সিলেট ৩১শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৫:৪০ অপরাহ্ণ, জুন ১৪, ২০১৮
স্টাফ রিপোর্টার :: ‘আপনিতো একজন হিরো, সুপার হিরো, অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন আপনাকে’ কথাগুলো বলতে বলতে একজন রিকশাচালক আব্দুল আজিজ খান জানু মিয়ার হাতে ৫ হাজার টাকা তুলে দিলেন সিলেটের জেলা প্রশাসক নূমেরি জামান।
এই রিকশাচলক সাধারণ কেউ নয়, একজন নির্লোভ মানুষ। ১১ জুন সিলেট নগরীর জিন্দাবাজার এলাকায় যিনি কুড়িয়ে পেয়েছিলেন ৮৫ হাজার টাকা। তারপর তুলে দিয়েছিলেন ভ্রাম্যমান আদালতের দুই নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের হাতে।
কঠিন এই সময়ে এমন একজন নির্লোভ মানুষকে সম্মান জানানো হলো বৃহস্পতিবার দুপুরে। সিলেটের জেলা প্রশাসক তার কার্যালয়ে ডেকেছিলেন আব্দুল আজিজ খানকে। তারপর তার হাতে তুলে দিলেন টাকাগুলো। মুখে করলেন আরও অনেক প্রশংসা।
রিকশাচালক আব্দুল আজিজ খান নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া থানার নোয়াপাড়া গ্রামের আব্দুল হামিদ খানের পুত্র।
জেলা প্রশাসকের জানানো সম্মান ও অর্থগ্রহন করে তিনি সিলেটভিউর কাছে নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেন। তিনি বলেন, ভালো লাগছে, খুউব ভালো লাগছে।
৩ ছেলে ২ মেয়ের জনক আব্দুল আজিজ ১৯৯৬ সাল থেকে সিলেটে রিকশাচালিয়ে জিবিকা নির্বাহ করছেন। গ্রামের বাড়িতে তার ছেলেরাও এখন কিছু কিছু আয়-রোজগার করলেও সংসারে প্রচন্ড অভাব।
এমন কঠিন পরিস্থিতেও হঠাৎ সেদিন রাস্তায় কুঁড়িয়ে পেলেন ৮৫ হাজার টাকার বান্ডিল। সাথে একান্ত আলাপচারিতায় আব্দুল আজিজ জানালেন, টাকাটা পেয়েই তিনি জামার ভেতর লুকাতে লুকাতে ভাবছিলেন, ইয়াল্লাহ, কার সর্বনাশ হলো! এর মালিক পাবো কই?
এরপর পরই তিনি দেখেন ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান চলছে কাছেই। ছুটে গেলেন দুই সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে সালিক রুমাইয়া ও এম সাজ্জাদুল হাসানের কাছে। তাদের হাতে তুলে দিলেন সম্পূর্ণ টাকা।
খবরটি জেনে খুশি হলেন সিলেটের জেলা প্রশাসক। তাকে সম্মান জানানোর উদ্যোগ নিলেন। কিন্তু আজিজ খানকে পাবেন কোথায়? সিলেটে তার ঠিকানাটা কারও জানা নেই। এমনকি দুই নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটেরও।
বিষয়টি নিয়ে ’এ সংবাদ প্রকাশ হয়। এর পরপরই পাওয়া যায় আজিজ খানের ঠিকানা। তিনি সিলেটে থাকছেন বালুচর এলাকার একটি রিকশা গ্যারেজে। ঐ গ্যারেজেরই রিকশা চালাচ্ছেন।
আব্দুল আজিজ খান সম্মান পেয়ে খুশি হলেও তার কোন নিজস্ব রিকশা নেই। তিনি সিলেটের জেলা প্রশাসকের কাছে একটি রিকশা চেয়েছেন। তিনিও তাকে আশ্বস্ত করেছেন।
পুরস্কার প্রদানের সময় জেলা প্রশাসনের দুই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে সালিক রুমাইয়া ও এম সাজ্জাদুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd