রোপওয়ে বাংকারের কোটি কোটি টাকার পাথর হরিলুট : নেপথ্যে আব্দুর নুর

প্রকাশিত: ১২:১৪ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ২৩, ২০২৫

রোপওয়ে বাংকারের কোটি কোটি টাকার পাথর হরিলুট : নেপথ্যে আব্দুর নুর

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের শ্রমিকলীগের সহ-সভাপতি, আওয়ামীলীগের সিরাজ গ্রুপের উপদেষ্টা ও ছাতক রেলওয়ের উর্ধ্ধতন উপ-সহকারি প্রকৌশৗলী আব্দুর নুরের বিরুদ্ধে ছাতক-ভোলাগঞ্জের দুইশত কোটি টাকার পাথর লুট ও কোটি কোটি লোহার সামগ্রী বিত্রিু করার অভিযোগের ঘটনায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এঘটনায় নিয়ে সারাদেশে রেলওয়ে বিভাগের সমালোচনার ঝড় বইছে।তার ক্ষমতার প্রভার দেখিয়ে রেলওয়ে সিলেট,চট্রগ্রাম ও ঢাকার ডিজি, এডিজি, প্রধান প্রকৌশলী ও সিপিও কর্মকতারা তার কালো টাকার কাছে জিন্সি রয়েছে।তার বিরুদ্ধে একাধিক লুটপাটের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদনে আব্দুল নুরকে অভিযুক্ত করা হয়। স্থানীয় এমপির মুহিবুর রহমান মানিকের ”নাতিন জামাই” পরিচয় দিয়ে ছাতক-ভোলাগঞ্জ রেলওয়ে সম্পদ লুটপাট চালানোর মুলহোতা হচ্ছে আব্দুর নুর। একাধিক বার ছাতক থেকে বিভিন্ন স্থানে বদলী হলেও এমপির ডিও লেটার দিয়ে পুনরায় বদলী হয়ে চলে আসেন ছাতকে। রহস্যজনক কারনে রেলওয়ের কতৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে কোন ্্আইনানুগত ব্যবস্থা নেয়নি। তার নেতৃত্বে সিলেটের রেলওয়ের বিভাগের একটি লুটপাটকারি সিন্ডিকেট সারাদেশে গড়ে উঠেছে। কোটি কোটি পাথর লোহার সামগ্রী লুটপাট করা হচ্ছে। ছাতকে ব্রিটিশ ঐতিহ্যের ধারক এলাকাটি হচ্ছে ভোলাগঞ্জ। ছাতক-ভোলাগঞ্জে দুই শত কোটি টাকার পাথর,লোহার মালামাল লুটপাট করার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের নির্লিপ্ততা দুর্বৃত্তদের আরও উৎসাহিত করছে। এটি রক্ষার দায়িত্ব যাদের ওপর ন্যস্ত; তারাই এখন ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটি রক্ষা করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সচেতনবাসী। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, পাথর পরিবহনে স্থল কিংবা জলযানের বিকল্প হিসেবে ভোলাগঞ্জ থেকে ছাতকে রোপওয়ে স্থাপন করেন ১৯৬৪ সালে। এ রোপওয়ের ১১৯টি খুঁটি রয়েছে। ভোলাগঞ্জ রোপওয়ের সংরক্ষিত এলাকার লোডিং স্টেশনকে ‘বাঙ্কার’ বলে ডাকা হতো। বাঙ্কারের ৩শ’৫৯ একর জমি, অবকাঠামোসহ রেলের স্থাপনা, যন্ত্রপাতি দেখভাল করতে ২০০০ সাল থেকে আনসার বাহিনী দায়িত্বে ছিল। তবে আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন ও বিক্রির অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১২ সালে রেল মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে আনসার বাহিনীকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। দায়িত্ব নেয় রেলওয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী আরএনবি। একজন পরিদর্শক ও দুজন উপ পরিদর্শকের নেতৃত্বে ৪৮ সদস্যের আরএনবি দল সার্বক্ষণিক অবস্থান করে পাহারায় নিয়োজিত রাখা হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ের একমাত্র রোপওয়ে (রজ্জুপথ)। ছাতক থেকে ভোলাগঞ্জ। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারির পাশে রোপওয়ের লোডিং স্টেশনের বাংকার এলাকা পড়েছে। পাওয়ার হাউস, আবাসিক ভবন, মসজিদ, স্কুলসহ কয়েকটি স্থাপনা হেলে পড়েছে। কোনোটা ভেঙে পড়েছে। লুট হয়েছে মসজিদের মাইক, ব্যাটারি, ফ্যানসহ সব ধরনের মালামাল। খোয়া গেছে রেলওয়ের মূল্যবান কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি। গত ৫ আগস্টের পর সংরক্ষিত ওই এলাকা থেকে রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) সরিয়ে নেওয়া হয়। এ সুযোগে চলছে পাথর লুট। দিনে ও রাতে বাংকার খোঁড়াখুঁড়ি করে পাথর তোলা হচ্ছে। এতে করে ঐতিহ্যবাহী এই স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাতেও বদলাচ্ছে না দৃশ্যপট। বাংকার খুঁড়ে পাথর তোলা চলছেই পর্যটন প্যাকেজ এলাকায়। তবে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৬ আগস্ট রাতে বাংকারের দায়িত্বে থাকা আরএনবি সদস্যদের ওপর দুর্বৃত্তরা হামলার চেষ্টা করে। আরএনবি সদস্যদের মারধর করে তাদের মোবাইল, অর্থ ও অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। ৭ আগস্ট বাংকার থেকে আরএনবি সদস্যদের প্রত্যাহার করা হয়। এই সুযোগে রোপওয়ের গুরুত্বপূর্ণ মালামাল লুটপাট হচ্ছে। কাটা হয়েছে গাছও। আরএনবি সদস্যরা চলে যাওয়ার পর থেকে সেখান থেকে নানা কৌশলে পাথর তোলা চলছে রেলওয়ের কর্মকতাকে ম্যানেজ করেই। সরেজমিনে দেখা গেছে, রোপওয়ের সংরক্ষিত বাংকারের ঠিক পেছনে বিস্তুত এলাকায় পাথরের স্তূপ জমা ছিল। সেখানটি এখন প্রায় শূন্য। দুষ্কৃতকারীরা সংরক্ষিত এলাকার আবাসন কক্ষ ও স্টোর রুমের তালা ভেঙে গুরুত্বপূর্ণ মালামাল নিয়ে গেছে। এ ছাড়া বাংকারের মসজিদের মাইক, ব্যাটারি, ফ্যানসহ সব ধরনের মালামাল লুটপাট হয়ে গেছে। লুটপাট এখনো চলমান রয়েছে। আরএনবি দায়িত্বে না আসা পর্যন্ত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে ও থানা পুলিশকে এলাকাকে নজরদারির মধ্যে রাখতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবিদা সুলতানা। তিনি বলেন ৩ অক্টোবর ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে বাংকার এলাকা পরিদর্শনের সময় অবৈধভাবে পাথর তোলা ও পরিবহনের কারণে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড আদায় করেন। এভাবে প্রতিনিয়ত আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। রেলওয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী রোপওয়ে বাংকার এলাকার দায়িত্বে ছিল। ৫ আগস্টের পর নিরাপত্তার স্বার্থে রেলওয়ের কর্মীদের প্রত্যাহার করা হয়। এখনো রেলওয়ের কেউ এখানকার দায়িত্বে আসেননি। তাই বর্তমানে এই জায়গাটি অরক্ষিত রয়েছে। তবে সাময়িকভাবে বিজিবিকে এই এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্ব দেয়া হয়।’ সম্প্রতি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শন করে এসেছেন। সেখানে কী কী লুটপাট হয়েছে, তার একটা তালিকা করা হয়। আরএনবি সদস্যদের দায়িত্ব পালন বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবেন। যোগাযোগ করলে রেলের পূর্বাঞ্চল জোনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, এ্খানে দায়িত্ব রয়েছেন উধ্বর্তন উপ-সহকারি প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত)আব্দুর নুর। সে সিলেটের শ্রমিকলীগের হুমাষুন গ্রুপের সহ-সভাপতি ও সিরাজ গ্রুপের প্রধান উপদেষ্টা আব্দুর নুর ও তার বোনের জামাই আওয়ামীলীগ ও শ্রমিকলীগের নেতৃত্বে ভোলাগঞ্জে পাথর ছুরি লোহার সামগ্রী লুটপাট চালাচ্ছেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক, আইনানুগত ব্যবস্থা ও বদলী নিশ্চিত করনের সিন্তাদ্ধ নিয়েছেন রেলওয়ের মহা পরিচালক। রেলওয়ের মহা পরিচালক এডিজি আইকে নিদেশ দেন। এডিজি আই প্রধান প্রকৌশলীকে লাল কালি নিদেশ দেয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা ও দ্রুত এখান থেকে বদলী করার গোপন নথি ঢাকা সিপিও অফিস থেকে তথ্য ফাসের ঘটনায় ছাতক উপজেলায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা সিপিও অফিস থেকে দুনীতিবাজ পাথরখেকো আব্দুর নুরকে ছাতক থেকে বদলীর আদেশের আগের ঢাকা সিপিও অফিসের জোবেদা আক্তারের টেবিল থেকে বদলীর ফ্ইালের রহস্য ফাসঁ করেছেন কে-বা কারা ? এ অফিস থেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে লাল কালি দিয়ে লেখা আদেশটি আব্দুর নুরের মোবাইলে পাঠানো হচ্ছে। ভোলাগঞ্জের পাথর লুটপাটের ঘটনায় ছাতক থেকে দুজনকে কর্মকতাকে বদলী আদেশ নিয়ে রেলবিভাগের সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এসব ঘটনা নিশ্চিত করতে রেলওয়ের ঢাকা সিপিওি অফিসে জোবেদা আক্তারের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলে রিং হচ্ছে কেউ রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অবশেষে উপ-সহকারি প্রকৌশলী আব্দুর নুর ও অফিসের প্রধান সহকারি সুরঞ্জন পুরকাস্তকে বদলী হবে না কি না এ নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এঘটনায় আব্দুর নুর সিলেট ও স্থানীয় সাংবাদিকদের নামে নানা কথা বাতা বলাবলি করছেন। কিন্ত ছাতকে রেলওয়ের অফিসের কর্মকতা কর্মচারিদের ঢাকার সিপিও অফিসের জনৈক কমকতা ফারুক আহমদের উপর সন্দেহের তীর রয়েছে বলে সুত্রে নিশ্চিত করেছেন এ প্রতিবেদককে। আব্দুর নুরকে দুনীতি লুটপাটের অভিযোগে একাধিকার ছাতক বদলী করা হলে ও বাব বার এখানে পুনরায় বদলী হয়ে চলে আসার রহস্য কি? তার কিরুদ্ধে একাধিক তদন্তের অভিযুক্ত করার হলে দুনীতিবাজ কর্মকতার বিরুদ্ধে কোন ধরনের ব্যবস্থা নেননি। এ দুনীতিবাজ কর্মকতার নিদেশে দুইশত কোটি টাকার পাথর ও কোটি কোটি টাকার লোহার সামগ্রী লুটপাটে করছে। সিলেট ছাতক রেলওয়ে পথে কোটি কোটি টাকার স¤্পদ বেহাত হচ্ছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে দেখছে। সম্মতি পেলে হয়তো দরপত্রের মাধ্যমে কোনো প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হবে।কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ রোপওয়ের (বাঙ্কার) সংরক্ষিত এলাকায় গণলুট চলছেই। প্রতিদিন পাথর তুলছে সহস্রাধিক লোক। ফলে বিরানভূমিতে পরিণত হচ্ছে ভোলাগঞ্জ এলাকায়। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৬ আগস্ট রাতে বাঙ্কারের দায়িত্বে থাকা আরএনবি সদস্যদের ওপর দুর্বৃত্তরা হামলা করে। মারধর করে তাদের মোবাইল, অর্থ ও অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। গত ৭ আগস্ট বাঙ্কার থেকে আরএনবি সদস্যদের প্রত্যাহার করা হয়। এরপর অরক্ষিত বাঙ্কারে চলে গণলুট। এ পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার দায়িত্ব বর্তায় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) ওপর। তাতেও দৃশ্যপট না বদলালে গত ১১ ডিসেম্বর ফিরিয়ে আনা হয় আরএনবিকে। কিন্তু আরএনবির দায়িত্বহীনতা জনমনে প্রশ্নের উদ্রেক করেছেন। এদিকে,গত সোমবার বাঙ্কারে পাথর তুলতে গিয়ে মাটিচাপায় লিটন মিয়া নামে একজনের মৃত্যু হয়। আরএনবির ৪৯ সদস্যের কেউই এই ঘটনা সম্পর্কে মুখ খুলতে রাজি হয়নি। আরএনবির উপপরিদর্শক ও ভোলাগঞ্জ রোপওয়ের ইনচার্জ মো. জসিম উদ্দিন ঘটনাটি আড়াল করার চেষ্টা করেন। বাঙ্কারে গিয়ে দুর্ঘটনার কোনো আলামত তিনি দেখতে পাননি বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে জানান। জসিম উদ্দিন আরও জানান, ‘বাঙ্কারে রাতে ডিউটি করা রিস্ক। আমাদের লাশ পড়বে। কয়েক হাজার শ্রমিক পাথর তুলে। তাদের আটকানোর সামর্থ্য আরএনবির নেই। বর্তমানে সেখানে থাকার মতো পরিবেশও নেই। আমরা দিনে ডিউটি করি, তখন পাথর লুট হয় না’ বলে মন্তব্য তাঁর। রোপওয়ে বাঙ্কারে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। একেকটি গর্তে শতাধিক লোক পাথর তুলছে। বেলচা, কোদাল ও শাবলের সাহায্যে মাটি খুঁড়ে খুঁড়ে বের করছে পাথর। গর্তের পাশেই স্তুপ করে রাখা হচ্ছে এসব পাথর। পরে বারকি নৌকায় করে নেয়া হয় নদীর পাড়ে। সেখান থেকে ট্রাক-ট্রাক্টরে করে যায় বিভিন্ন ক্রাশার মিলে। এলাকাবাসীর অভিযোগ- সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিজিবি) ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রত্যক্ষ মদদেই বাঙ্কার খুঁড়ে বিরানভূমি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বাঙ্কারের দুই-তৃতীয়াংশ ভূমি ধলাই নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভোলাগঞ্জের দুজন বাসিন্দা জানান, পটপরিবর্তনের আগে মানুষ লুকিয়ে পাথর তুলত। এখন প্রকাশ্যে তুলছে। টাস্কফোর্সের অভিযান হয় দিনে, কিন্তু লুটপাট চলে রাতে। এব্যাপাারে ভোলাগঞ্জে দায়িত্ব ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা আব্দুর নুর তার ব্যক্তিগত নম্বাওে একাধিবার ফোন করলে রিং হচ্ছে রিসিভ করেনি। ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে বাঙ্কার থেকে গত পাঁচ মাসে দুই শতকোটি টাকার পাথর লুট হয়েছে বলে পাথর ব্যবসায় যুক্ত স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি ও রেলওয়ের গোপন নোট বলে জানিয়েছেন। তবে, স্থানীয় প্রশাসনের কাছে এরকম কোন পরিসংখ্যান নেই। প্রশাসনের সূত্র অনুযায়ী, সরকার পতনের পর থানা, পুলিশ ফাঁড়ি ও বিজিবি ক্যাম্পে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। তখন পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। এ সুযোগে লুটেরা চক্র বিপুল পরিমাণ পাথর লুট করে নেয়। তবে, পরবর্তীতে নজরদারি বাড়ানো হয়। টাস্কফোর্সের অভিযান : বাঙ্কারে লুটপাট ঠেকাতে উল্লেখ করার মতো কয়েকটি অভিযান হয়েছে। গত ২১ অক্টোবর পাথরবহনকারী ১৩৬টি বারকি নৌকা ও ৫০০ ঘনফুট পাথর জব্দ করে টাস্কফোর্স। গত ৯ জানুয়ারি ১৮১টি নৌকা এবং ২২টি পাথর ওয়াশিং প¬্যান্ট ধ্বংস করা হয়। গত ১২ ডিসেম্বর বাঙ্কারে আরএনবির কার্যক্রম পুনরায় চালু করতে প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের টিম ভিজিট করে এবং টাস্কফোর্সের অভিযান হয়। গত ২ ডিসেম্বর দশটি নৌকা জব্দ করা হয়।