সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৭:১৩ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২০
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : ঢাকায় লাসভেগাস স্টাইলে ক্যাসিনোর সাম্রাজ্য বানিয়ে ফেলা বা মাসের পর মাস ফাইভ স্টার হোটেলের প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুট বুক করে রাখার ঘটনা শুধু নিউজফিডে নয়, আমাদের মনোজগতেও তোলপাড় তোলে। এইসব আমরা সিনেমায় দেখে অভ্যস্ত। বাস্তবে এমনটা হতে পারে, এটাই আমাদের ভাবনার বাইরে। পুলিশ বা র্যাব যখন এইসব আবিষ্কার করে, তখন আমরা অবিশ্বাসে হইচই করে উঠি। কেউ কেউ হয়তো আফসোসও করেন, হায়, এত কাছে এত বিনোদন, আমরা টেরই পেলাম না! তবে আমার একটা প্রশ্ন, র্যাব বা পুলিশের অভিযানের আগে আমরা কেন টেরই পাই না, আমাদের আশেপাশেই রয়েছে এমনসব চরিত্র, ঘটছে এমন সিনেমাটিক ঘটনা। এবং এইগুলো এফডিসির মত শ্যুটিং নয়, সত্যিকারের। যুবলীগ নেতা খালেদ ভুইয়াকে গ্রেপ্তারের পর যুবলীগের তখনকার চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেছিলেন, এতদিন কোথায় ছিলেন? সেই প্রশ্ন করে শেষ পর্যন্ত চাকরি হারিয়েছিলেন যুবলীগের দাপুটে চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী। তার প্রশ্নের ধরনটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে চ্যালেঞ্জ করার, তবে প্রশ্নটা অযৌক্তিক ছিল না। আমারও একই প্রশ্ন, এতদিন কোথায় ছিলেন? পাপিয়া বা সম্রাট তো মাটি ফুঁড়ে উদয় হয়নি। এই সমাজেই আমাদের কারো না কারো চোখের সামনেই তারা বেড়ে উঠেছে। এখন আমার প্রশ্ন হলো পাপিয়া বা সম্রাট আর নেই? ক্যাসিনো বা ফাইভ স্টার উপাখ্যান কি শেষ হয়ে গেছে?
নাকি আমাদের চারপাশে এমন আরো অনেকে আছেন। আমরা চিনতে পারছি না। আবার র্যাব কাউকে গ্রেপ্তার করে ব্রিফ করলে আমরা ঝাঁপিয়ে পড়বো? আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয়বার সরকার গঠন করেছে। এটা ঠিক, ক্ষমতাসীনদের কারো না কারো পৃষ্ঠপোষকতায়ই সম্রাট বা পাপিয়ার মত মাফিয়ারা গড়ে উঠেছে, বেড়ে উঠেছে। বেড়ে ওঠার সিঁড়ি হিসেবে তারা সরকারি দলের পদ-পদবি বা ব্যক্তিগত সম্পর্ককে ব্যবহার করেছে। সম্রাট নিশ্চয়ই হুট করে রাজধানীর আন্ডরওয়ার্ল্ডের ডন বনে যায়নি। পাপিয়া নিশ্চয়ই নরসিংদী থেকে এসেই হোটেল ওয়েস্টিনে উঠে যায়নি। তারা তো দলের নেতা, পুলিশ, প্রশাসন এবং সাংবাদিকদের চোখের সামনেই বেড়ে উঠেছে। এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানান প্রভাবশালীদের সাথে ছবি দেখে বোঝা যায় তাদের সামাজিক সার্কেল কারা, কাদের সাথে তাদের চলাফেরা। যাদের সাথে তাদের ছবি আছে, তাদের কাউকে আমি না জেনে দায়ী করতে রাজি নই। সামাজিক কোনো আয়োজনে প্রভাবশালী কেউ গেলে অনেকেই তাদের সাথে ছবি তুলতে চান। বিশেষ করে রাজনীতিবিদদের হাসিমুখে ছবি তুলতেও হয়। কিছু কিছু মানুষ সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়েই প্রভাবশালীদের সাথে ছবি তোলেন। পরে সেই ছবি অপকর্মের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করবেন বলে। কিন্তু তাদের পরিচিত মহল, সংগঠন, সাংবাদিক কারো চোখে তাদের আঙ্গুল ফুলে বটগাছ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে ধরা পড়বে না, কারো মনে কোনো প্রশ্ন উঠবে না, এটা কীভাবে সম্ভব? নাকি আমরা জেনে চুপ করে ছিলাম? এখন কেচো খুড়তে গিয়ে অ্যানাকোন্ডা বেরিয়ে আসছে।
অবশ্যই দলের, সরকারের বা প্রশাসনের কারো না কারো পৃষ্ঠপোষকতায় পাপিয়া-সম্রাটরা বেড়ে উঠেছে। তাই দলকে অবশ্যই দায় নিতে হবে। তবে এত বড় দলের পক্ষে সারাদেশের সব নেতাকর্মীর খোঁজখবর রাখা সম্ভব নয়। আসল সমস্যা সিস্টেমে, সঙ্কটটা সুশাসনের। অন্যায় করে পার পাওয়া যাবে না, এটা জানলে মানুষ অন্যায় কম করবে। কিন্তু যখন জানবে অন্যায় করলে কিছু হবে না, ব্যাংকের টাকা লুট করে কানাডায় আরাম-আয়েশে থাকা যাবে; তখন কাউকেই আটকানো কঠিন। এই নিশ্চিন্তিই পাপিয়া-সম্রাটদের এমন দানব করে তুলেছে। তারা কেউ কিন্তু গোপনে অপকর্ম করেনি বা নিজেদের আড়াল করে রাখেনি। সম্রাট তো ঢাকায়
যুবলীগের প্রধান অর্থ ও কর্মী সরবরাহদাতা ছিল। যারা নিয়েছেন, তাদের মনে কোনোদিন প্রশ্ন ওঠেনি, কোত্থেকে সম্রাট এত টাকা পাচ্ছেন। পাপিয়াও কিন্তু ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে মাসের পর মাস ফাইভ স্টার হোটেলের প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুটে থেকে, পারসোনাল বার বার বানিয়ে, সুইমিং পুলে জলকেলি করে তার রঙমহল চালিয়েছে। কেউ দেখেনি?
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের খুব গর্বের সাথেই বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাপিয়ার বিষয়ে জানতেন। তার নির্দেশেই পাপিয়াকে গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। এর আগে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযানও শেখ হাসিনার নির্দেশেই শুরু হয়েছিল। এটা খুবই আনন্দের খবর যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তীক্ষ্ণ নজরদারির বাইরে কেউ নন। এমনকি তিনি দলের ভেতরের প্রভাবশালী নেতাদেরও কোনো ছাড় দিচ্ছেন না। অনেকে বলছেন, এই শুদ্ধি অভিযানে দলের ভাবর্মূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। কিন্তু আমার বিবেচনায়, এই অভিযান দলের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল করছে। কার্পেটের নিচে ময়লা রাখলে যেমন ঘর পরিস্কতার হয়না, তেমনি ভাবমূর্তির দোহাই দিয়ে এই কুলাঙ্গারদের রাখলে দল আরো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে অপরাধীদের ধরতে প্রধানমন্ত্রীরন নির্দেশ লাগবে কেন, এটা কিছুতেই আমার মাথায় ঢোকে না। কেউ অপরাধ করলে তাকে ধরা হবে, এটা আইনের স্বাভাবিক গতি। সব নির্দেশনা যদি প্রধানমন্ত্রীকেই দিতে হয়, তাহলে র্যাব-পুলিশ-স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কী দরকার?
এবার একটু আত্মসমালোচনা করি। র্যাব বা পুলিশ যখন কাউকে ধরে দেয়, তখন আমরা সবাই মিলে তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ি। ওয়ান-ইলাভেনের সময়ও আমরা অনেক তারকা অপরাধীর দেখা পেয়েছি, যেটা আমরা আগে টের পাইনি। নিজেরা অনুসন্ধান করে কিছু বের করার ব্যাপারে আমাদের সাংবাদিকতার ঘাটতিটা বেশ বড়। এই গ্লানিটা আমি টের পেয়েছি, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে যখন বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের উদ্যোগ নিলো, তখন। বঙ্গবন্ধু হত্যার এমন সব সত্য সামনে এলো; যা আমাদের চমকে দিয়েছে। জানা গেল, ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকান্ডের প্রত্যক্ষদর্শীও আছেন। অথচ মাঝের ২১ বছর আমরা কেউ এই সত্যগুলোর খোঁজ জনগণকে জানাতে পারিনি। ওয়ান-ইলাভেনের সময়ও র্যাব-পুলিশ বা গোয়েন্দা সংস্থা যা সরবরাহ করেছে, কোনোরকম যাচাই বাছাই ছাড়াই আমরা তা প্রচার করেছি। কেউ তা স্বীকার করেননি। কিন্তু ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম এটিএন নিউজের এক টক শোতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গোয়েন্দা সংস্থার সরবরাহ করা তথ্য ‘ইন্ডিপেন্ডেটলি ভেরিফাই না করেই ছাপিয়েছি’ বলে শত মামলার আসামী হয়েছিলেন। কিন্তু ভেরিফাই না করেই সংবাদ ছাপানোর এই প্রবণতা কিন্তু এখনও বন্ধ হয়নি। র্যাব-পুলিশ যা বলছে, আমরা কোনো ভেরিফাই ছাড়াই তা প্রচার করছি; হোক সেটা পাপিয়া বা সম্রাটের বিরুদ্ধে, হোক সেটা ক্রসফায়ারের আষাঢ়ে গল্প।
একটা একাডেমিক বিতর্কের কথা বলি। অভিযুক্ত হওয়ার পরেই আমরা যেভাবে কারো ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ি তা কতটা ঠিক? এমনও তো হতে পারে র্যাব-পুলিষের দাবি মিথ্যা। আদালতে তো তারা নির্দোষও প্রমাণিত হতে পারেন। এটা্র আবার একটা পাল্টা যুক্তিও আছে এবং পাল্টা যুক্তিটাই বেশি জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য। আমরা যদি আদালতের রায় পর্যন্ত অপেক্ষা করি, তাহলে তাদের অপরাধ ঢাকা পড়ে যাবে। ততদিনে মানুষ ভুলে যাবে। আর বাংলাদেশে মামলার যে দীর্ঘসূত্রতা, তাতে ন্যায়বিচার নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। তাছাড়া আমাদের বিচার ব্যবস্থার ত্রুটির কারণে, সাক্ষির অভাবে অনেক অপরাধীও পার পেয়ে যায়। বিচার বিভাগের ওপর এই আস্থাহীনতার কারণেই বাংলাদেশে ক্রসফায়ার জনপ্রিয়, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গণমাধ্যম আর সা্মাজিক যোগাযোগ মা্ধ্যমের তোলপাড়েই মানুষের প্রবল আগ্রহ। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ সাক্ষ্য দেবে না, তাই মানুষ ধরার পরই তাকে ক্রসফায়ারের নামে খুন করে ফেলাটা সমর্থন করে। এমনকি কারো কারো ক্রসফায়ারের দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রবল জনমতও গড়ে উঠতে দেখেছি। অভিযুক্তদের ব্যাপারেও জনমনে একই যুক্তি কাজ করে। শেষ পর্যন্ত এদের বিচার হবে কিনা, হলে কী শাস্তি হবে; এসব নিয়ে সংশয় থাকে বলেই গণমাধ্যম আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলোধুনা করাকে অনেকে একধরনের বিচারই মনে করেন। সমস্যা হলো, বিচারের আগেই আমরা কারো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর ফেলছি, কাউকে সামাজিকভাবে ধ্বংস করে দিচ্ছি। কারো বিরুদ্ধে লিখতে হলে বিচারের রায় পর্যন্ত অপেক্ষা করার পক্ষে আমি নই। তবে শুধু র্যাব-পুলিশের প্রেস রিলিজ না ছাপিয়ে আমরা যদি নিজেরা অনুসন্ধান করে বিষয়টির সত্যাসত্য যাচাই করে নিতে পারতাম, তাহলে ভেতরের খচখচানিটা অনেক কমতো। কবে যে আমরা এই ভেরিফাই ছাড়া নিউজ ছাপানো আর প্রেস রিলিজ সাংবাদিকতা থেকে বেরুতে পারবো, কে জানে৷
অভিযুক্ত কারো বিরুদ্ধে গণমাধ্যম বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপারেরও আবার দুটি দিক আছে। আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম না থাকলে বাংলাদেশে অনেক অন্যায়ের বিচার হতো না। ফেসবুকে ভিডিও ভাইরাল হলে, দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠলেই বিচার পাওয়ার আশা করতে পারে মানুষ। এমন অসংখ্যা উদাহরণ আছে। ভিডিও ভাইরাল না হলে সিলেটের রাজন বা ফেনীর নুসরাত বিচার পেতেন কিনা আমার সন্দেহ আছে। আদর্শ পরিস্থিতিতে আমরা বলি আদালতের চোখ বাধা। কিন্তু বাস্তবতা হলো বিচারকরাও এই সমাজেরই মানুষ। সমাজে ওঠা প্রতিবাদের ঢেউ লাগে তাদের গায়েও। সেই প্রবল প্রতিবাদ কি তাদের প্রভাবিত করে না? আমরা তো চাই প্রভাবিত করুক, দ্রুত বিচার হোক। কিন্তু এই প্রভাবিত হওয়া্রও আবার দুটি দিক আছে। বিচারক প্রভাবিত হলে অন্যায়ের দ্রুত বিচার হবে। আবার প্রবল জনমতে প্রভাবিত হয়ে বিচারক যদি নির্দোষ কাউকে সাজা দিয়ে দেন! শঙ্কাটা একেবারে অমূলক নয়। কোনো একটা কিছু ঘটলে আমরা এমন প্রবলভাবে স্রোতে গা ভাসাই, উল্টো যুক্তি শুনতেই চাই না। বিচার ব্যবস্থার প্রতি প্রবল অনাস্থার কারণেই আমরা জনতার একটা আদালত বানিয়ে নেই। আবার অভিযুক্ত যদি নারী হন, আর তাতে যদি রসালো উপাদান থাকে, তাহলে প্রতিবাদের স্রোত সুনামি ডেকে আনে। পাপিায়ার সঙ্গে কিন্তু তার স্বামী সুমনকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কয়জন তার স্বামীর নাম জানেন?
