সিলেট ১৯শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৮ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:০০ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১৯, ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র হচ্ছে ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর। এটি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ধলাই নদের উৎসমুখে অবস্থিত। মেঘ-পাথর-জল-পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এই পর্যটনকেন্দ্র মন কেড়েছে সবার। বিশেষ করে শুক্র ও শনিবার এলেই ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষের ভিড় লেগে যায় এখানে। নৌ-ঘাটের স্টাফদের অশালীন আচরণে আগামী ঈদে পর্যটন শূন্য হতে পারে সাদা পাথর। সরকার হারাবে প্রতি মাসে আড়াই লাখ টাকার রাজস্ব।
পর্যটকরা বলছেন, খাস কালেকশনের মাধ্যমে সাদা পাথর স্পট থেকে সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আয় করছে। কিন্তু নৌ-ঘাটের স্টাফদের ব্যবহার এত জগন্য তা বলার বাহিরে। সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্রের নৌকাঘাটে কর্মরত উপজেলা ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক ও ঘাটের খাস কালেকশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী জাবেদ আহমদের সাথে আলাপ করা সম্ভব হয় না। কথা বলতে গেলেই ধমক দিয়ে থাকেন পর্যটকদের। জাবেদ পূর্বে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি চালক ছিলেন।
নৌ-ঘাটের স্টাফদের দুর্ব্যবহার ও এহেন আচরণে সাদা পাথর থেকে এক সময় পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নিলে সরকার হারাবে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাদা পাথরে যাওয়ার নৌকার ভাড়া ও সিস্টেম নিয়েও অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ভোলাগঞ্জ থেকে সাদা পাথরে যাওয়ার জন্য ধলাই নদ পাড়ি দিতে হয়। নৌকা ভাড়া দিতে হয় ৮০০ টাকা। একা গেলেও ওই ভাড়া দিয়েই নৌকা নিতে হয়। আবার ৮০০ টাকা ভাঙতি করে দেওয়া লাগে। তা না হলে পর্যটকদের সাথে দ্বন্দ্বে জড়ান নৌ-ঘাটের স্টাফরা। এমন অভিযোগ নতুন নয় এটা নিত্যদিনের।
ঢাকার থেকে আসা পর্যটক বলেন, আমাদের তিনজনকেই নৌকা ভাড়া দিতো হলো ৮০০ টাকা। অথচ অনায়াসেই আমাদের নৌকায় আরো পাঁচজন পর্যটক নিয়ে আসা যেত। এখানে জনপ্রতি নৌকায় পাড় করার ব্যবস্থা করলে ভালো হবে।
ভোলাগঞ্জ নৌকা ঘাট থেকে সাদা পাথরে যাতায়াত করার একমাত্র উপায় ইঞ্জিন চালিত নৌকা। এছাড়া সাদা পাথরে বেশি সময় থাকতে দেয়নি মাঝিরা। পর্যটন কেন্দ্রে পৌঁছার ১৫/২০ মিনিট পরই শুরু হয় মাঝিদের প্যারা দেওয়া। বাধ্য হয়ে ফিরে আসতে হয়।
সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্রকে ঘিরে প্রায় দেড়শত নৌকা পর্যটক পারাপারের কাজ করেন। প্রতিদিন নৌকা প্রতি ২/৩ টিপ দিতে পারেন। সরকারি ছুটির দিনে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি টিপ হয়। পর্যটকদের কাছ থেকে প্রতি টিপে ৮শ টাকা করে আদায় করেন উপজেলা প্রশাসন। সেই টাকা থেকে নৌকার মাঝিকে প্রতি টিপে ৩শ টাকা করে দেওয়া হয়। নৌকার মাঝিদের ভাষ্য অনুযায়ী নৌকা প্রতি ২/৩ টিপ হলে ১৫০ টি নৌকায় দৈনিক ৪৫০ টিপ দিয়ে থাকে। আর উপজেলা প্রশাসন ৮শ টাকা করে ৪৫০ টিপে দৈনিক ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা আদায় করেন। এর মধ্যে ১ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা নৌকার মাঝিদের মধ্যে বন্টন করেন। তাহলে সরকারি কোষাগারে ২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা থাকছে। মাসে অর্ধ কোটির বেশি টাকা জমা হওয়ার কথা।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিজুন্নাহার এর সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি। ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি কোন উত্তর দেননি।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ আবুল হাছনাত এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে বলেন আপনি তথ্য অধিকার আইনে পত্র পাঠান। এরপর তিনি খাস কালেকশনের বিষয়ে সঠিক কোন তথ্য দিতে না পারলেও তিনি বলেন পর্যটকের উপর নির্ভর করে দৈনিকের কালেকশন। একক দিনে একক হিসাব আমাদের কাছে মোড়া বই আছে সেগুলো দেখে বলতে হবে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd