সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৫:৫১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৯, ২০১৯
সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের কৃষ্ণচন্দ্র স্মৃতি হিন্দু ছাত্রাবাস বেহাল অবস্থায় আছে। আধাপাকা ৭ কক্ষের ছাত্রাবাসে অনেক রুমের টিনের ছিদ্র দিয়ে পড়ে বৃষ্টির পানি। দেয়ালে রয়েছে একাধিক ফাটল। জানালাগুলো ভাঙ্গা। ছাত্রাবাসে থাকা ২৪ জন ছাত্রের জন্যে রয়েছে একটি মাত্র শৌচাগার ও টয়লেট । নেই বিশুদ্ধ পানির সুব্যবস্থা।
উপায় না পেয়ে ময়লা আবর্জনা আর স্যাঁত স্যাঁতে পরিবেশে থাকছেন দূর থেকে আসা ছাত্ররা। তবে ছাত্রাবাসের অবস্থা বেহাল হলেও এখানে রয়েছে মিঠুর সিন্ডিকেট। চলছে অছাত্রদের দৌরাত্ম্য। কে বা কাহারা ছাত্র অধিনায়ক বানিয়েছেন জানেন না কলেজ কতৃপক্ষ। ছাত্র অধিনায়ক নামধারী দেবাশীষ সরকার মিঠুর ছাত্রত্ব দুই বছর আগে শেষ হলেও এখনও হোস্টেলের সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন তিনি।
দীর্ঘদিন অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করায় ছাত্রাবাসে থাকা বাকি ছাত্রদের উপরে চলে মিঠুর খবরদারি। তাঁর কথা অনুসারে সাধারণ ছাত্রদের থাকা-না থাকা, চলাফেরা, খাবারদাবার, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। কেউ প্রতিবাদ করলে ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে তাকে হারাতে হয় হোস্টেলের সিট। পড়াশুনা ফেলে রেখেও মিঠুর ব্যক্তিগত কাজে যেতেও বাধ্য করা হয় সাধারণ ছাত্রদের। প্রায় সময়ই সিগারেটের জন্য ছাত্রদের বাহিরে পাঠান তিনি। ছাত্রাবাসে নতুন ছাত্র উঠতে গিয়ে কলেজ প্রশাসনে চোখ ফাঁকি দিয়ে চলে টাকা লেনদেনের খেলা। নতুন ছাত্র উঠতে গেলে মিঠুর সাথে দফারফা করে নগদ অর্থ দিয়ে সিট নিতে হয়।
তাছাড়া প্রায় সময় দিনেদুপুরে ছাত্রাবাসে অসামাজিক কার্যকলাপ করারও অভিযোগ আছে মিঠুর বিরুদ্ধে। দিনদুপুর মেয়ে নিয়ে আসেন হোস্টেলে। মিঠুকে কেন্দ্র করে হোস্টেলে চলে অছাত্রদের বেহায়াপনা। এভাবে দিনের পর দিন অতিবাহিত হতে থাকলেও ছাত্রাবাসের বেহাল অবস্থা ও ছাত্রত্বহীন মিঠুর নৈরাজ্যে দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না কলেজ কর্তৃপক্ষের। তাই বেহাল ছাত্রাবাস সংস্কার ও ছাত্রাবাস পরিচালনায় নতুন অধিনায়ক মনোনীত করতে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ প্রশাসনে তৎপরতা জোরদারের দাবি জানিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শর্তে একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে হিন্দু ছাত্রাবাসটি বেহাল অবস্থায় থাকলেও এটি সংস্কারে উদ্যোগ নিচ্ছেন না কর্তৃপক্ষ। এতে আমাদের আবাসন, সেনিটেশনের সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টি কলেজ প্রশাসনের গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার। অধিনায়ক মিঠুর ব্যাপারে এই শিক্ষার্থীরা বলেন, মিঠু দা’র ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে সেই কবে। মিঠু দার জন্য গভীর রাতেও সিগারেট আনতে বাহিরে যেতে হয়। ছাত্র না হয়েও তিনি এখনও আমাদের উপর খবরদারি করে যাচ্ছেন। উনার ইচ্ছা অনুযায়ি সকল কার্যক্রম পরিচালিত হয় এখানে। আমরা এ থেকে মুক্তি চাই। কেউ প্রতিবাদ করলে হেনস্তার শিকার হয়ে হোস্টেল থেকে বের হতে হয়।
প্রতিবাদ করে অনেকেই সিট হারিয়েছেন। এ ব্যাপারে দেবাশীষ সরকার মিঠুর সাথে যোগাযোগ করার হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দেন। এ ব্যাপারে সরকারি কলেজের অধক্ষ্য নীলিমা চন্দের সাথে যোগাযোগ করা হলে প্রতিবেদকের সাথে সরাসরি কথা বলতে চান।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd