সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৮:৪২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৯, ২০২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের তামইবলে ভারতীয় মিথানল বাহী ট্যাংকলরীতে আগুন লেগেছে।
শনিবার (৯ নভেম্বর) দুপুর ২ টার দিকে সিলেট তামাবিল স্থলবন্দরে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় পুরো এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে।
এসময় স্থল বন্দরে থাকা ভারতীয় মিথানলবাহী অন্যান্য ট্যাংকলরী ও আমদানী করা পাথর, কয়লা বোঝাই ভারতীয় শত শত ট্রাক গুলি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয় এবং আতংকে কয়েক হাজার শ্রমিক-জনতা দিক-বিদিক ছুটা ছুটি করে নিরাপদে চলে যান।
তাৎক্ষনিক ভাবে ভারতীয় ডাউকি স্থল বন্দরে থাকা তাদের ফায়ার সার্ভিসের পানি বাহী গাড়ি এসে স্থানীয় জনতার সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
খবর পেয়ে জৈন্তাপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তা আল-আমীনের নেতৃত্বে ফায়ার সার্ভিস টিম ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তবে কি কারনে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে তা নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তবে ঘটনার সময় গাড়ির সামনের অংশে আগুন লাগে। গাড়িতে মিথানল না থাকায় রক্ষা পেলো তামাবিল স্থল বন্দর সহ আশপাশের এলাকা।
জানা গেছে, বাংলাদেশের বিভিন্ন পোশাক ফ্যাক্টরির কাঁচামাল হিসাবে এবং জ্বালানি সহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার যোগ্য মিথানল (উচ্চ মাত্রার রাসায়নিক/বিপদজ্জনক বিস্ফোরক পদার্থ) সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করা হচ্ছে।
বিগত জানুয়ারী মাসে এক সপ্তাহ স্থলবন্দরেই ছিল মিথানল বহনকরী ট্যাংকলরি খালাস অপেক্ষায় আইনি নানা জটিলতার কারনে। এর পর নিয়মিত মিথানল পদার্থ বহনকারী ট্যাংকলরি বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বিপদজ্জনক হওয়ায় মিথানল বহনকারী লরী প্রবেশে নিরৎসাহিত করছেন স্থানীয় আমদানীকারক ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ।
তামাবিল স্থলবন্দর কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, ভারতের আসাম রাজ্যের পার্বতপুর ডিব্ৰুগড় পেট্রাকেমিক্যাল থেকে সংগ্রহ করে বাংলাদেশি টি.কে গ্রুপ অব কোম্পানি মিথানল আমদানি করেছে। এসব পদার্থ সরকারি বিধিমালা অনুয়ায়ী আমদানি করা হয়েছে বলে কাস্টমস নিশ্চিত করে।
তবে তামাবিল কাস্টমসের একজন রাজস্ব কর্মকর্তা জানান, তামাবিল স্থলবন্দরে এসব রাসায়নিক পদার্থ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার মত প্রয়োজনীয় কেমিক্যাল ল্যাব বা টেস্ট মেশিন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। ভারতের ডাউকি স্থলবন্দরেও মিথানল নিরাপদে রাখার মতো সুযোগ-সুবিধা নেই।
একটি সূত্র জানিয়েছে, সরকারি বৈধতা থাকলেও ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে মিথানল প্রদার্থ আমদানি করার কোন সুযোগ নেই। একমাত্র চট্রগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি করা হয়ে থাকে।
এদিকে তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে বিপদজনক উচ্চ মাত্রার রাসায়নিক প্রদার্থ আমদানি নিয়ে ব্যবসায়ী মহল সহ স্থানীয়দের মধ্যে ভয় ও আতংক ছড়িয়ে পড়ে। ব্যবসায়ীরা উদ্বোগ প্রকাশ করেছেন।
ভারত থেকে মিথানল আমদানি বন্ধ করতে তামাবিল পাথর আমদানীকারক গ্রুপের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ আহবান জানান।
গ্রুপের প্রধান সমন্বয়কারী মি হেনরি লামিন, রফিকুল ইসলাম শাহপরান, শাহ রব মিয়া, আব্দুল মান্নান, ইসমাইল হোসেন সহ ব্যবসায়ী প্রতিনিধি টিম স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, কাস্টমস রাজস্ব কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করে কেমিক্যাল ল্যাব স্থাপন সহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন না করে ভবিষ্যতে এসব বিপদজনক রাসায়নিক প্রদার্থ আমদানি ও তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেন। রাসায়নিক কেমিক্যাল কোন কারনে যদি বড় দুঘটনা বা অগ্নীকান্ড ঘটতো তাহলে তামাবিল স্থলবন্দর সহ এই অঞ্চল আগুনের লিলাহীন শিখায় বিলীন হয়ে যেতে।
তামাবিল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক আমিরুল হক জানান, দুর্ঘটনা এড়াতে নিরাপদ দূরত্ব স্থানে মিথানল খালাসের উদ্যাগ করা হবে। তামাবিল স্থলবন্দর ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনে আমরা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ-কে জানিয়েছি।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd