সিলেট ১৭ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৬ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ২:১৯ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১৭, ২০২৫
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সুরমায় ঘাটে বাঁধা ট্রলার থেকে গাঁজার চালান জব্দ করলেও মাদক কারবারি ট্রলারের মাঝি মালিক সহ মাদক কারবারি চক্রের সদস্যদের নাগাল পায়নি পুলিশ!
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জের সুরমা নদীর তীরবর্তী রামনগর সহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষজন গত কয়েক বছর ধরে নৌ পথে মাদক সহ চোরাকারবারিদের দাপট দেখতে দেখতে রোববার অনেকটা ক্ষোভ প্রকাশ করেেই এমন অভিযোগ আনলেন।
চিহিৃত বিদেশি মাদক চোরাকারবারি চক্র, গাঁজা সহ নানা চোরাচালানী পণ্য সামগ্রী সুরমা নদীর নৌ পথে ট্রলার যোগে পরিবহন কাজে থাকা চোরাকারবারি চক্রের সহযোগি ট্রলার মালিক- মাঝিকে জেনে শুনে আইনি প্রক্রিয়ার বাহিরে রেখে জামালগঞ্জ থানা পুলিশ শনিবার ট্রলার থেকে বিপুল পরিমাণ গাঁজা থেকে মাত্র ৬ কেজি গাঁজা পরিত্যক্ত অবস্থায় জব্দ করে দায়সারা ভাবে অজ্ঞাত নামা আসামি দেখিয়ে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন।
রোববার বিকেলে জামালগঞ্জের রামনগর সহ পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষজন থানা পুলিশ-মাদক চোরাকারবারিদের দ্বারা মিথ্যা মামলা . হয়রানি করা হতে এমন আশংঙ্কায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমকে বলেন, শনিবার ভোররাতে উপজেলার রামনগর গ্রামের জনৈক ব্যাক্তির বাড়ির দক্ষিণে বসতবাড়ির তীরবর্তী সুরমা নদীর ঘাটে দ্রত গতি সম্পন্ন ইঞ্জিনযুক্ত একটি ট্রলারে অন্যত্র থেকে নিয়ে আসা গাঁজার চালান বোঝাই করে নদীর ঘাটে বেঁধে রাখা হয় ট্রলারটি। ওই ট্রলারের মালিক উপজেলার রামনগর গ্রামের মৃত আবু বক্করের ছেলে জিল্লুর রহমানের। জিল্লুর এমন এক ট্রিপে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা ভাড়া প্রাপ্তির সুযোগ নিয়ে উপজেলার রামনগর গ্রামের মৃত আছির আলীর ছেলে রহিম আলী, একই গ্রামের মৃত কলমদর আলীর ছেলে নুরে আলম, পার্শ্ববর্তী হরিপুর গ্রামের মৃত হারিছ আলীর ছেলে বশির আহমদ এ তিন পেশাদার চিহ্নিত মাদক কারবারির গাঁজা বোঝাই ট্রলার শনিবার ভোররাতে গ্রামের সুরমা নদীর ঘাটে বেঁধে রাখে অন্যত্র পৌছে দেয়ার জন্য।
গাঁজা বোঝাই ট্রলার ও মাদক কারবারিদের তথ্য গ্রামের পক্ষ থেকে সকালের পরপর জামালগঞ্জ থানা পুলিশকে মোবাইল ফোনে অবগত করা হলে থানা পুলিশ শনিবার বেলা ৩টার পর ঘাটে এসে লোক দেখানো অভিযানের নামে পুলিশের উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের গুড লিষ্টে থাকার চেষ্টা হিসাবে ভিডিও চিত্র ধারণ করে ৬ কেজি গাঁজা জব্দ করে থানায় ফিরে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার রামনগর গ্রামবাসী সহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষজনের অভিযোগ অভিযানের পুর্বে থানা পুলিশের কিছু অসৎ অফিসার ওই মাদক চোরাকারবারি চক্রের নিকট গ্রামবাসীর দেয়া তথ্য ফাঁস করে দেয়। এরপর ট্রলার থেকে বিপুল পরিমাণ গাঁজা কৌশলে ট্রলার মালিক জিল্লুরের সহযোগিতায় মাদক কারবারি চক্রের সদস্যরা নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যায়। পুলিশী অদৃশ্য ইশারায় জব্দ তালিকা দেখানোর জন্য ট্রলারে বস্তার ভেতর ৬ পুটলিতে ৬ কেজি গাঁজা রেখে যায় মাদক কারবারি চক্রের সদস্যরা।
পরবর্তীতে ট্রলার ছাড়িয়ে নিতেও ট্রলার মালিক,মাদককারবারিদের পক্ষে তদবীর করা হয়। কিন্তু জনরোষের কবলে পড়ার আশংকায় পুলিশ গাঁজার সাথে অবশেষে ট্রলারটি জব্দ করতে বাধ্য হয়। জিল্লুর প্রতি ট্রিপে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা ভাড়া প্রাপ্তির জন্য গত কয়েকবছর ধরেই এ চক্র সহ আরো একাধিক চক্রের বিদেশি মাদক, গাঁজা কারবারি সহ চোরাচালানী নানা পণ্য সামগ্রী নৌ পথে পরিবহন কাজে তার মালিকানাধীন ট্রলারটি ব্যবহার করে আসছে।
গ্রামবাসীর ধারণা, মামলায় অজ্ঞাত নামা মামলায় মাদক চোরাচাকারবারি চক্রের সদস্যদের বরাবরের মতই আইনের আওতায় আনবে না থানা পুলিশ। এক সময় আদালতে ট্রলারের মালিকানা দাবি করলে মাদক চোরাকারবারি চক্রের সহায়তাকারি ট্রলার মালিকের পক্ষে যাবে পুলিশী প্রতিবেদন।
এরপুর্বে জামালগঞ্জ থানা পুলিশ মাদক কারবারি চক্রের বশিরের একটি ট্রলার মাদকের চালান সহ আটক করে। কয়েকদিন পর মোটা অংকের ঘুস দিয়ে ফের বশির ওই ট্রলার থানা থেকে ছাড়িয়ে আনে।
রোববার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে উপজেলার রামনগরের জিল্লুর, একই গ্রামের রহিম আলী, নুরে আলম, হরিপুরের বশির আহমদের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তাদের কেউ-ই ফোন কল রিসিভ করেননি।
রোববার জামালগঞ্জ থানার এসআই শামীম কবিরের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ও এএসআই গোলাম কিবরিয়া সহ পুলিশ ফোর্স নিয়ে ট্রলার সহ ৬ কেজি গাঁজা জব্দ করি। সন্ধান করে ট্রলার মালিক,মাদক কারবারিদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করতে না পেরে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) স্যারের পরামর্শক্রমে অজ্ঞাতনামা আসামি দেখিয়ে থানায় ফিরে এসে নিজেই বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করি।
রোববার জামালগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আরিফ উল্লাহর নিকট উপজেলার রামনগর গ্রামবাসীসহ আশেপাশের গ্রামের মানুষজনের অভিযোগ ও ট্রলারসহ গাঁজার চালান জব্দের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি মামলাটি রেকর্ড করি, অভিযোগ সত্য নয়, দিনের বেলা প্রকাশ্যে ভিডিও চিত্র ধারণ করে ট্রলারসহ ৬ কেজি গাঁজা জব্দ করেছে থানা পুলিশ, এর বেশী পরিমাণ গাঁজা ছিলই না। তিনি আরো বলেন দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসারগণ (এসআই-এএসআই) ট্রলারের মালিক, মাঝি,মাদক কারবারিদের নাম ঠিকানা হয়ত সংগ্রহ করতে পারেনি।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd