সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:০৯ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৩, ২০১৯
কানাইঘাটে হত্যা মামলার ভুয়া চার্জসিট দিয়ে একটি প্রতারক চক্র নিরীহ মহিলার কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ উঠেছে। আত্মসাতের সময় তারা থানা পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে ও সাংবাদিক সেজে এ টাকা গুলো হাতিয়ে নেয় প্রতারকরা।
গত শনিবার কানাইঘাটের বহুল আলোচিত স্ত্রীর হাতে ফারুক হত্যা মামলার অন্যতম আসামী পরকীয়া প্রেমিক মস্তফার মা সুরতুন নেছা স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য দিয়েছেন।
এ সময় তিনি উত্তেজিত হয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন ফারুক হত্যা মামলায় আমার তিন ছেলেকে আসামী করা হয়েছে। এর মধ্যে মস্তফা ব্যতিত আমার অপর দুই ছেলে আব্দুল্লাহ ও জহির হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত নয়। সেজন্য আমি আমার অপর ২ ছেলেকে যখন মামলা থেকে অব্যাহতির জন্য হন্য হয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরছি, তখনই কানাইঘাট থানার সামনে কম্পিউটার দোকানদার আজমল, ফারুক, হান্নান সহ একটি চক্র আমার পিছু ধরে। তারা পুলিশ, সাংবাদিকদের নামে আমার ২ ছেলেকে চার্জসিট থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা বলে পর্যায় ক্রমে ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এর মধ্যে কম্পিউটার দোকানদার আজমল হোসেন ঐ মহিলাকে বলেন আমি থানার সব কিছু লিখি। আমার এখানে চার্জসিট লেখা হয়। আমি চার্জসিট থেকে নাম বাদ দিলে কারো কিছু করার নেই। সে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সাথে মিলে আমার ২ ছেলেকে চার্জসিট থেকে অব্যাহতির কথা বলে ১৫ হাজার টাকা দাবী করে। পরে আমি শুধু তাকে ১০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলি। এ সময় এই চক্রের সদস্য ফারুক আহমদ নিজেকে সাংবাদিক বলে আমার কাছে পরিচয় দেয়। এতে সাংবাদিক ও পুলিশকে ম্যানেজ করতে তারা মোট ১ লক্ষ টাকার চুক্তি করে। এর মধ্যে আমি আমার অভাব অনটন দেখিয়ে পর্যায় ক্রমে তাদেরকে ৭০ হাজার টাকা দেই। এতে সব টাকার লেনদেন হয়েছে সাংবাদিক পরিচয়দানকারী ফারুক ও হান্নানের মাধ্যমে। বিনিময়ে তারা আমাকে চার্জসিটের কপি দিয়েছেন। তাদের দেওয়া চার্জসিটে আমার অপর দুই ছেলে আব্দুল্লাহ ও জহিরের নাম নেই। কিন্তু গত শুক্রবার আমার ঐ ২ ছেলেকে পুলিশ বাড়িতে ধরতে গেলে আমি অবাক হই। তখন আমি বুঝতে পারি আমি প্রতরণার ফাঁদে পড়েছি। সাথে সাথে আমি থানার সামনের আজমল কম্পিউটারে এসে তার দোকানটি বন্ধ এবং ফারুকেও খোঁজে পাইনি।
এমন প্রতারণার বর্ণনা স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন ঐ মহিলা। এমন প্রতারনার বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকরা থানার ওসি (তদন্ত) আনোয়ার জাহিদ কে জানিয়েছেন। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর বর্তমানে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য প্রতারকরা ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া সুরতুন নেছা কে ম্যানেজের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে প্রতারকরা। সুরতুন নেছা বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করেছেন। এ ব্যাপারে কম্পিউটার দোকানদার আজমল হোসেন জানান, তিনি এর সাথে জড়িত নয় এবং ভূয়া চার্জসীটটি তিনি দেননি। ফারুক আহমদ জানান, হান্নানের মাধ্যমে তিনি ২০ হাজার টাকা পেয়েছেন ঘটনার পিছনে কম্পিউটার দোকানে আজমলের হাত রয়েছে।
বিষয়টি জানাজানি হলে, ঐ প্রতারক চক্র আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে টাকা ফিরত দিবেন বলে সুরতুন নেছা জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, গত ৫ মে কানাইঘাট উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপি’র বাউরভাগ তৃতীয় খন্ড নুরপুর গ্রামের মৃত মাহমুদ হোসেনের পুত্র ফারুক আহমদকে ঘুমন্ত অবস্থায় তার স্ত্রী হুসনা বেগম ও প্রেমিক মস্তফা মিলে গলা কেটে হত্যা করে পাশর্^বর্তী গোরকপুর গ্রামের প্রবাসী মাসুক আহমদের বাড়ীর সেফটিক ট্যাংকিতে ফেলে ট্যাংকির মুখ ঢেকে রাখেন। এ ঘটনার ২দিন পর পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। পরে নিহতের চাচা সামছুল হক বাদী হয়ে হোসনা বেগম, মোস্তফা সহ আরো ২ জনকে আসামী করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd