সোনারহাট বিজিবি ক্যাম্পে হামলার আসামি জামাল বিজিবির লাইনম্যান!

প্রকাশিত: ৮:৫০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৭, ২০২৪

সোনারহাট বিজিবি ক্যাম্পে হামলার আসামি জামাল বিজিবির লাইনম্যান!

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোয়াইনঘাট :: সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় লাইনম্যানদের দৌরাত্ম বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে উপজেলার সীমান্ত এলাকা গুলোতে লাইনম্যানদের ত্রাসের রাজত্ব চলছে। এই লাইনম্যান নামক চাঁদাবাজরা দৈনিক লাখ লাখ টাকা বাণিজ্য করছে। এদের যন্ত্রণায় অতিষ্ট সীমান্ত এলাকার শান্তিকামী মানুষজন। উপজেলার পান্তুমাই নতুন ক্যাম্প ও প্রতাপপুর বিজিবি ক্যাম্প দুটাই এই লাইনম্যানের নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু সে নিজে একজন লুটপাটকারী ও বিজিবির দায়ের করা মামলার পালাতক আসামি। অথচ বিজিবির সদস্যরা তাকে গ্রেফতারের বদলে অবৈধ আয়ের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করছে। সে হলো উপজেলার পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের মাতুরতল এলাকার জয়নগর গ্রামের বাসিন্দা জামাল আহমদ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উপজেলার পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের সোনারহাট বিজিবি ক্যাম্পে জামালের নেতৃত্বে লুটপাট করা হয়েছিলো। এরপর এ ঘটনায় বিজিবির সদস্যরা বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলার ৯নং আসামি জামাল। পান্তুমাই নতুন ক্যাম্প ও প্রতাপুর বিজিবি ক্যাম্প এর সদস্যরা তাকে গ্রেফতার না করে উল্টো তাকে রাজা বানিয়ে দিচ্ছেন। আর এই মামলার অন্যান্য আসামিরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। অনেকে আবার জামিনের জন্য আদালতের বারান্দায় সময় পার করছেন।

পলাতক আসামি জামালের নিয়ন্ত্রণে থাকা পান্তুমাই নতুন ক্যাম্প ও প্রতাপুর বিজিবি ক্যাম্প এলাকা দিয়ে প্রতি হাজার হাজার বস্তা চিনি, চা- পাতা, ফেন্সিডিল ও বিদেশি মদ সহ কসমেটিক পণ্য নিয়ে আসা হয় ভারত থেকে।  বিনিময়ে জামালকে লাইন হিসবে প্রতিরাতে চোরাকারবারীরা লাখ লাখ টাকা দিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে নিয়ে আসছেন এসব অবৈধ ভারতীয় পণ্য।

জামালের ইশারায় মৃত্যু মখে যাচ্ছে এলাকার অসহায় মানুষগুলো। গত ১৫ অক্টোবর দুপুর সাড়ে ১২ টায় উপজেলার পান্তুমাই সীমান্তের ১২৬৮ নং পিলারের ভারতীয় অভ্যন্তরে এলাকা থেকে এক যুবককে আটক করে নিয়ে যায় বিএসএফ। ওই যুবক হলেন উপজেলার পশ্চিম পান্তুমাই গ্রামের আব্দুল হক’র পুত্র হোছন আহমদ (৪১)।

এ বিষয়ে তার ভাই ফারুক আহমদ বলেন, আমার ভাই সহ কয়েক জন মঙ্গলবার দুপুরে ১২৬৮ পিলারের পান্তুমাই সীমান্তে এলাকায় গেলে ভারতীয় বিএসএফ দাওয়া করে হোছন আহমদকে আটক করে নিয়ে যায়। ফারুক আরো জানান, পান্তুমাই বিজিবি ক্যাম্পে যোগাযোগ করলে থানায় গিয়ে জিডি করে নিয়ে আসার জন্য বলেন। মঙ্গলবার রাত ৮ টায় গোয়াইনঘাট থানায় গিয়ে এ ব্যপারে একটি জিডি করেছেন বলে জানান তিনি।

স্থানীয়রা জানান, লাইনম্যান জামালের নির্দেশে সীমান্ত এলাকার শ্রমিকরা ভারতে প্রবেশ করে কীট দিয়ে পণ্য সামগ্রী চোরাইপথে দেশে নিয়ে আসে। পরে পণ্যের মালিকরা ওই শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধ করেন। গত ১৫ অক্টোবর প্রতিদিনের ন্যায় শ্রমিকরা জামালের ইশারায় ভারতে প্রবেশ করেন। পরে ভারতীয় বিএসএফ ধাওয়া করে এসময় সবাই পালিয়ে গেলেও হোছন আহমদকে আটক করে নিয়ে যায়।

এতকিছুর পরও এই পলাতক আসামি জামালকে রাজার আসনে বসিয়েছে সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিজিবির সদস্যরা। এ নিয়ে স্থানীয় এলাকায় প্রতিবাদের ঝড় শুরু হয়েছে। বিজিবির অবৈধ আয়ের হাতিয়ার জামালকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওয়াতায় আনার দাবি জানান স্থানীয় সচেতন মহল।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

October 2024
S S M T W T F
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  

সর্বশেষ খবর

………………………..