সবচেয়ে আকর্শনীয় তাহিরপুর উপজেলার টাংগুয়ার হাওর,সীমান্ত লেক ও বারেকটিলা। সারা বছরেই এই পর্যটন স্পট গুলো শিক্ষার্থী,সামাজিক,সাংস্কৃতিক ব্যাক্তি,দেশ-বিদেশের সুন্দর্য পিপাসু ও প্রকৃকি প্রেমীদের সাথে সাথে স্থানীয় সকল বয়সের জনসাধরনের পদচারনায় মুখরিত থাকে। কিন্তু প্রতি বছর ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহায় এই দৃষ্টি নন্দন স্থান গুলোতে বিভিন্ন রখমের বাদ্য যন্ত্র নিয়ে সবাই একত্রিত হয়ে আসায় মিলন মেলায় পরিনত হয় পর্যটক,সৌন্দর্য পিপাসুসহ সবার উপস্থিতিতে।
জেলার ১১টি উপজেলার মধ্যে তাহিরপুর ও দোয়ারা বাজার দুটি উপজেলার দর্শনীয় স্থান রয়েছে। বিশেষ আকর্শন তাহিরপুর উপজেলায় রয়েছে-মাদার ফিসারিজ খ্যাত টাংগুয়ার হাওর বাংলাদেশের বুকে এক উজ্জল নক্ষত্রের নাম,সীমান্ত ঘের্ষা ৩শত ফুট উচ্চতার বারেক টিলা,উপজাতিদের মন্দির,মেঘালয় পাহাড়ের জলপ্রপাত,শাহ আরফিন (রা) আস্তানা,সনাতন হিন্দু-ধর্মাবলাম্বীদের পনর্তীথ স্থান,উঁচু নিচু পাহাড়ের সারি,গন-সবুজের সমারোহ,ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনিজ প্রকল্প,সীমান্ত লেক,৩টি শুল্ক ষ্টেশন (চারাগাঁও,বড়ছড়া,বাগলী),মুক্তিযোদ্ধের সৃত্মি চিহ্ন,ছোট বড় ২০টি ভারতের মেঘালয়ের বুক চিড়ে নেমে আসা পাহাড়ী ছড়া,রাজা উইক্লিবস এর বাড়ি,আওলী জমিদার বাড়ি,পাহাড়ী যাদুকাটা নদী,ঝর্না,মেঘ,বৃষ্টি,উপজাতি ও বাংলাদেশীদের একত্রে বসবাসের এক মিলন মেলা ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মনোরম পরিবেশ বিরাজ করছে সীমান্তবর্তী তাহিরপুর উপজেলায়।
দোয়ারাবাজার উপজেলায় রয়েছে-বাঁশতলা,হকনগর শহীদ স্মৃতিসৌধ,জুমগাঁও আদিবাসী সহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান গুলো যা পর্যটকদের কে নয়ানাবিরাম,নৈসগির্ঘ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ করায় বার বার আত্মতৃপ্তি টানে আসছেন দেশ-বিদেশী হাজার হাজার দর্শনার্থী। অনেকেই ঐসব স্থানে গিয়ে তুলছেন সেল্পি আর অনেকেই একান্তে বসে আছেন আবার অনেকেই বসিয়েছেন মন খুশি আড্ডা।
সবার আর্কশন টাংগুয়ার হাওর। এ হাওরের একটি প্রবাদ আছে-নয়কুড়ি বিল,ছয় কুড়ি কান্দার সমন্বয়ে গঠিত শত বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এই টাংগুয়ার হাওরে নানান প্রজাতির বনজ ও জলজ প্রানী এ হাওরের সৌন্দর্য কে আরো দর্শনীয় করেছে। বর্ষায় টাংগুয়ার হাওর এক বিশাল সমুদ্রের রুপ ধারন করে আর শীতের সময় টাংগুয়ার হাওর কে আরো আকর্শনীয় করে তুলে। তাই বছরের দুটি ঈদ ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় পর্যটক ও দর্শনার্থীদের আগমন বেশি লক্ষ্যনীয়। এবারও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। শিশু থেকে শুরু করে মধ্য বয়সী হাজার হাজার মানুষের আগমনে এক মিলন মেলায় পরিনত হয়েছে টাংগুয়ার হাওর সহ জেলার ঐ সব দর্শনীয় স্থান গুলোতে। এবার হাওর পাড়ে একমাত্র বোরো ধানের ফলন ভাল হওয়ায় সবার মনে ঈদের আনন্দ আরো বেশী আনন্দ যুক্ত হয়েছে। তাই সংগ্রামী,পরিশ্রমী হাওর মানুষ গুলোও একটু আনন্দ খুজাঁর চেষ্টায় অনেকেই বেড়িয়ে পড়েছিলেন ঐসব দর্শনীয় স্থান গুলো দেখে একটু প্রশান্তি আর আনন্দের খুঁজে। কেই মটর সাইকেলে,কেউ সিএনজি,কেউ স্পীড বোডে আবার কেউ ইঞ্জিন চালিত নৌকায় দলবেধে ছুটছে।
জেলাবাসী জানান-এখানে ঈদ উৎসব ছারাও ছুটির দিনে আসেন পর্যটক। নিবার্চন আসলে নেতা-নেত্রীদের মুখে শুধু আশার বানী শুনতে পাই কাজের বেলায় কিছুই নাই। আমরা শুধু কি আশার বানী শুনতেই বেচেঁ আছি। এখানে পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন হবে বলে শুনছি অথচ এখনো কোন কাজের লক্ষণ দেখছি না।
প্রতিদিন দর্শনীয় স্থান গুলো দেখতে হাজার হাজার মানুষ যোগাযোগ ব্যবস্থা ও থাকা খাওয়ায় ভাল সুযোগ না থাকার পরও আসছে সত কষ্ট সহ্য করে। এ উপজেলার দর্শনীয় স্থান গুলোতে বেড়াতে আসা শিক্ষার্থী সৌরভ দাস,নাজির হোসেন,নাইম,মেহেদী হাসান ভুঁইয়া (জনমেজর) সহ অনেকেই জানান-এবার হাওরের বোরো ধান অকাল বন্যায় পানিতে ডুবে ক্ষতির কারনে হাওর পাড়ে ঈদের আনন্দ না থাকলেও এ তাহিরপুর উপজেলার পর্যটন সমৃদ্ধ ও দৃষ্টি নন্দন স্থান গুলো ঈদ উপলক্ষে সৌন্দর্য দেখতে ভুলে যায় নি হাজার হাজার পর্যটক ও সুন্দর্য পিপাসুগন।
পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়াতে আসা সুহেল আহমদ সাজু বলেন,দেখতে ভাল লাগে তাই আমরা এসেছি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে। হাজার হাজার মানুষের আগমনে মিলন মেলায় পরিনত হয়েছে টাংগুয়ার হাওর,বারেকটিলায় সহ অন্যান্য দর্শনীয় স্পট গুলো। এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন,থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় পর্যটকদের এখানে বেড়াতে আসা কষ্টের হয়েছে।
তাহিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান কারুজ্জামান কামরুল জানান-ঈদে ও ছটির দিনে এ উপজেলার প্রাকৃতিক সৌর্ন্দয়ের টানে হাজার হাজার পর্যটক আসেন। টাংগুয়ার হাওর ও বারেকটিলা তাহিরপুর উপজেলার আকর্শনীয় পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের উপযোগী স্থান এখানে পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন করা এখন সময়ের দাবী। পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন হলে তাহিরপুরের স্থানীয় জনসাধারনের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের সুযোগ ও স্থানীয় বেকার যুবকদের কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে।