নামাজি ভিসি পেলো শাবিপ্রবি, উচ্ছ্বাসিত সকল

প্রকাশিত: ৮:৪৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৪

নামাজি ভিসি পেলো শাবিপ্রবি, উচ্ছ্বাসিত সকল

মোস্তফা হোসেন সম্রাট : বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের গণঅভ্যুত্থানে ফলে আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর দেশজুড়ে শুরু হয় পদত্যাগের হিড়িক। সরকার পতনের পর পদত্যাগ করেন হাসিনা সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদও। তিনি গত ১০ আগষ্ট ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে উপাচার্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

 

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যায়ের (শাবিপ্রবি) নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়টির এপ্লাইড কমেস্ট্রি ও ক্যামিকেল ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এম সারওয়ারউদ্দিন চৌধুরী।

 

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা থেকে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সার্বক্ষণিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অবস্থান করা সহ পাঁচ ওয়াক্ত নামায জামাতে আদায় করেন।

 

বিষয়টি শাবিপ্রবির কর্মকর্তা কর্মচারী সহ মুসল্লীয়ান কেরামের নজর কেড়েছে তারা মনে করছেন একটি বিদ্যাপিটের সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাক্তি যদি নামাজি দিনদার ও ফরহেজগার ব্যাক্তি হন তাহলে প্রতিষ্ঠানটি বহুদূর এগিয়ে যাবে।

 

তাছাড়া শাবিপ্রবির প্রক্টর, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালকসহ আট প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ এছাক মিয়া, প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. মোখলেসুর রহমান। এছাড়াও ছাত্রদের তিনটি আবাসিক হলের মধ্যে শাহপরাণ হলের প্রভোস্ট হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ফুড ইঞ্জিনিয়ার এন্ড টি টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতেখার আহমদ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জামাল উদ্দিন এবং সৈয়দ মুজতবা আলী হলের প্রভোস্ট হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেলিম।

 

অপরদিকে ছাত্রীদের তিনটি আবাসিক হলের মধ্যে প্রথম ছাত্রী হলের প্রভোস্ট হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. দিলারা রহমান, বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সাবিহা আফরিন এবং বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের প্রভোস্ট হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড পলিমার সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. সালমা আখতার।

 

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব হযরত মাওলানা মতিউর রহমান সাহেবের সাথে সাক্ষাৎ করলে তিনি জানান- বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভাইস চ্যান্সেলরের আগমনে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্র অনেকটাই পাল্টে গেছে, নামাজীদের সংখ্যা বেড়ে গেছে, প্রশাসনের ভিতর একটি ভালো পরিবেশ তৈরি হয়েছে, মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অল্পদিনের ভিতর সবার মন কেড়ে নিয়েছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে শিক্ষার সুশৃংখল পরিবেশ ফিরে আনতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

 

তিনি আরো বলেন- ৮ অক্টোবরের মধ্যে হলগুলো খুলে দেওয়া হবে। ৮-১৫ অক্টোবরের মধ্যে ছাত্ররা হলে উঠবে। ২০ অক্টোবর থেকে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হবে বলে জানা গেছে। ছাত্রদের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তিনি গুরুত্বসহকারে দেখছেন।

 

এর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরোও নানান উন্নয়নের কাজে হাত দিবেন। বিশেষ করে, দীর্ঘদিন যাবত শাহপরান হল মসজিদের দাবী ৪তলা ভবনের কাজ শুরু হবে। এবং কেন্দ্রীয় মসজিদের সংস্থার মূলক নীতি নান্দনিক ডিজাইনের কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

 

যতটুকু লক্ষ্য করা গেছে, কেন্দ্রীয় মসজিদের টয়লেটের দুরবস্থা তাছাড়া বাহির থেকে শুক্রবারে জু’মার নামাজে যে মানুষগুলো আসে, তাদেরকে সুন্দর ভাবে জায়গা দেওয়া সম্ভব হয় না। ফলে মসজিদের বাহিরে জায়নামাজ বিছিয়ে অনেকে নামাজ আদায় করতে হয়। মুসল্লিদের তুলনায় মসজিদে জায়গা অত্যন্ত কম সেই হিসাবে সংস্কার করা প্রয়োজন।

 

জুমার দিনেএমনিতেই সময়োপযোগী বিষয়ে ভিত্তিক আলোচনা করা হয়। আর যেহেতু কেন্দ্রীয় মসজিদে লাইব্রেরী পূর্বেই প্রতিষ্ঠিত আছে সেক্ষেত্রে লাইব্রেরীকে বিভিন্ন ধরনের ইসলামিক স্কলারদের লেখনি এবং আন্তর্জাতিক মানের তথ্যবহুল বই দিয়ে সমৃদ্ধ করতে হবে। এত মসজিদের সাথে শিক্ষার্থী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হবে। ইসলামিক বই পড়াশোনার সুযোগ হলে ইসলামী মূল্যবোধ চর্চা হবে।

 

তাছাড়া কেন্দ্রীয় মসজিদে নারীদের নামাজ পড়ার কোন ব্যবস্থা নাই যেহেতু বর্তমান বিশ্বে অনেক মসজিদেই নারীদের নামাজ পড়ার সুব্যবস্থা রয়েছে সে ক্ষেত্রে আমাদের মসজিদে তার কোন সুযোগ নাই।

 

এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সময়, দেশ বিদেশের বিভিন্ন লোকজন আসে, সে সময় অনেক নারী নামায পড়তে চায়। কিন্তু আমরা তার ব্যবস্থা করে দিতে পারি না।

 

তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রী, মহিলা কর্মকর্তা, কর্মচারী ডিউটি কালীন অবস্তায় নামায আদায় করতে চায় কিন্ত সে সময় পুরুষ নামাজ পড়তে পারলেও সেক্ষেত্রে নারীদের নামায পড়ার সুযোগ হয় না।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স প্রায় ৩৫ বছরের উপরে, আর যেহেতু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য, দেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় শাহজালাল (রঃ) এর নামে, তিনি যে একজন মহান সাধক, তার যে দর্শন, তার যে চিন্তা ও চেতনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমের মাধ্যমে বিষয়টি ফুটিয়ে তুলতে হবে। সুদুর ইয়ামন থেকে শাহজালাল (রঃ) ইসলামের দাওয়াত নিয়ে সিলেট এসেছিলেন। তিনি পানির উপর জায়নামাজ বিছিয়ে সুরমা নদী পার হয়েছিলেন।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় সমূহে ইসলামিক স্টাডিস, কুরআন সাইন্স সহ বিভিন্ন বিষয়ে আছে কিন্তু শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় এই সাবজেক্ট গুলো নেই। এই সাবজেক্ট গুলো চালু করা হলে ছাত্ররা উপকৃত হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় যে সুনাম, শাহ জালালের নামের দর্শনের উপর বিশ্ববিদ্যালয়ের যে নামকরণ করা হয়েছে তার আগমনের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য প্রতিষ্ঠিত হবে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

September 2024
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..