গণঅভ্যুত্থানের পর বড়লেখায় এলডিপি কর্মীর বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর-লুটপাট : অগ্নিসংযোগ

প্রকাশিত: ৪:৩৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৬, ২০২৪

গণঅভ্যুত্থানের পর বড়লেখায় এলডিপি কর্মীর বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর-লুটপাট : অগ্নিসংযোগ

বড়লেখা প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার মুড়াউলে লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এল.ডিপি) কর্মী সৈয়দ আশরাফুজ্জামান-এর বাড়িতে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে দুর্বৃত্তরা। শুধু তাই নয়, বাড়িটি তছনছ করে যাবার সময় আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। গত সোমবার (৫ আগস্ট) রাত সাড়ে ১১ টার পর বড়লেখার মুড়াউল ইউনিয়নের ঘোলসা গ্রামে এ নারকিয় ঘটনা ঘটে।

সন্ত্রাসীরা বিএনপির সাবেক স্থায়ী কমিটির সদস্য, বিএনপি ছেড়ে, নতুন দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) এর প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ ও সৈয়দ আশরাফুজ্জামানের নাম ধরে গালিগালাজ করে বাড়িতে হামলা এবং অগ্নিসংযোগ করে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে বাধ্য হয়ে ৫ আগস্ট বেলা ৩টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে অনেকটা গোপনে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এর পরপরই সারা দেশের ন্যায় বড়লেখায়ও বিভিন্ন স্থানে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, রাত ১০টার কিছু পর একদল দুর্বৃত্ত আশরাফুজ্জামানদের বাড়ির আশ-পাশে অবস্থান নেয়, রাত সাড়ে ১১টার দিকে হামলা চালিয়ে আশরাফুজ্জামানের বাড়ি-ঘর তছনছ করে করে দেয় তারা। লুটপাট করে নিয়ে যায় বাড়ির মুল্যবান জিনিসপত্র। যাবার সময় তাদের বসত ভিটায় আগুন ধরিয়ে দেয় সন্ত্রাসীরা। অবস্থা সংকটময় বুঝতে পেরে আগেই বাড়ি থেকে পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন আশরাফুজ্জামানের ভাই সৈয়দ কামরুজ্জামান, বাবা সৈয়দ আব্দুস শহীদ ও মা জাহানারা বেগমসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।

আশরাফুজ্জামানের ভাই সৈয়দ কামরুজ্জামান এ প্রতিবেদককে বলেন, আমার ভাই এলডিপি’র সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী ছিল। তার সামাজিক একটিভিটি এলাকার সাধারণ মানুষ খুবই পছন্দ করত । বিপদে আপদে আমার ভাইও তাদের কাছে ছুটে যেত , তাদের পাশে দাঁড়াত। যা দেশের বড় দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ-বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের ভাবীয়ে তুলে। এর আগে বহুবার আমার ভাইকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সজল, হেলিম, উজ্জল এবং সাগরদের নির্যাতনে দেশ থেকে পালিয়ে গেছে আমার ভাই। সে দেশে না থাকলেও বারবার আমরা রাজনৈতিক সন্ত্রাসীদের আক্রমণের শিকার হচ্ছি।

গতকাল রাতে কারা আক্রমণ করেছিলো এমন প্রশ্নের জবাবে কামরুজ্জামান বলেন, গতকাল স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন হয়। সাথে সাথে বড়লেখার সর্বত্র বিএনপি-জামায়াতের কর্মীরা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। বিকাল থেকেই তারা বিভিন্ন স্থানে হামলা-ভাঙচুর শুরু করে। বিএনপির কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। সব কিছু তছনছ করে দিয়েছে। আমরা প্রাণ নিয়ে পালিয়ে আত্মরক্ষা করেছি।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তাদের দলের সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হয়েছে আমার ভাই। এখন আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিএনপির সন্ত্রাসীরা একই কায়দা হামলা করছে আমাদের পরিবারের উপর । আমরা আমাদের জানমালের নিরাপত্তা চাই বর্তমান সরকারের কাছে।

বড়লেখা ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়াজ উদ্দিন বলেন, এল.ডিপি কর্মী সৈয়দ আশরাফুজ্জামান আমার ছাত্র। সে দীর্ঘদিন থেকে আত্মগোপনে রয়েছে। তার স্বজনরাও শান্তিতে বসবাস করতে পারছেন না। তিনি বলেন গতকাল হাসিনা পালিয়ে যাবার পর থেকে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি হয়েছে। যারা জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা দিবে সেই পুলিশও থানা থেকে পালিয়ে গেছে। পুরো উপজেলা জুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

গ্রামের প্রবীন মুরব্বী ও সালিশ ব্যক্তিত্ব আজবাহার আলী জানান, সৈয়দ আব্দুস শহীদ গ্রামে একজন স্বজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। তার পুত্র আশরাফুজ্জামানের এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয়। এই জনপ্রিয়তাই তার জীবনের কাল হয়ে দেখা দিয়েছে। এখন সবাই তাকে হত্যা করতে মরিয়া হয়ে ওঠেছে।

ঘটনার বিষয়ে জানতে বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়ারদৌস হাসানের সরকারি মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও কেউ রিসিভ করেননি। এ সময় তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

August 2024
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  

সর্বশেষ খবর

………………………..