টিউিনিশিয়ার প্রেসিডেন্ট জিন এল আবিদিন বেন আলী ১৯৮৭ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এই সময় তিনি এমন আইন তৈরি করেছিলেন যার কারণে তার পারিবারিক ব্যবসা আছে এমন খাতগুলোতে বিদেশিরা বিনিয়োগের অনুমতি পেতেন। ফলে একবার ম্যাকডোনাল্ডসকে ব্যবসার অনুমতি দেয়া হলেও প্রেসিডেন্টের পারিবারিক ব্যবসার সঙ্গে সম্পর্ক না থাকায় তা বাতিল করে দেয়া হয়৷
আরেকটা বিষয় আমাকে কৌতুহলী করে। যে অপরাধে আমরা কারো সাজা চাই, আদালতে সেই অপরাধের বিচার হয় তো? যেমন ধরুন পাপিয়া। তার কোন বিষয়টি আপনাকে সবচেয়ে আলোড়িত করেছে? নিশ্চয়ই ফাইভ স্টার হোটেলের প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুট বুক করে গ্রাম থেকে আনা অসহায় তরুণীদের দিয়ে অনৈতিক কাজ করানো, ফাইভ স্টার হোটেলে ব্যক্তিগতক বার বানানো, সুইমিং পুলে জলকেলি ইত্যাদি। কিন্তু পাপিয়ার বিরুদ্ধে আপাতত মামলা হয়েছে তিনটি- জাল টাকা, অস্ত্র এবং মাদক৷
মানি লন্ডারিং এর একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে শুনেছি। কিন্তু তার যে অপরাধ আমাদের অভ্যস্ত মনোজগতে তোলপাড় তুলেছে, আদালত পর্যন্ত তা না যাওয়ার আশঙ্কাই বেশি। যেমন সম্রাটের বিরুদ্ধে আপনার মূল অভিযোগ কী? তার ক্যাসিনসো সাম্রাজ্য, প্রতিদিন কোটি কোটির টাকার চাঁদাবাজি। তার বিরুদ্ধে কিন্তু এই অভিযোগ কোনো মামলা হয়নি। মামলা হয়েছে অস্ত্র, মাদক আর বন্যপ্রাণী আইনে। সম্রাটের বাসায় একটি হরিণের চামড়া ছিল বা কয়েক বোতল মদ ছিল; এটা নিয়ে কিন্তু আপনার আমার কারোই মাথ্যব্যথা ছিল না। আর আমরা জানি, পুলিশ চাইলে যে কারো বিরুদ্ধেই অস্ত্র, মাদক আর বন্যপ্রাণী আইনের মামলা করতে পারে। কারণ কাউকে ধরার সিদ্ধান্ত হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পুলিশ যাওয়ার সময় অস্ত্র বা মাদক নিয়ে যায় বলে শুনেছি৷
আমরা চাই সকল অপরাধী আইনের আওতায় আসুক। সবাই তার অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী সাজা পাক। আইন তার স্বাভাবিক গতিতে চলুক। অপরাধীকে ধরতে যেন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ না লাগে। সাক্ষিরা যেন নির্ভয়ে আদালতে গিয়ে অপরাধীর অপরাধ প্রমাণ করতে পারে। আইনের শাসন আর ন্যায়বিচার যেন নিশ্চিত হয়, প্রতিটি মানুষের ক্ষেত্রেই। আইনের শাসন থাকা একটি দেশে এই চাওয়া কি খুব বেশি? সূত্র: ডয়েচে ভেলে
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd