদা সুলতা বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা দেওয়া হবে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd