কমলগঞ্জে এক স্কুলছাত্রের কারণে রক্ষা পেলো ৫০০ যাত্রীর প্রাণ

প্রকাশিত: ১:০০ পূর্বাহ্ণ, মে ৯, ২০১৯

কমলগঞ্জে এক স্কুলছাত্রের কারণে রক্ষা পেলো ৫০০ যাত্রীর প্রাণ

আবুল হোসেন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের কামুদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র। সে শমশেরনগর ইউনিয়নের ঈদগাহ টিলার খোকন মিয়ার ছেলে। গতকাল মঙ্গলবার (৭ মে) রাতে ছাত্র আবুল হোসেনের সচেতনতার কারণে অল্পের জন্য বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে পাঁচ শতাধিক যাত্রীবাহী চট্রগ্রাম অভিমুখী আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেন।

ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাত ১১টায় এ ঘটনাটি ঘটে শমশেরনগর ইউনিয়নের ঈদগাহ টিলা গ্রাম এলাকার সিলেট-আখাউড়া রেলপথের ৩০৬/২নং রেলপথ এলাকায়।

আজ বুধবার (৮ মে) দুপুর ১২টায় সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, শমশেরনগর আপ আউটার সিগন্যালের অদুরে ৩০৬/২নং রেলপথের ঈদগাহ টিলা গ্রাম এলাকার বাঁকে একটি স্থানে রেলপথের একটি পাত ভেঙ্গে ফাঁক হয়ে গিয়েছিল। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় ওই গ্রামের ছেলে কামুদপুর উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র আবুল হোসেন সায়েদ কবিরাজের বাড়ি থেকে ফেরার পথে রেলের পাত ভেঙ্গে ফাঁক হয়ে থাকতে দেখে গ্রামবাসীকে অবহিত করে। গ্রামবাসী এ খবরটি দ্রুত শমশেরনগর ইউনয়িনের ৬নং ওয়ার্ড সদস্য ফারুক আহমদের মাধ্যমে শমশেরনগর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার কবির আহমদ ও শ্রীমঙ্গলস্থ রেলওয়ের গণপূর্ত বিভাগকে অবহিত করেন।

এ খবর পেয়ে দ্রুত রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভাঙ্গা রেলপাত সরিয়ে সেখানে নতুন এক টুকরো রেলপাত বসিয়ে এক ঘন্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করেন। এ সময় শমশেরনগর রেলওয়ে স্টেশনে চট্রগ্রাম অভিমুখী আন্তঃনগর পাঁচ শতাধিক যাত্রীবাহী উদয়ন এক্সপ্রেস শমশেরনগর স্টেশনে আটকা পড়েছিল। আর ঢাকাগামী আন্তঃনগর উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন কুলাউড়া স্টেশনে আটকা পড়েছিল।

নবম শ্রেণির ছাত্র আবুল হোসেন জানায়, মঙ্গলবার রাতে একটি কাজে সে সায়েদ কবিরাজের বাড়ি গিয়েছিল। সেখান থেকে ফেরার সময় টর্চ লাইটের আলোতে দেখতে পান রেলপথের একটি পাত দ্বিখন্ডিত হয়ে পড়ে আছে। এ অবস্থায় ট্রেন চলাচল করলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার কথা ভেবে সে গ্রামবাসীকে বিষয়টি অবহিত করলে তারা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

শমশেরনগর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড সদস্য ফারুক আহমদ জানান, ছাত্রটি সচেতন হয়ে বিষয়টি গ্রামবাসীকে না জানালে তিনিও জানতেন না। ঘটনাস্থল রেলপথের বাঁক এলাকা বলে এ সময় ট্রেন চলাচল করলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেত। তিনি শমশেরনগর স্টেশন মাস্টারকে এ বিষয়ে জানিয়ে রেলের গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের অবহিত করলে তারা দ্রুত ভাঙ্গা রেলপাত সরিয়ে নতুন একটি পাত প্রতিস্থাপনের পর ট্রেন চলাচল করে।

শমশেরনগরের স্টেশন মাস্টার কবির আহমদ বুধবার সকালে এ প্রতিনিধিকে বলেন, আসলেই ছাত্র আবুল হোসেনের সচেতনতায় সম্ভাব্য একটি রেল দুর্ঘটনা থেকে বাঁচা গেল। তিনি খবর শুনে রেলওয়ে গণপূর্ত বিভাগের শ্রীমঙ্গলস্থ উর্দ্ধতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী মনির হোসেনকে অবহিত করলে তিনি সংশ্লিষ্টদের নিয়ে এসে দ্রুত ভাঙ্গা রেলপাত সরিয়ে নতুন একটি পাত স্থাপন করলে প্রায় আধা ঘন্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

শ্রীমঙ্গলস্থ রেলওয়ে গণপূর্ত বিভাগের উর্দ্ধতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী মনির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এখন এ রেলপথ ঝুঁকিমুক্ত আছে। তিনি আরও বলেন, সময়মত স্কুল ছাত্রটি খবরটি না জানালে আসলেই একটি দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারতো।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..