গত ২৯ নভেম্বর ৬৭ নৌকা বিনষ্ট করা হয়। এছাড়া নিয়মিত অভিযানে জরিমানার পাশাপাশি অসংখ্য বালু-পাথরের বাহন জব্দ করা হয়। এব্যাপারে সরকারের সমাজসেবা অধিদপ্তরে সমাজসেবা কর্মকর্তা হিসেবে চাকুরি করছেন কোম্পানীগঞ্জের চাঁনপুর গ্রামের আবু কাউছার। বাঙ্কার নিয়ে ফেইসবুকে তার স্ট্যাটাসের অংশবিশেষ এরকম- ‘স্থাপনাটি কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে একটা অনন্য ল্যান্ডমার্ক হিসেবে। তবে কতদিন যে দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। আমাদের নিজেদের স্বার্থেই স্থাপনাটি রক্ষা করা উচিত। কোনোরকম বিতর্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে স্ট্যাটাস নয়। একটা জেনারেশনাল হেরিটেজ (প্রজন্মগত ঐতিহ্য)-এর টিকে থাকা ও টিকিয়ে রাখার গুরুত্ব বুঝানোই আমার মূল উদ্দেশ্য।’এব্যাপারে উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি মো. শওকত আলী বাবুল বলেন, ‘রোপওয়ের পুরো এলাকাজুড়ে দুর্বৃত্তদের আঁচড় পড়েছে। পাথর তুলে এলাকাটিকে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে। আরএনবি ফিরলেও লুটপাট বন্ধ হয়নি। বিজিবি চাঁদাবাজি করছে। লুটপাটে জড়িত আছে আওয়ামীলীগ ও শ্রমিকলীগের চিহ্নিত কিছু ব্যক্তি। বিএনপিরও আছে কয়েকজন। প্রশাসন এখানে নির্বিকার।’ এব্যাপারে উপজেলা বিএনপির সভাপতি হাজী মো. সাহাব উদ্দিন বলেন, ‘প্রশাসনের ঢিলেমির কারণে বাঙ্কারে গণলুট চলছে। এলাকাটি মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। অথচ পরিবেশ ও জনজীবন রক্ষায় ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটি রক্ষা করা উচিত। উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে বাঙ্কার রক্ষার দাবি জানিয়ে আসছি। স্থানীয় ও জেলা প্রশাসনের সাথে বৈঠক করেছি। নাগরিক কমিটির ব্যানারে গিয়েও কথা বলেছি। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। উল্টো বিএনপিকেই দুর্নাম বয়ে বেড়াতে হচ্ছে।’ বিজিবির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ বিষয়ে জানতে কালাসাদক কোম্পানি কমান্ডার মুহিব্বুল্লাহর মুঠোফোনে কল দেওয়া হয়। তিনি বক্তব্য দিতে রাজি হননি। বরং বিজিবির উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি উজায়ের আল মাহমুদ আদনান জানান, বাঙ্কারের নিরাপত্তায় নিজস্ব বাহিনী আছে। টাস্কফোর্সের অভিযান হলে আমরা ফোর্স দিয়ে সহযোগিতা করি। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবুল হাসনাত জানান, বাঙ্কারে মাটির নিচে পাথর থাকায় শ্রমিকরা অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করে। পটপরিবর্তনের পর পাথরখেকো চক্রের তৎপরতা বেড়েছে। নিয়মিত টাস্কফোর্সের অভিযানেও বন্ধ হচ্ছে না এই কর্মযজ্ঞ। এ বিষয়ে সকল মহলের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

January 2025
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031

সর্বশেষ খবর

………………………..