আলোর দিশারী বিশ্বনাথের সাংবাদিক রাজু

প্রকাশিত: ৭:১৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৮

আলোর দিশারী বিশ্বনাথের সাংবাদিক রাজু
মো. আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ :: ছেলেবেলা থেকেই শিক্ষার প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল তার। নানা অসঙ্গতির কারণে সে স্বপ্ন বেশি দূর এগোয়নি আর। উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে ছাড়তে হয় পড়া-লেখা। নিজের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছতে না পারলেও, থমকে যাননি তিনি। শিক্ষার বিস্তারে দীর্ঘ একযুগ ধরে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেই চলেছেন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক তজম্মুল আলী রাজু। উপজেলার যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক সংকট, সে সব প্রতিষ্ঠানে সাংবাদিকতার পাশাপাশি স্বেচ্ছসেবী শিক্ষক হিসেবে ক্লাস নেন তিনি।
২০০৭ সাল থেকে শিক্ষার উন্নয়নে তার এ যাত্রা শুরু হয়। সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলার শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস নিয়েছেন তিনি। কোন পারিশ্রমিক ছাড়াই নিজ খরচে এ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে তার। সেই সাথে এলাকার কলেজ-ভার্সিটি ও মাদরাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের অবসর সময়টুকু নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (প্রাথমিক) ব্যয় করতে উৎসাহ যোগান তিনি। একসময় বিশ্বনাথ উপজেলার বিভিন্ন প্রাইমারী স্কুলে শিক্ষক স্বল্পতা প্রকট আকার ধারণ করায়, নিকটাত্মীয় এক প্রবাসীর সহায়তা নিয়ে তিন মাসের জন্যে ভাতাসহ ৩০/৩৫ টি প্রাইমারী স্কুলে প্যারা শিক্ষক নিয়োগ দেন তিনি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য, বাউসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হোসেনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জয়নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পুরানগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গড়গাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কান্দিগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইলামেরগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মিরেরচর (১) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শ্বাসরাম রহমান আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তালিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
তার সাথে কথা হলে তিনি জানান, ‘ইচ্ছে ছিলো পড়া-লেখা শেষে শিক্ষার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করার। কিন্তু বাবার ইচ্ছে (লন্ডন পাড়ি দিতে) পূরণ করতে গিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক শেষে পড়া-লেখায় ব্যঘাত ঘটে। যাওয়া হয়নি লন্ডনেও। একসময় চোখে পড়ে প্রাইমারী স্কুল গুলোর শিক্ষক স্বল্পতার বিষয়টি। তখন থেকেই স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ শুরু করি। এ কাজ থেকে যেমন মানসিক প্রশান্তি পেয়েছি, তেমনি রয়েছে তিক্ত অভিজ্ঞতাও। স্বল্প সংখ্যক প্রতিষ্ঠান ভিন্ন চোখে দেখলেও, বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান আমার এ কাজে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। যে যাই বলুক, শিক্ষা বিস্তারে আমার এ স্বেচ্ছাশ্রম অব্যাহত থাকবে।’
তালিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাসুক আহমদ বলেন, তার মতো অন্যরা উদ্যোগী হলে শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়ে যাবে আমাদের বিশ্বনাথ উপজেলা।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মহিউদ্দিন আহমদ (প্রাথমিক) বলেন, শিক্ষা বিস্তারে এটি একটি বিশাল উদ্যোগ, ভালো কাজ। আমরা উনাকে সাধুবাদ জানাই।
এব্যাপারে কথা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিতাভ পরাগ তালুকদার বলেন, সমাজ পরিবর্তনে এ ধরণের সাদা মনের মানুষ আমাদের প্রয়োজন। যেহেতু উনি সাংবাদিক, সেহেতু সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই তিনি এ রকম মহতি একটি কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। নিঃসন্দেহে এটি প্রশংসার দাবীদার।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

September 2018
S S M T W T F
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  

সর্বশেষ খবর

………………………..