মায়ের স্বামী যিনি, মেয়ের স্বামীও তিনি!

প্রকাশিত: ১১:০০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৭

ক্রাইম ডেস্ক : মা ও মেয়ের একজনই স্বামী! অবিশ্বাস্য হলেও এটাই রীতি মাণ্ডী সম্প্রদায়ের। প্রাচীন এই জনগোষ্ঠীর বাস ভারত এবং বাংলাদেশ সীমান্তের পাহাড়ি অঞ্চলে। মা ও মেয়ে দুজনেই তার সঙ্গে ভাগ করে নেয় শয্যা।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে দুই মাণ্ডী নারী এবং তাদের স্বামীর কথা। মা’র নাম মিত্তামোনি। বয়স ৫১ বছর। মেয়ে ওরোলা ডালবোট (৩০)। মা ও মেয়ের স্বামীর নাম নোতেন। এই পরিবারটির বাস মধুপুরের জঙ্গল ঘেরা গ্রামে। ঢাকা থেকে মধুপুর যেতে সময় লাগে গাড়িতে ৬ ঘণ্টা।
ওই সংবাদ মাধ্যমে উল্লেখ করা হয়, মধুপুরের এক প্রত্যন্ত মাণ্ডী গ্রামে বাস ওরোলা দাবোতের। কিশোরীবেলায় যেই সে স্বাদ পেল নারীত্বের‚ অমনি তার সামনে প্রকাশিত হল এক ভয়ঙ্কর সত্য। ওরোলার মা মিত্তামোনি তাকে জানালেন‚ যাকে এতদিন ওরোলা সৎ বাবা বলে জেনে এসেছে‚ সে আসলে তার স্বামী।
মাতৃতান্ত্রিক হলেও মাণ্ডী সমাজে প্রচলিত আছে এক অদ্ভূত রীতি। যদি কোনো বিধবা তরুণী বিয়ে করতে চান‚ তাহলে তাকে বিয়ে করতে হবে শ্বশুরবাড়ির গোষ্ঠী থেকেই। যেরকম হয়েছে মিত্তামোনির সঙ্গে। মাত্র ২০ বছর বয়সে স্বামীকে হারান তিনি। এদিকে শ্বশুরবাড়ির বংশে তখন বিয়ের যোগ্য পাত্র ছিল একজনই। ১৭ বছর বয়সী নোতেন। তাকে বিয়ে করলেন মিত্তামোনি। কিন্তু মানতে হল শর্ত। যে‚ মিত্তামোনির মেয়ে যখন পূর্ণ নারী হবে‚ তখন সে হবে নোতেনের দ্বিতীয় স্ত্রী। এটাই প্রচলিত রীতি। নইলে‚ বেশি বয়সী নারীদের বিয়ে করতে রাজি হয় না অল্পবয়সী পুরুষ।
ওরোলা যেমন জেনেছেন‚ মাত্র তিন বছর বয়সে নাকি তার বিয়ে হয় নোতেনের সঙ্গে। এখন মা-মেয়ে দুই বৌয়ের সঙ্গে দিব্যি আছেন নোতেন। সংসারে বড় হচ্ছে মা মিত্তামোনি এবং মেয়ে ওরোলার সন্তানরা। সবার বাবা‚ নোতেন।
রীতির চাপে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন ওরোলা। মাণ্ডী সমাজে মেয়েরাই বেছে নেয় জীবনসঙ্গী। প্রোপোজও তারাই করে। বিয়ের পরে শ্বশুরঘর করতে আসে স্বামী। এমনকী সম্পত্তির মালকিনও হয় মেয়েরাই। কিন্তু এসবের থেকে বঞ্চিত ওরোলা।
মাঝখান থেকে নষ্ট হয়ে গেছে মা-মেয়ের সম্পর্ক। মিত্তামোনি এখন মা নন‚ ওরোলার সতীন। পানি‚ বিদ্যুৎহীন গ্রামে থেকে সংসার করে যান সতীন মা-মেয়ে। কলা‚ আনারস বেচে যোগাড় করেন অন্ন।
আসলে উপজাতিদের মাতৃতান্ত্রিক সমাজ শাঁখের করাত। এখানে মেয়েদের উপার্জনও করতে হয়। আবার সংসারের ঊনকোটি তেষট্টিও সামলাতে হয়। পুরুষ তাদের পরজীবী মাত্র।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

December 2017
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  

সর্বশেষ খবর

………………………..