সিলেট ২২শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৩শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৮:৫৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৩, ২০১৮
ক্রাইম ডেস্ক :: সিলেটের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রশিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ। ছাত্রশিবিরের কোন প্রকার মিছিল বা জমায়েতের খবর পেলে রামদা উচিয়ে দৌড়ানি দেয় ছাত্রলীগ। বছর দু’য়েক আগে নগরীতেও একই অবস্থা ছিলো। কোথাও জামায়াত-শিবিরের অবস্থান শুনলে আওয়ামীলীগ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা তেড়েঁ গেছে হামলা করতে। পুলিশতো জামায়াতকে সিলেট শহরে দাড়াঁতেই দেয়নি।
শহরে প্রগতিশীল, গণজাগরণ মুক্তচিন্তার মানুষ ও আওয়ামীলীগের নানা সংগঠনের চাপে সামাজিকভাবেও জামায়াত নিষিদ্ধ ছিলো।
কিন্তু এ বছর জানুয়ারীর পর থেকে জামায়াতের প্রতি আক্রোসের মনোভাব আর নেই। আর সিসিক নির্বাচনে জামায়াতকে মনে হচ্ছে ‘সরকারের অংশ।’ যে দলের প্রতি এতো আক্রোশ সেই জামায়াত সিসিক নির্বাচনে নির্বিঘ্নে প্রচারনা চালাচ্ছে। যে দলকে নিষিদ্ধ করতে কতো আয়োজন ছিলো সরকারের। অথচ তাদের প্রার্থী এহসানুল হক জুবায়ের সিলেট নগরীতে অনেকটা সদর্পে ভোট চাইছেন। কোথায়ও কোন ডিষ্টার্ব নেই। রামদা হাতে ছাত্রলীগের দৌড়ানি নেই! পুলিশও হুলিয়া নিয়ে তাদের পিছে লেগে থাকে না।
আওয়ামী বুদ্ধিজীবিদের জামায়াত নিষিদ্ধের বিবৃতি নেই? চুপ করে আছে গণজাগরণ মঞ্চ। মুখে কুলুপ এটে আছে মুক্তিযোদ্ধারা। পত্রিকার পাতায় সাহসী বিবৃতি দিয়ে ভরিয়ে তুলতো। মনে হতো এরা বুঝি এদেশে আর জামায়াতকে কখোনো মেনে নেবেনা। আর এখন জাময়াত নির্বাচনের মাঠে দোর্দন্ড প্রতাপে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কেউ টু শব্দ করছে না। তাই সিলেটবাসী চিন্তায় পড়ে গেছে। ক’দিন আগে যারা ছিলো দু’চোখের বিষ তাঁরা এখন ভোটের রাজনীতিতে সরাসরি জনগণের কাতারে।
একটি বিষয় সকলের কাছে পরিস্কার জামায়াত থাকলে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর লাভ। আর তাই চেতনার রাজনীতিতে জামায়াত আর নিষিদ্ধ কোন বস্তু নয়। এই মূহুর্তে সিলেট আওয়ামীলীগের সাথে জামায়াতের সখ্যতা চোখে পড়ার মতো। উপরে কিছু না দেখা গেলেও ভেতরে দারুণ ঐক্য তাদের মাঝে।
না হয় যে জামায়াতের ভোট এই শহরে মোট ভোটারের মাত্র ৫ শতাংশ তাঁরা কিভাবে এই নগরীর রানিং মেয়রের পরিবর্তে তাদের প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে বিএনপির কাছে দাবি জানাচ্ছে। এই দু:সাহস আর অযৌক্তিক দাবি যে বিএনপি মেনে নেবেনা এটাও তাঁরা ভালো জানে। তবুও তাঁরা নির্বাচনী মাঠে সরব। কারণ তাদের লক্ষ্য মেয়র হওয়া নয় তাদের লক্ষ্য বিএনপি প্রার্থীকে হারানো।
জামায়াতের রাজনীতির সাথে সংশি¬ষ্ট কেউ সিলেট নগরীর মেয়র হওয়া প্রায় অসম্ভব বলা চলে। কারণ সিলেট শহর শিক্ষিত শ্রেনীপেশার মানুষের শহর। ধর্মীয় মূল্যবোধের শহর। ধর্মীয় গোরামীর শহর না। সিলেটবাসী জানে, এটা স্বাতক্ষিরা না । চাঁদে সাঈদি দেখা গেছে বলে ভোট আদায় করে নেবেন এই সুযোগ এখানে নেই।
সিলেটবাসী সন্দেহের চোখেই দেখছে জামায়াত প্রার্থীকে। সিলেট শহরের বেশিরভাগ মানুষ মনে করে জুবায়েরের জেতার সম্ভাবনা ৫-৮ %। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে কামরান-আরিফের মধ্যে। যদি বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের সিদ্বান্ত অমান্য করে জুবায়ের প্রার্থী হয়েছেন। যার ফলে এগিয়ে যাবে কামরান। আর পিছিয়ে থাকবে আরিফ। তাই স্বাভাবিকভাবেই সিলেটবাসীর মনে প্রশ্নের দেখা দিয়েছে জুবায়ের কি আওয়ামীলীগের ডামি প্রার্থী ?
এ নিয়ে কথা হয় মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিনের সাথে। জুবায়ের কি আওয়ামীলীগের ডামি প্রার্থী এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন-না বিষয়টা এমন না। জুবায়ের স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন তার সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আড়ালে কোন সখ্যতা গোপন বৈঠকের ব্যপারে তিনি বলেন-এমন কিছু আমি শুনিনি। আর এই ধরনের সম্ভাবনাও নেই।
তিনি আরো যোগ করেন-আমাদের ডামি প্রার্থীর দরকার নেই। আমাদের প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান যথেষ্ট জনপ্রিয়। তিনি বিপুল ব্যবধানে বিজয়ী হবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। সচেতন মহলের প্রশ্ন রয়েগেল জুবায়ের তাহলে কার?
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd