সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের পরিচালনা কমিটি দীর্ঘ এক যুগ ধরেই গোপনেই করা হচ্ছে । এবারও গোপনেই কমিটি করার
পায়তারা করায় অভিযোগ তুলে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর মঙ্গলবার(২৯ অক্টোবর)একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রতিষ্ঠানের অভিবাবকবৃন্দ। এনিয়ে আলোচনা সমালোচনা ঝড় উঠেছে উপজেলা জুড়ে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের পরিচালনা কমিটি গঠন প্রসঙ্গে অভিভাবকদের কোন কিছু না জানিয়ে গোপনে কমিটি গঠনের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। অভিভাবক সদস্য পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য মনোনয়নের ফরম জমাদানের নির্দিষ্ট সময়সীমাও কোন অভিবাবক কে। যার ফলে ইতোমধ্যে মনোনয়নের ফরম জমাদানের সময় অতিবাহিত হয়ে গেছে। এঅভিযোগে অভিভাবকগণ পরিচালনা কমিটি গঠনের লক্ষ্যে সবার অংশ গ্রহনে একটি অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে মনোনয়ন ফরম দাখিলের সময়সীমা বৃদ্ধি করে নির্বাচনে অংশ গ্রহনে আগ্রহী অভিবাবকদের সুযোগ দানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়েছেন।
আরো জানাজায়,বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের পরিচালনা কমিটি দীর্ঘ এক যুগধরে একাধারে গোপনে নিজেদের মত কমিটি তৈরী করে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন দায়িত্ব প্রাপ্ত্যরা। যার জন্য বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের প্রধান অধ্যাক্ষ ইয়াহিয়া তালুকদার বিদ্যালয়ের শ্রেনী কক্ষের সংকট থাকার পরও তিনি নিজে দুটি কক্ষ দখল করে পরিবার নিয়ে বসবাস করছে। এছারাও তিনি অতিরিক্ত বেতন ভাতা উত্তোলন করা সহ নিজের সন্তানকে অফিস কক্ষে অফিস চলা কালিন সময় শিক্ষকদের চেয়ারে বসিয়ে পড়াশুনা করান। শিক্ষাকরা স্কুল ফাঁকি দিয়ে প্রাইভেট পড়ান ও নৈশ প্রহরী দায়িত্ব পালন না করে মাসের পর মাস বেতন উত্তোলন করছে নিজে স্বার্থের কারনে কোন কথা বলেন না। এছাড়াও তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে শিক্ষক ও কর্মচারীদের সাথে চরম দূব্যবহার করে আসছেন দীর্ঘ দিন ধরে । এনিয়ে সবার মাঝে চরম ক্ষোব বিরাজ করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক,অভিভাবকগনসহ একাধিক সূত্রে জানাযায়,স্কুলে দায়সারা পদ্ধতিতে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা করার কারনে দিন দিন ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্টিত পুরনো এ বিদ্যালয়টি শিক্ষার মান রসাতলে যাচ্ছে যার প্রমান এবারের এসএসসি ও এইচ এস সি পরীক্ষার ফলাফল।
ছাত্র অভিবাবক শাহজাহান কবির বলেন,অধ্যক্ষ ইয়াহিয়া সাহেব বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে নিজস্ব লোক নির্বাচিত করার স্বার্থে গোপনীয়ভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও পরিচালনা কমিটি গঠনের বিষয়টি জানিয়ে দেয়া হয় এই বলে যে,তোমাদের কোন অভিভাবক যদি পরিচালনা কমিটির সদস্য পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক থাকেন তবে তারা যেন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। পরিচালনা কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠান সংক্রান্ত কোন চিটিও নোটিশ বোর্ড লক্ষ্য করা যায়নি। যা নিয়মনীতির পরিপন্থী।
ছাত্র অভিবাবক ইসমাইল হোসেন বলেন,শুধু বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গঠনের ক্ষেত্রেই নয় তিনি বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কর্মকান্ডে অনিয়ম,দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি চালিয়ে যাচ্ছেন।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সদস্য তোজাম্মিল হক নাসরুম বলেন,স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতার আত্মীয় হওয়ায় অধ্যক্ষ সাহেব দীর্ঘ ১ যুগেরও বেশি সময় ধরেই এ বিদ্যালয়টিতে অনিয়মের মহোৎসব চালিয়ে যাচ্ছে। ভয়ে অধ্যক্ষ সাহেবের নানামুখী অনিয়মের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে চায় না।
তাহিরপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রধান শিক্ষক মোঃ ইয়াহিয়া তালুকদার বলেন,প্রতিষ্ঠানের নিয়মনীতি অনুসরণ করেই পরিচালনা কমিটির নির্বাচন সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া আমরা বিদ্যালয়ের নোটিশ বোর্ডেও এ সংক্রান্ত চিটি টানিয়ে দিয়েছি। আমরা যা করেছি প্রতিষ্ঠানের নিয়মনীতি অনুসরণ করেই করেছি।
তাহিরপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজেন ব্যানার্জি বলেন, তাহিরপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
Sharing is caring!