সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৮:৩৭ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২০
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : ইডেন কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করা শারীরিক প্রতিবন্ধী চাঁদের কনা ফের আর্থিক সাহায্যের জন্য আজ শুক্রবার থেকে ফের জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। এ কর্মসূচি চলবে আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার বিয়াড়া গ্রামের আব্দুল কাদেরের মেয়ে চাঁদের কনা (৩১) মাত্র ৯ মাস বয়সে শারীরিক প্রতিবন্ধকতার শিকার হন। কিন্তু থেমে থাকেননি। হাতের ভর দিয়ে রাজশাহী মাদার বক্স গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজে অনার্স পড়েছেন। এরপর ২০১৩ সালে ঢাকা ইডেন কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। দীর্ঘ ছয় বছর সরকারি চাকরির জন্য ঘুরে অনশনও করেছেন অনেক দিন পর্যন্ত কিন্তু তাতেও চাঁদের কনার মিলেনি কোনো চাকরি।
চাঁদের কনা বলেন, শারীরিক অসুস্থতা, আর্থিক চাপ আর মানসিক কষ্টে বেঁচে থাকাই বড় কঠিন হয়ে উঠেছে চাঁদের কনার এখন। বয়স দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। ভারী হয়ে যাচ্ছে তার দেহ। হাঁতের উপর ভর দিয়ে হাঁটতেও এখন হাঁপিয়ে যাই। আগের মতো একা একা আর পথ চলতে পারিনা। বুঝতে পারছি, দিন দিন আরো বেশী অসহায় হয়ে যাচ্ছি আমি। কিন্তু আমারও তো বাঁচতে ইচ্ছে করে, আমারও ইচ্ছে করে কেউ আমায় ভালোবাসুক; সারাজীবন আপন করে রাখুক। কিন্তু আমাকে কেউ কেন ভালোবাসবে ? যদি আমার কোন অর্থ-সম্পদই না থাকে ? সবার জীবনে সত্যিকারের ভালোবাসা ধরা দেয়না। কিন্তু ৩১টি বছর পেরিয়ে, যখন আমি চরম হতাশায় ডুবে যাচ্ছিলাম; বেঁচে থাকার সব আশাই হারিয়ে ফেলছিলাম ঠিক তখনই কোমল একটি সরল হৃদয় আমার পাশে অনুপ্রেরণা যোগাতে লাগলো। আর সে হয়ে উঠলো আমার জীবনে ভালোবাসার আশ্রয় তার নাম রিপন।
তিনি বলেন,ধীরে ধীরে দেহটা ভারী হয়ে যাচ্ছে, বাইরে চলতে গেলে অন্যের সাহায্য লাগে। তাই কোন উপায় না পেয়ে ভালোবাসার মানুষটিকে ১০ জানুয়ারিতে পারিবারিক ভাবেই বিয়ে করেছি। কিন্তু সে আমার বয়সে অনেক ছোট, মাত্র ইন্টারে পড়ে। তার কাজ করার মতো বয়স বা যোগ্যতা কোনটাই নেই। তাই আমরা দুজন মানুষই ভীষণ অসহায় জীবন-যাপন করছি। তার পরিবারও খুব গরীব, তাই বিয়ের পর আমাদের সমস্ত দায়িত্ব তারা ছেড়ে দিয়েছে। আমরা দুজনই আমার বাবার বাড়ি থাকি। বাবা অসুস্থ, সে কোন ভাবে মারা গেলে আমাদের দুজনকে রাস্তায় নামতে হবে। এখন আমাদের বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় আর্থিক সচ্ছলতা। খেয়ে না খেয়ে হয়তো কোন রকমে বেঁচে থাকা যায়। কিন্তু আশ্রয়হীন টিকে থাকা যায়না। তাই জমি কিনে আমাদের একটা বাড়ি বানাতে হবে আর বেঁচে থাকার জন্য কোন ব্যবসা/কাজ শুরু করতে হবে। কিন্তু আমরা টাকা পাবো কোথায় ? তাই আমার বর আছে, ঘর নেই, যোগ্যতা আছে, চাকরি নেই, শান্তি আছে, খাবার নেই, ভালোবাসা আছে, ভবিষৎত নেই।
তিনি আরো জানান, আমি আমার ভালোবাসার মানুষ নিয়ে ভীষন খুশী আছি। কিন্তু ভয়তো আমার অন্য খানে। আমি বয়সে বড়, হাঁটতে পারিনা, চাকরি করিনা, বাবার সম্পদ নেই, আমার জমানো কোন অর্থ নেই। তাহলে কিভাবে চলবে আমাদের জীবন ? কিন্তু জীবনের শেষদিনটা পর্যন্ত আমরা এক অপরের ভালোবাসা নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই। সবাই বলে অভাব যখন দরজা দিয়ে ডোকে, ভালোবাসা তখন জানালা দিয়ে পালায়। কিন্তু আমরা চাইনা আমাদের এই অসহায় জীবনে আর কোন কষ্টের ইতিহাস ঘটুক। চাকরির জন্য তো অনেক যুদ্ধ করেছি, কোন লাভ হয়নি। তাই এবার চাকরি নয়, বিশ্ব ভালোবাসার দিনে নিজের ভালোবাসার জন্যে যুদ্ধে নেমেছি। দেখা যাক, সবার ভালোবাসা পেলে নিশ্চয়ই আমাদের জীবনটা সুখী-সুন্দর হবে। বাকিটা আল্লাহ্ ভরসা।
চাঁদের কনা আরো বলেন, মানুষের হাজার হাজার কোটি টাকা আছে, যা তাদের তেমন কোন কাজে লাগেনা। কেউ কেউ নিজের শখের বসে, লাখ টাকার কুকুর পোষে। আর কারো কারো তো মাসিক হাত খরচ ও এত বেশী যে, তাদের একদিনের খরচ দিয়ে আমাদের পুরো মাসটা চলে যেতে পারে। অথচ এই টাকার জন্য আজ আমাদের জীবন কতটা ভয়াবহ কঠিন হয়ে উঠেছে। কিন্তু আমরা এই কঠিন জীবনের অবসান চাই, আর্থিক কষ্টের মুক্তি চাই। তাই আমরা সকল শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছে আর্থিক সহযোগীতা চাই। আমরা ১৪ থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করবো। আপনারা চাইলে সরাসরি আমাদের সাথে দেখা করতে পারেন বা ফোনে যোগাযোগ করতে পারেন। দয়াকরে আমাদের জীবন/ভালোবাসা বাঁচান। তাদের সাহায্যের জন্য.. মাহবুবা হক : ডাচ্ বাংলা ব্যাংক -৭০১-৭৪১- ০৮৭৩৪২৯, বিকাশ নং – ০১৭১৭-৫৩০৬৯৩,রকেট – ০১৭১১-৩৮৫৯৬৯৬। যোগাযোগ.. রিপন/চাঁদের কনা ০১৭১১-৩৮৫৯৬৯, ০১৭১৭-৫৩০৬৯৩
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd