সিলেট ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২০শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৩:৪৪ অপরাহ্ণ, জুন ১৪, ২০১৮
স্টাফ রিপোর্টার :: টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে সিলেটে নদীর পানি বিভিন্ন পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নতুন করে সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। সীমান্তবর্তী কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট ও জকিগঞ্জ উপজেলাসহ সুনামগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চল অঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সিলেটের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছন্ন রয়েছে কানাইঘাট উপজেলার। জৈন্তাপুরের দরবস্ত সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় কানাইঘাটের সাথে সিলেটের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিসের সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার হিসেব অনুযায়ী সুরমা নদীর পানি সিলেট পয়েন্টে বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুনামগঞ্জ পয়েন্টের পানি বিপদসীমার ২ দশমিক ২৫ মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সুরমার কানাইঘাট পয়েন্টে পানি ২ দশমিক ৬ মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির প্রবাহ ক্রমাগত বাড়ছে। এ কারণে কানাইঘাটের বিভিন্ন এলাকা রাস্তা ঘাট পানির নিচে রয়েছে। কুশিয়ারা নদীর শেওলা পয়েন্টে ৯৪ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৪০ সেন্টিমিটার, শেরপুর পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলার সারিঘাট থেকে গোয়াইনঘাট রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে।
ঈদের ঠিক পূর্ব মুহুর্তে বন্যার পানি কানাইঘাট বাজারে ডুকে পড়ায় কেনাকাটায় আসা নারী শিশুরা বিপাকে পড়েছেন। এ ছাড়াও পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বায়মপুর, ২নং ওয়ার্ডের রামপুর গ্রামে পানি ঢুকার খবর পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে উপজেলার চাতল হাওর সহ সবকটি হাওরে পানি ঢুকতে শুর” করছে।
বৃহস্পতিবার সকালের দিকে প্রবল বেগে পানি বাড়তে তাকে। আকষ্মিক এ পাহাড়ী ঢলে মৎস্য সেক্টরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে। লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ও লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউপির বেশ কিছু গ্রাম ও কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া সুলতানা ও এসিল্যান্ড লুসিকান্ত হাজং সার্বিক পরিস্থিতি দেখার জন্য কানাইঘাট বাজার, গৌরিপুর সুরমা ডাইক ও লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপির বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। পাহাড়ী ঢলের কারণে সুরমা নদীর ডান তীর এলাকায় বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। অনেক এলাকায় পানি ঢুকে পড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে বলে জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।
লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপির লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম, উত্তর লক্ষীপ্রসাদ, মেছা, নিহালপুর, পূর্ব কুওরেরমাটি, রাজার মাটি, হালাবাদি, আগফৌদ সহ কয়েকটি এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউপির লোভা নদী দিয়ে উজান থেকে পাহাড়ী ঢল নেমে আসায় বিস্তীর্ণ এলাকায় হঠাৎ করে বন্যা দেখা দিয়েছে। হাওর অঞ্চলে মৎস্য খামার গুলো ডুবে গেছে। মূলাগুল বাজার, সাউদগ্রাম, মেছা, ভালুকমারা সহ কয়েকটি এলাকা তলিয়ে গেছে। কানাইঘাট সদর ইউপির মারাত্মক নদী ভাঙ্গন কবলিত ভাটিদিহি গ্রামের ফয়জুর রহমানের বাড়ির পাশে সুরমা ডাইক ভেঙ্গে তীব্র বেগে পানি এলাকায় ঢুকে পড়েছে। সদর ইউপির ছোটদেশ, গোসাইনপুর, সোনাপুর, সতিপুর এলাকার বিভিন্ন স্থানে সুরমা ডাইকে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। পৌরসভার বায়মপুর, গৌরিপুর, রামপুর, বানীগ্রাম ইউপির সর্দারমাটি সুরমা ডাইকের বিশাল এলাকা ভেঙ্গে তলিয়ে গেছে। যে কোন সময় ডাইকটি সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙ্গে এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হতে পারে।
এছাড়া এই ইউপির বাহ্মণগ্রাম ও বড়দেশ গ্রামের সুরমা ডাইকের কয়েকটি জায়গায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে । রাজাগঞ্জ ফালজুর, বীরদল, ধাওয়াধরি, বৃহত্তর তালবাড়ী, খালোপার, খোয়াজপুর, ভাটার খাল এলাকায় সুরমা ডাইকের বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে বলে জানান। তাছাড়া দিঘীরপার পূর্ব ইউপির দর্পনগর, সাতবাঁক ইউপির চরিপাড়া এলাকায় সুরমা ডাইকের কয়েকটি স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে।
জনপ্রতিনিধি ও নদীর তীরবর্তী এলাকায় বসবাসরত লোকজন জর”রী ভিত্তিতে নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd