নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মামলা,পরিকল্পনাকারীরা ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মী

প্রকাশিত: ১১:০৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৯, ২০১৯

নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মামলা,পরিকল্পনাকারীরা ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মী

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : পরীক্ষাকেন্দ্রে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে (১৮) পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান। মামলায় মুখোশধারী চারজন এবং অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, অজ্ঞাতপরিচয় চার আসামি ও তাদের সহযোগীরা হত্যার উদ্দেশ্যে রাফির গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়েছে।

নোমান পরে সাংবাদিকদের বলেন, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা করার পর যে চারজন বিভিন্ন সময় মামলা প্রত্যাহার করার জন্য আমার পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিয়ে আসছে তাদের নামও মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

নোমান আরো জানান, তার বোনকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টায় জড়িত সেই বোরকা পরিহিতরা ওই মাদ্রাসার ছাত্রী নয়। মৃত্যুপথযাত্রী রাফির বরাত দিয়ে তিনি জানান, ছাদে বোরকা পরিহিতদের চোখে চশমা, হাতে ও পায়ে মোজা ছিল। ওই মাদ্রাসার কোনো ছাত্রী এই পোশাকে কখনো আসেনি।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ৫ এপ্রিল মাদ্রাসার ভেতরে তোলা একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। ওই ছবিতে মাদ্রাসা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন শামীম, অধ্যক্ষ মুক্তি পরিষদের আহ্বায়ক নুর উদ্দিন, ছাত্রলীগ কর্মী আরিফুল ইসলাম সাকিব ও যুবলীগ কর্মী নুর হোসেন হোনাকে হামলার পরিকল্পনাকারী হিসেবে চিহ্নিত করেছে ওই মাদ্রাসার ছাত্ররা। চিহ্নিত ওই চারজনই মাদ্রাসা গভর্নিং বডির সদস্য আ.লীগ নেতা রুহুল আমিন ও পৌর কাউন্সিলর মকসুদ আলমের সহযোগী। তাদের সহযোগিতায় দলীয় ওই কর্মীরা দুই দফা অধ্যক্ষ মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন।

এ ব্যাপারে সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, অভিযুক্ত ওই ৪ জনের পাশাপাশি পৌর কাউন্সিলর মকসুদ আলম ঘটনার পর থেকেই পলাতক আছেন। পুলিশ তাদের আটকের জন্য অভিযান চালাচ্ছে। এ ছাড়া আ.লীগ নেতা রুহুল আমিনকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।

ওসি আরো জানান, রাফির গায়ে আগুন দেয়ার ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে আটক করা হয়েছে। তারা হলেন মাদ্রাসার দারোয়ান মো. মোস্তফা, অধ্যক্ষের ব্যক্তিগত সহকারী নুরুল আমিন, ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, আলাউদ্দিন ও জসিম উদ্দিন। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।

এ বিষয়ে ফেনীর পুলিশ সুপার এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার বলেন, পুলিশ অল্প সময়ের মধ্যে প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হবে। এক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

এর আগে গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহান রাফিকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাকে আটক করে পুলিশ। ওই ঘটনার পর থেকে অধ্যক্ষ কারাগারে রয়েছেন। এরই মধ্যে ৬ এপ্রিল শনিবার সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় যান রাফি। ওই সময় তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করেছে এক ছাত্রীর এমন সংবাদে ভবনের চারতলায় যান তিনি। সেখানে মুখোশ পরা ৪ দুর্বৃত্ত তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। এতে অস্বীকৃতি জানালে পেট্রোল ঢেলে তার গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় তারা।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

April 2019
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..