সিলেট ২২শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৩শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ২:৫১ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৯, ২০১৮
কামরুল আই রাসেল :: সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নগরীর ৭নং ওয়ার্ড এলাকায় আধিপত্য পূণরূদ্ধারে মরিয়া জামায়াত-শিবির। নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর লাঠিম মার্কার ভরাডুবি নিশ্চিত দেখে অনেকটা দিশেহারা হয়ে পড়েছে তারা। অনেক দিন আড়ালে আবড়ালে ও পালিয়ে থাকা শিবিররা নির্বাচনকে সামনে রেখে জড়ো হয়েছে এই ওয়ার্ডে। বন্ধু বান্ধব সহপাঠি ও আত্মীয়স্বজনদের বাসা বাড়িতে এসে জড়ো হয়ে নানা অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের মনোনীত ও জামায়াত সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী সায়ীদ মো. আব্দুল্লাহর পক্ষে ভোট চাওয়ার ভান ধরে এলাকার অলি গলিতে এখন তাদের অবাধ বিচরণ। নিজেদের অবস্থান জানান দিতে ইতোমধ্যে কয়েকটি অঘটনও ঘটিয়েছে তারা। কয়েকদিন আগে যুবলীগ নেতা আলম খান মুক্তিকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধাওয়া করে জামায়াত শিবির। তাদের সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এহসানুল মাহবুব জুবায়ের ও কাউন্সিলর প্রার্থী সায়ীদ মো. আব্দুল্লাহর লিফলেট গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানালে জামায়াত শিবিরের ধাওয়ায় পড়েন আলম খান মুক্তি। এসময় এলাকাবাসীর পাল্টা ধাওয়া খেয়ে পশ্চিম পীর মহল্লার দিকে চলে যায় তারা। পরবর্তীতে সুবিদ বাজার এলাকায় মসজিদের ভিতরে লিফলেট বিতরণ নিয়ে নামাজি মুসল্লিদের সাথে কথা কাটাকাটির জের ধরে ঐ ওয়ার্ডের নূরানী গলির প্রবেশ পথে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে একটি রেস্টুরেন্টে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে শিবির কর্মীরা। খবর পেয়ে ওয়ার্ড কাউন্সিলর আফতাব হোসেন খান সহ এলাকাবাসী এসে ঐ রেস্টুরেন্ট রক্ষা করেন।
সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নগরীর ৭নং ওয়ার্ডে জামায়াত শিবিরের অবস্থান একেবারে শূণ্যের কোঠায়। তাদের পক্ষে স্থানীয় বাসিন্দা ও ভোটারদের তেমন কোন সমর্থন নেই। তদুপরি তাদের প্রার্থী সায়ীদ মো. আব্দুল্লাহকে লাঠিম মার্কা দিয়ে দাঁড় করিয়ে ঘরে ঘরে তাদের তৎপরতা ও দাওয়াতী কাজ শুরু করেছে। এতে এলাকার জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, একসময় নগরীর ৭নং ওয়ার্ড ছিল জামায়াত শিবির ও বিএনপির শক্ত ঘাটি। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জামায়াত শিবির ও লা মাযহাবীরা এখানে এসে অবস্থান নিয়েছিল। আজ থেকে আড়াই বছর পূর্বে পরিবর্তন ঘটে ঐ এলাকার রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার। সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আফতাব হোসেন খান কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর জামায়াত শিবিরের আখড়া সম্পূর্ণ তছনছ হয়ে পড়ে। আপ্তাব হোসেন খানের কর্মদক্ষতা ও উন্নয়ন কর্মকান্ডে মুগ্ধ হয়ে এলাকাবাসী জামায়াত শিবিরের সমর্থন প্রত্যাহার করে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি সমর্থনে চলে যান। এতে করে জামায়াত শিবির অনেকটা নির্বাসিত হয়ে পড়ে ঐ এলাকা থেকে। এলাকার বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় জামায়াত শিবিরের বাসা ভাড়া ও অবস্থান অনেকটা নিষিদ্ধ ও সংকুচিত হয়ে পড়ে। ফলে আওয়ামী লীগ মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থী আফতাব হোসেন খান অনেকটা সুদৃঢ় অবস্থানে চলে যান। এ অবস্থানকে নড়বড়ে করে তুলতে জামায়াত শিবির আর্থিক সামাজিক ও অন্যান্য পন্থা অবলম্বনের পাশাপাশি পেশি শক্তির ব্যবহারও করে চলেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার এক বিশিষ্ট মুরব্বি জানান, জামায়াত শিবিরের সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীর তেমন কোন সমর্থন ও অবস্থান এলাকায় নেই। সরকারি দল সমর্থিত বর্তমান কাউন্সিলর আফতাব হোসেন খানের বিজয় সুনিশ্চিত দেখে জামায়াত শিবির কর্মীরা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে দিগবিদিক ঘুরাফেরা করছে ও নানা অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসী আগামী ৩০ জুলাই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী আফতাব হোসেন খানের ঘুড়ি মার্কায় নির্বিঘেœ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে বহিরাগত জামায়াত শিবিরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকার ও প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছে। এদিকে অন্য সূত্র থেকে জানা যায়, গত কয়েকদিন আগে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শিবির কর্মীদের এক গোপন বৈঠকে সুবিদ বাজার এলাকার হলিসিটি পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ সেন্টারে নাশকতা করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ৭নং ওয়ার্ড এলাকার একাধিক ব্যক্তির সাথে আলাপকালে জানা যায়, বহিরাগতরা সিসিক এলাকায় ত্যাগ করার প্রশাসনিক নির্দেশ থাকলেও, আমাদের এলাকায় অবাদে যেন বহিরাগতরা প্রবেশ করছে। যে কোন সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে বলে এলাকাবাসীরা আশংকা করছেন। এ ব্যাপারে বিমানবন্দর থানার ওসি গৌছুল আলমের সাথে ফোন আলাপে তিনি বলেন, কোন বহিরাগত ব্যক্তি সিসিক এলাকার ভিতরে থাকতে পারবে না। বিভিন্ন হোটেল, মেসবাড়ি ও সন্দেহজনক স্থানগুলোতে আমাদের তল্লাশী অব্যাহত রয়েছে। এ ব্যাপারে এলাকাবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd