সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৮:২২ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১০, ২০১৯
সুলতান সুমন :: স্ত্রীর মর্যাদা ও মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ধর্ষিতা তরুণী। গতকাল বুধবার সিলেটের জেলা প্রশাসক, ডি আই জি, জেলা পুলিশ সুপার ও বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে আবেদন করেছে ধর্ষিতা তরুণী। সে তার আপন চাচাতো ভাই ও সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার ইরন মিয়া ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনে। অভিযোগে ধর্ষিতা তরুণী জানায়, বিশ্বনাথের স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন, চেয়ারম্যান ও নেতারা ধর্ষক ইউপি সদস্যের পক্ষে রয়েছেন। ফলে সে ন্যায় বিচার পাচ্ছে না। ধর্ষিতা তরুণী তার অভিযোগে আরো উল্লেখ করে, সে তার পিতা-মাতার বড় মেয়ে। ছোট দুটি বোন ও শিশু দুটি ভাই রয়েছে। তার পিতা ও মাতা বৃদ্ধ। বাবা দীর্ঘ দিন প্রবাসে ছিলেন। প্রবাসে থাকার সময় ২০০৯ সালে সে ৭ম শ্রেণীতে পড়া লেখা করতো। তখন আপন চাচাতো ভাই সিলেটের বিশ্বনাথের দৌলতপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান সদস্য ও মৃত আস্তফা মিয়ার ছেলে ইরন মিয়া তাদের পরিবারের দেখাশুনা করতেন। সেই সুবাদে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ২০০৯ সাল থেকে শারীরিক সর্ম্পক স্থাপন করে নিয়মিত ধর্ষন করেন। ধর্ষণের ফলে সে গর্ভবতি হলে ২০১৪ সালে ডা.ইয়াসমিন এর প্রাইভেট চেম্বারে , ২০১৫ সালে রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও ২০১৭ সালে সুনামগঞ্জের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে ইরন মিয়া স্বামী পরিচয় দিয়ে তিনবার গর্ভপাত ঘটায়। পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ১৩ আগষ্ট পুনরায় আবার ধর্ষন করে। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ায় সে আত্মহত্যার চেষ্টা করেও ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায়। পরে ইরনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে বিশ্বনাথ থানা পুলিশের দারস্থ হয়। পুলিশ উল্টো তাকে আটকের ভয় দেখিয়ে ফিরিয়ে দেয়। পরে ১৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর বিয়ের দাবীতে অনশন করে। থানা পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন তাকে সঠিক সমাধানের কথা বলে বাড়িতে পাঠায়। কিন্তু অদৃশ্য কারণে আজও এর কোন সমাধান হয়নি। পরবর্তীতে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা হলেও ইরন রাজি হয়নি। এ নিয়ে ধর্ষিতা বাদী হয়ে বিশ্বনাথ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষনের অভিযোগে ৯(১) ধারায় (মামলা নম্বর ১৪(৯)১৭ ইং )দাখিল করেন। এই মামলা দাখিলের পর থেকে ধর্ষিতা ও তার মা, ভাই-বোনের উপর কয়েকবার আক্রমন করে বাড়ি ছাড়া করে ইরন ও তার বাহিনী। এ নিয়ে ধর্ষিতা বিশ্বনাথ থানায় ১৭ সালের ১৭ নভেম্বর জিডি নম্বর ৯১১ দাখিল করেন। পরবর্তীতে এসকল মামলা তুলে নেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে ইরন বাহিনী। মামলা তুলে না নেয়ায় ধর্ষিতার মা ও ভাই-বোনের উপর হামলা করে। এতে ধর্ষিতা তরুণী ও তার মা গুরুত্বর আহত হয়। তাদের রক্ষা করতে গ্রামের ফখরুল ও ফাহিম এগিয়ে এলে তাদেরকেও মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে ইরন বাহিনী। পরবর্তিতে ইরন মেম্বার তার ভাই চন্দনকে বাদী করে ধর্ষিতা তরুণী, তার মা ও ফখরুল এবং ফাহিমের বিরুদ্ধে বিশ্বনাথ থানায় (মামলা নম্বর ০৮, তাং ১৬/০৩/১৯) দাখিল করে। আর ধর্ষিতা তরুণী ও তার মা সুস্থ হয়ে বিশ্বনাথ থানায় গিয়ে অভিযোগ দাখিল করেন। কিন্তু অদৃশ্য কারণে মামলাটি বিলম্বে রের্কড হয়। ধর্ষিতা ও তার মা সোহাগ আহমদ চন্দনের মামলায় জামিন নিয়েও বাড়িতে উঠতে পারছেনা। অপরদিকে ধর্ষিতা তরুণীর মামলায় ইরন মেম্বার সহ তার বাহিনী জামিন না নিয়েও এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরছে। পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করছে না। উল্টো ধর্ষিতাকে হুমকি দিচ্ছে। যার ফলে ধর্ষিতার ছোট বোন সিংঙ্গেরকাছ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী, ছোট ভাই ৭ম শ্রেণীর ছাত্র ও পূর্বপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্র। তাদের লেখাপড়ায় প্রচন্ড বিঘœতা ঘটছে। আর ইরন বাহিনী ধর্ষিতা তরুণীকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে । ধর্ষিতা তরুণী তার অভিযোগে উল্লেখ করে, যদি মামলা না তুলে নেয়, তাহলে তাকে ও তার পরিবারের লোকদেরকে খুন করে লাশ গুম করবে। তাছাড়া ইরন মেম্বার এলাকায় আরো বলাবলি করছে যে, তার সাথে রয়েছেন স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন, চেয়ারম্যান ও নেতারা। সকল সময় তারা তাকে সার্বিক সহযোগিতা করছেন। তাই মামলা দিয়ে কোন ফল মিলবে না। শেষ পর্যন্ত পুলিশ তার পক্ষেই কাজ করবে। ধর্ষিতার বাড়িঘর সহায় সম্পত্তি ঘ্রাস করার পায়তারা করছে। ধর্ষিতা তার অধিকার চায়। আর ইরন মেম্বারের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ থেকে সে ও তার পরিবার মুক্তি চাই। তাছাড়া ইরন মেম্বার ও তার বাহিনীর শাস্তি চাই। এ ব্যাপারে সিলেটের ডি আই জি মো. কামরুল আহসান জানান, ধর্ষিতা তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে দায়িদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd