সিলেটে শিক্ষক হত্যায় দুইজনের স্বীকারোক্তি

প্রকাশিত: ৬:৩৯ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১, ২০১৯

সিলেটে শিক্ষক হত্যায় দুইজনের স্বীকারোক্তি

নিজস্ব প্রতিনিধি :: স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে রাতে সাইফুর রহমানকে নিয়ে নগরীর সোবহানীঘাট এলাকার হোটেল মেহেরপুরে ওঠেন নিশাত তাসনীম রুপা।  হোটেলে ওঠার পর রাতেই সাইফুরকে বিষ ও ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করেন রুপা। এরপর গলায় রশি পেচিয়ে  তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন।

মৃত্যু নিশ্চিতের পর রুপা হোটেলের অভ্যর্থনা কক্ষে (রিসিপশন) এসে জানান, তাঁর স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, হাসপাতালে নিতে হবে। এসময় পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক রুপার প্রেমিক মোজাম্মিল হোসেন একটি অটোরিকশা নিয়ে হোটেলের সামনে আসেন। পরে ওটা অটোরিকশায় করে রুপা, মোজাম্মিল এবং চালক মিলে সাইফুরের লাশ দক্ষিণ সুরমায় সড়কের পাশে ফেলে আসেন।

সোমবার সিলেট মহানগর ৩য় আদালতের হাকিম সাইফুর রহমানের আদালতে এমনটি জবানবন্দি দেন গরীর শাহপরান এলাকার খিদিরপুর গ্রামের শফিকুর রহমানের মেয়ে নিশাত তাসনীম রুপা (২০)। একই আদালতে রুপার কথিত প্রেমিক ছাতক উপজেলার আলমপুর গ্রামের মোজাম্মিল হোসেনও (২৪) স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

১৬৪ ধারায় তাদের জবানবন্দি প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দক্ষিণ সুরমা থানার ভারাপ্রপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ফজল।

রোববার ভোরে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার তেলিরাই এলাকার সড়কের পাশ থেকে নগরীর মদন মোহন কলেজের প্রভাষক সাইফুর রহমান (২()-এর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে নগরীর টিলাগড় থেকে মোজাম্মিল হোসেন (২৪) এবং নিজ বাড়ি থেকে নিশাত তাসনীম রুপা (২০) কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

সোমবার সকালে নিহতের মা রনিফা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে দক্ষিণ সুরমা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। গ্রেপ্তার হওয়া দুইজনকে দুপুরে দুপুরে আদালতে হাজির করলে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

দু’জনের জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বাসায় লজিং থেকে রুপাকে পড়াতেন সাইফুর। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

সম্প্রতি মোজাম্মিলের সাথে প্রেমে জড়ান রুপা। এতে বাঁধা দেন সাইফুর। এ নিয়ে বিরোধের জের ধরে মোজাম্মিল ও রুপা পরিকল্পনা করে সাইফুরকে হত্যা করেন।

কলেজ শিক্ষক সাইফুর হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) জেদান আল মুসা বলেন, সাইফুরের লাশ উদ্ধারের পরই তদন্তে নামে পুলিশ। এতে প্রেম সংক্রান্ত বিরোধের বিষয়টি উঠে আসে।

প্রসঙ্গত, মদন মোহন কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের খন্ডকালীন শিক্ষক সাইফুর রহমান গোয়াইনঘাট উপজেলার ফলতইল গ্রামের মো. ইউসুব আলীর ছেলে। গত শনিবার সকাল ১১টার দিকে মেস থেকে বের হন সাইফুর রহমান। রাতে তিনি আর বাসায় ফিরেননি। রবিবার সকালে দক্ষিণ সুরমার তেলিরাই এলাকায় তার লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন স্থানীয় লোকজন।

এই হতাকান্ডের বিচার দাবিতে রোববার নগরীর লামাবাজারে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে মদন মোহন কলেজের শিক্ষার্থীরা।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

April 2019
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..