সিলেট ৩১শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৩:৫৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৩, ২০১৮
আবু তাহের চৌধুরী :: সিলেট পুনর্নিরীক্ষণ না করায় অর্ধলাখ সিএনজিচালিত অটোরিকশা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। নিরাপত্তা স্বার্থে প্রতি পাঁচ বছর পরপর সিলিন্ডার পুননিরীক্ষণ করার বাধ্যবাধকতা থাকালেও সিলেটের গাড়িমালিকরা তাতে সাড়া দিচ্ছেন না। এ কারণে সিলেটে সিএনজিচালিত যানবাহনর সিলিন্ডার দূর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ছে। গত পাঁচ বছরে বেশ কয়েকটি বিষ্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে। বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ শুধু যানবাহনের উপরের অংশ দেখেই প্রতি বছর ফিটনেস সার্টিফিকেট দিচ্ছে। পুনর্নিরীক্ষণ ছাড়া সিএনজি অটোরেকশা চলাচল সড়ক নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছে সচেতন মহল।
বিআরটিএ সূত্র জানায় সিলেট অনুুমোদিত সিএনজি অটোরিকশা ২১ হাজার ২২৩টি। তবে এর বাইরে অনুমোদনহীন ৩০ হাজার সিএনজি অটোরিকশা রয়েছে। সেখানে বৈধ সিএনজি অটোরিকশার সিলিন্ডার পুনর্নিরীক্ষণ হয় না সেখানে অবৈধগুলোর পুনর্নিরীক্ষণের কোন সুযোগ নেই বিআরটিএর। অবৈধ অটোরকশায় নকল, নিম্নমানের মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করার কারণে ঝুঁকি আরও বেড়েছে। অনুসদ্ধানে জানা যায়, সিলেট কোম্পানীগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ, বালাগঞ্জ, বানাইঘাট, জকিগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, ওসমানীনগর, গোয়াইনঘাট, দক্ষিণ সুরমা ও জৈন্তাপুর উপজেলায় চলাচালকারী অধিকাংশ সিএনজি অটোরিকশা চলছে অনুমোদন ছাড়াই। রাস্তায় যেসব সিএনজিচালিত গাড়ি চলছে সেগুলোর সিলিন্ডারে ধারণক্ষমতা ৩০০০ পিএসআই কিংবা ২০০ বার দিয়ে টেস্ট করা থাকে। আর ফিলিং ষ্টেশনে গ্যাস ভরা হচ্ছে ৩৫০ বা কিংবা ৫০০০ পিএসআইতে। ফলে সিলিন্ডারের ওপর বাড়তি চাপ পড়ছে। ভালো মানের গ্যাস সিলিন্ডারে ১৫ থেকে ২০ হাজার সাইকেল গ্যাস ভর্তি করা যায়। পাঁচ হাজার সাইকেল গ্যাস ভর্তি করাই নিরাপদ। অথচ ১৫ থেকে ২০ হাজার সাইকেল গ্যাস ভরছে চালক ও মালিকরা। তাদের মতে, সাধারণত চলন্ত অবস্থায় দূর্ঘটনা ছাড়া গ্যাস সিলিল্ডার বিস্ফোরিত হওয়ার ঘটনা বিরল। গ্যাস নেওয়ার সময় বিস্ফোরিত ঘটনা ঘটে পুরুত্ববিশিষ্ট সিলিন্ডার ব্যবহার। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ব্যবহারের কারণে সিলিন্ডারে হালকা ক্ষয় হয়ে থাকে, যেগুলো খালি চোখে দেখা যায না; কিন্তুু পরীক্ষায় তা বের হয়ে আসে। অথচ সিলেটে এ ধরণের পরীক্ষা করার কোন যন্ত্র নেই।
সংশিষ্ট সূত্র জানায়, একটি গাড়িতে সিএনজি সিলিন্ডার লাগানোর সময় সিলিন্ডারের সঙ্গে শাটার বাল্ব। হাইপ্রেশার পাইপ, সুইচমিটার ওয়্যারিং, ক্লাম, ক্লিপ ও টাইমিং রিলে লাগাতে হয়। দীর্ঘদিন ব্যবহারের পর এর কোন না কোনটিতে সমস্যা দেখা দিলে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। তাই পাঁচ বছর পর পর পুনর্নিরীক্ষণ করাতে হয়। এতে খরচ হয় মাত্র দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকা।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেট সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, গ্যাস সিলিন্ডার রোধে এখনই কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। জননিরাপত্তার স্বার্থে সংশি¬ষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোতে সক্রিয় হতে হবে। সিলেট বিআরটিএর একটি সূত্র জানায়, প্রতিবছর গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা করতে হয়; কিন্তু কোন যন্ত্রপাতি না থাকায় কর্মকর্তারা সার্টিফিকেট দিচ্ছেন গাড়ির বডি দেখে। এতে অনেক ক্ষেত্রে রঙ করা পুরানো গাড়িও ফিটনে সার্টিফিকেট দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সিলেট বিআরটিএর সহকারী পরিচালক বলেন, ভালো করে পরীক্ষা করেই সার্টিফিকেট দেওয়া হয়।
সিলেট সিএনজি অটোরিকশা মালিক সমিতির সভাপতি জাকারিয়া আহমদ জানান, পাঁচ বছর পরপর সিলিন্ডার পুনর্নিরীক্ষনে অনেকেই উদ্যোগী নয়। তিনি অভিযোগ করেন, গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট দেওয়ার ক্ষেত্রেই কোন নিয়মকানুন মানা হয় না।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd