বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের নওধার পূর্বপাড়া গ্রামে ছাবাল শাহ নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার পুত্র ও স্বজনরা বৎসরে ২ বার ও প্রতি বৃহস্পতিবারে ওরুসের নামে অসামাজিক কর্মকান্ড শুরুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার আয়োজকরা ওরুস আয়োজন করলে তা পন্ড করে দেয় থানা পুলিশ। এখানে ওরুসের নামে কোন অসামাজিক কর্মকান্ড যাতে কেউ করতে না পারে এজন্য ওরস বন্ধ রাখতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশ।
এদিকে, নিজ বাড়িতে ওরসের নামে সমাজ বিরুধী কার্যকলাপে বাঁধা দেয়ায় মৃত ছাবাল শাহ’র মেয়ে ও উত্তর বিশ্বনাথ আমজদ উল্লাহ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী তাসলিমা বেগম এবং তার মা রয়েছেন আতংকে। তাদেরকে দীর্ঘদিন ধরে অত্যাচার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
থানায় দায়েরকৃত অভিযোগে তাসলিমা বেগম উল্লেখ করেন, তার পিতা আহমদ আলী উরফে ছাবাল শাহ’র মৃত্যুর পর তার সৎ ভাই আশিক নূর একই গ্রামের সুহেল আহমদের নেতৃত্বে একটি বাহিনী তৈরী করে তাদের বাড়িতে ওরুসের নামে নাচ গানের আসর বসিয়ে ইয়াবা, মদ, গাঁজা, হেরোইন, ড্যান্ডি সহ যাবতীয় মাদক বেচা কেনা ও সেবক করে আসছেন। প্রতি বৃহস্পতিবার রাতে দূর-দুরান্ত থেকে কম বয়সী ছেলে মেয়ে ও নেসাগ্রস্থ লোকজন জড়ো করে গান বাজনা এবং মাদক বিক্রি করে বিপুল পরিমান টাকা রোজগার করছে। এখানে নারী পাষবিকতার শিকার হয়। কেউ এসব কর্মকান্ডে বাঁধা দিলে তাকে নানা ভাবে হয়রানী করা হয় ও ভয় ভীতি দেখানো হয়। এসব কাজে বাঁধা দেওয়ায় গত ৩ জুলাই অভিযুক্তরা তাসলিমাকে মারপিট করে জখম করেন। এব্যাপারে গত ৭ জুলাই সিলেট সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এ একটি অভিযোগ দায়ের করে তাসলিমা (বিশ্বনাথ সি.আর মামলা নং-২১৩)। ওই মামলা দায়েরের কারনে অভিযুক্তরা তাসলিমাকে বাড়ি ঘর থেকে তাড়িয়ে দেয় এবং ১৯ জুলাই রাতে তাসলিমার ঘরের তালা ভেঙ্গে নগদ টাকা, সোনা, আসবাবপত্র, ধান, চাউল সহ প্রায় ৪ লাখ টাকার মালামাল চুরি করে নিয়ে যায় এবং ঘরটি তাদের দখলে নেয়। এ ব্যাপারে তাসলিমা থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করার পর থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে তাসলিমার ঘরে অবস্থানকারীদেরকে ঘর থেকে বের করে ঘরটি তালাবদ্ধ করে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও মুরব্বিদের হেফাজতে রেখে আসনে। পরবর্তীতে পুলিশের সহযোগীতায় তাসলিমা ও তার মা নিজ ঘরে ফিরেন। কিন্ত অভিযুক্তদের হুমকিতে এখনও আতংকিত তাসলিমা ও তার মা নেওয়ারুন নেছা।
এব্যাপারে আশিক নূর তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, আমার পিতা জীবিত অবস্থায় বাড়ি ওরস চালু করছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা করে যাচ্ছি। এখানে মাদক সেবন বা অসামাজিক কোন কার্যকলাপ হয় না। পুলিশ আমাদের নিষেধ করায় আমরা গত বৃহস্পতিবার ওরস বন্ধ করে দেই। তাসলিমা তার পিতার সন্তান নয় দাবি করে তিনি বলেন ‘সে যে ঘরে থাকে ওই ঘরটি আমার’।
এব্যাপারে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম বলেন, আদালতে ও থানায় দায়েরকৃত তাসলিমা বেগমের অভিযোগটি তদন্ত চলতেছে। এব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তিনি বলেন, ওরসের নামে কোন ধরণের অসামাজিক কর্মকান্ড কিছুতেই চলতে দেয়া হবে না।
Sharing is caring!