সিলেট ১৯শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৮ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১০:১৬ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৮, ২০২৫
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি : সিলেটের বিশ্বনাথ থানা পুুলিশের এক উপপরিদর্শকের (এসআই) কিস্তিতে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। নিজের তদন্তাধীন মামলা থেকে ধর্তব্য ধারা বাদ, দুর্বল চার্জশীট প্রদান ও আসামি না ধরতে কয়েক কিস্তিতে লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়েছেন তিনি। অভিযুক্ত এই এসআইয়ের (নিরস্ত্র) নাম মো. আলীম উদ্দিন (বিপি-৭৫৯৪০৪৫২৬৩)। ঘুষ নিয়েও কথামতো কাজ না করায়ই এবার ঘটেছে বিপত্তি।
এক ব্যক্তি ঘুষের টাকা ফেরত চাইলে বেমালুম অস্বীকার করে বসেছেন সব। ঘুষ লেনদেনের দুই কিস্তির ভিডিও আগেই গোপনে ধারণ করে রাখেন ওই ব্যক্তি। ভিডিওটি মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, থানা কম্পাউন্ডের বৈঠকখানায় বসে গুনে দেওয়া ঘুষের কিস্তি হাসিমুখে পকেটে পুরছেন এসআই আলীম। টাকা পকেটস্থ করে তাকে বলতেও শোনা যায়, চার্জশীটের জন্য লাগবে পুরো ২০ হাজারই। অন্য ভিডিওতে দেখা যায়, মামলার এমসির জন্য অন্য কিস্তির পুরো ২০ হাজারের জন্য দেন-দরবার করছেন তিনি।
সূত্র জানায়, গত বছরের ২০ আগস্ট উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের আনরপুর গ্রামের মকবুল আলী ও জুনেদ হোসেন লোকজনের মধ্যে পূর্ববিরোধের জেরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মকবুল আলী প্রতিপক্ষ জুনেদ লোকজনের নামে মামলা (থানার এফআইআর নাম্বার ২০, তারিখ ২৮.০৮.২০২৪) দেন। ক্রমান্বয়ে এ মামলার তদন্তভার পান এসআই মো. আলীম উদ্দিন। আসামী পক্ষ তাদের আপন তালতো ভাই, উপজেলার দেওকলস ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামের মৃত আব্দুস সালামের ছেলে ফয়ছল আহমদকে দায়িত্ব দেন মামলার বিষয়টি তাদের হয়ে দেখভালের জন্য। এর সুবাধে তিনি মামলার বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ ও আইনি সহায়তা নিতে যোগাযোগ করেন এসআই আলীম উদ্দিনের সাথে।
নিয়মিত যোগাযোগের এক পর্যায়ে তার সাথে মামা-ভাগ্নের সম্পর্ক পাতেন চতুর আলীম। এক পর্যায়ে মামলার বিভিন্ন বিষয়ে ছাড় দেওয়ার লোভনীয় অফার দেন তিনি। প্রত্যেকটির জন্য বিনিময়ে দাবি করেন পৃথক পৃথক অনৈতিক সুবিধা (ঘুষ)। বিভিন্ন সময়ে ২০ হাজার করে ৪ কিস্তি ও ১০ হাজার করে ২ কিস্তিতে সুকৌশলে আদায় করে নেন লক্ষ টাকা। পরে, কথামতো কাজ না হওয়ায় টাকা ফেরত চাইলে ভয়-ভীতি দেখিয়ে, তাকেও ফাাঁসানোর হুমকি দেন উল্টো।
ভুক্তভোগী ফয়সল আহমদ অভিযোগ করে বলেন, ‘সরলতার সুযোগ নিয়ে হীন উদ্দেশ্যে মামা-ভাগ্নে সম্পর্ক পেতে দারোগা আলীম আমাকে বোকা বানিয়ে ধোঁকা দিয়েছেন। আত্মীয়-স্বজনদের কাছে, আমার ব্যক্তিত্ব-সততাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে কিস্তিতে লাখ টাকা নিয়েও উল্টো আমাদের হয়রানি করেছেন।
একবার কিছুটা সন্দেহ হলে আমি লেনদেনের দুটি ভিডিও ধারণ করে রাখি। কথামতো কাজ না করায় টাকা ফেরত চাইলে তিনি উল্টো আমাকে ভয়-ভীতি দেখান। বিভিন্ন মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন। এ বিষয়ে আমি আজ মঙ্গলবার সিলেটের পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে এসআই মো. আলীম উদ্দিনের মুঠোফোনে সাংবাদিকেরা যোগাযোগ করলে তিনি এ বিষয়ে কোন সদুত্তর না দিয়ে কল কেটে দেন। পরে, একাধিকবার যোগাযোগ করলেও আর রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে কথা হলে বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্তমকর্তা (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। আগে জেনে নেই। সত্য হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd