সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৩:৫২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৩, ২০২৪
ক্রাইম প্রতিবেদক: সিলেটে দিন দুপুরে টিলা কাটার মহা উৎসব চলছে। টিলা খেকোর মাস্টার মাইনড রতন মনি মোহন্ত এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। সরজমিন প্রদর্শনকালে দেখা যায়, সিলেট সিটি করপোরেশনের আওতাধীন ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের মেজরটিলা ফাল্গুনী আবাসিক এলাকায় তরিক মিয়ার মালিকানাধিন চান্দুর টিলাটি এভাবে দিনদুপুর নির্ভিগ্নে কাটা হচ্ছে। এর পশ্চিম পাশেই সু-উচ্চ বিরিন্দার টিলাটিও কেটে সমতল করছেন নাথ পাড়ার রতন মনি মোহন্ত।
স্থানীয় একাধিক সুত্র জানিয়েছে, নাথপাড়ার রতন মনি মোহন্তর নেতৃত্বে “চান্দুর টিলা” দিনে-দুপুরে কাটা হচ্ছে । তিন-চারজনের একাধিক গ্রুপ দেদারসে টিলা কাটছেন। আবার কয়েকটি ভ্যানে করে টিলার মাটিগুলো এক স্থান থেকে অন্যস্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন তাদের সহযোগীরা। এভাবেই প্রতিনিয়ত কাটা হচ্ছে টিলা আর লুট হচ্ছে টিলার মাটি। তারপর ধসে পড়ে টিলা। ওই ধসে পড়া টিলার মাটির নিচে পড়ে ঘটছে প্রাণহানি। টিলা কাটার ওইসব স্থানে গড়ে তোলা হচ্ছে আলিশান ভবন, আবাসিক বাসা-বাড়ি কিংবা হাউজিং প্রকল্প। একাধিক সুত্র জানায়,শুধু তরিক মিয়ার টিলা নয় পাশ্ববর্তী মেজরটিলাস্থ রতন বাবুর মালিকানাধিন বিরিন্দার টিলাটি, দেবপুর মৌজার জাহাঙ্গীর এর টিলাসহ বেশ কয়েকটি টিলা কর্তন করা হলেও নিরব ভূমিকায় পরিবেশ অধিদপ্তরসহ টিলা রক্ষাকারী সকল মহল।
একটি সুত্র জানিয়েছে, সিলেট সিটি করপোরেশন থেকে রাস্তার মাটি পরিষ্কার করার অনুমতি নিয়ে রতন মনি মোহন্তর ম্যানেজার একাধিক টিলা কর্তন করছেন। এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাই রাফিন সরকার বলেন, ‘পরিবেশের ক্ষতি করলে, পরিবেশ তা ফিরিয়ে দেয়। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় টিলার গুরুত্ব আকাশচুম্বি। কিন্তু কিছু সংখ্যক অসাধু লোকেরা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে টিলা কাটছে। আমরা অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি। কিন্তু টিলা কাটা রোধে আমাদের পাশাপাশি স্থানীয়দেরও সচেতন হতে হবে।’
এদিকে, টিলা কাটার বিষয়ে টিলার মালিক তরিক মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করতে তার বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে নাথপাড়ার রতন মনি মোহন্তের সেলফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোনকল রিসিভ না করায় বক্তব্য সংগ্রহ করা যায় নি।
সিলেট পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম জানান, টিলা কাটার দৃশ্য তিনি নিজেও দেখেছেন। এভাবে টিলা কাটার ফলে পরিবেশ ধ্বংস করার পাশাপাশি এলাকার সৌন্দর্যও বিনষ্ট হচ্ছে।
সিলেটে টিলা কাটা বন্ধে পরিবেশ অধিদফতর কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি জানান, পরিবেশ অধিদফতরের নির্লিপ্ততার কারণেই সিলেটে একের পর এক টিলা সমতল ভূমিতে পরিণত হচ্ছে। ফলে অচিরেই সিলেট টিলাশূন্য হয়ে যাবে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।
টিলা কর্তন বিষয়ে‘বেলা’র সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট শাহ সাহেদা আখতার জানান, শুধু মেজরটিলা নয়, পুরো সিলেট জেলা জুড়েই টিলা কাটা অব্যাহত আছে।
এ ব্যাপারে জানতে পরিবেশ অধিদফতর সিলেট অফিসের পরিচালক এসএম ফজলুল করিমের সাথে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. শের মাহবুব মুরাদ বলেন, ‘পরিবেশ রক্ষায় টিলা কাটা বন্ধ করা না গেলে প্রকৃতির বৈরিতা আরও বাড়তে পারে। কোনো অবস্থায় টিলা কাটা বরদাশত করা হবে না। অভিযোগ পেলে দ্রুত অভিযান পরিচালনা করা হয়। তাছাড়া আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd