বেড়েছে অপরাধ, বিতর্কে ওসি মাহমুদুল ইসলাম

প্রকাশিত: ১:১৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৬, ২০২০

বেড়েছে অপরাধ, বিতর্কে ওসি মাহমুদুল ইসলাম

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সাম্প্রতিক সময়ে ত্রিশাল থানায় বেড়েছে ধর্ষণ, মারামারি, খুন, রাহাজানি, ইভটিজিং , মাদক জুয়া হাউজির আস্তানা এবং কাউন্টার (মিথ্যা) মামলা দায়েরের সংখ্যা। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল ইসলাম এই থানায় যোগদান করার পর থেকেই তার দালাল নির্ভরতায় এসব হচ্ছে । এরজন্য এই ওসিকেই দায়ী করছেন সচেতন মহল। জামালপুর আশিক মাহমুদ কলেজের ছাত্রদলের ভিপি ছিলেন ওসি মাহমুদুল ইসলাম। এখন আ’লীগ সমর্থকরাই তার বড় শত্রু । কাউকে আটক করা আবার ছাড়ানোর জন্য বাঁধাধরা মোটা অংকের টাকার টার্গেট পূরণ না হওয়া পর্যন্ত নানাভাবে হয়রানি-হেনস্তা চলতেই থাকে এথানায়। অধিকাংশ ঘটনারই রহস্য উদঘাটনের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয় না, প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে তাদের নামে চার্জশিট দেওয়ারও বালাই নেই। আছে শুধু অভিযোগকে পুঁজি করে মোটা অংকের টাকা আদায়ের ফন্দি-ফিকির।
ত্রিশালের আগে তিনি, ময়মনসিংহ কোতয়ালী মডেল থানার ওসির দায়িত্ব পালন করেন । সেসময়ও তিনি গড়ে তোলেন দালাল সিন্ডিকেট। ধরা-ছাড়া, মামলাবাজি, চাঁদাবাজির ধুম বাণিজ্য ওসির অপরাধ-অপকর্ম ছিল টক অফ দ্যা টাউন । ত্রিশালের সর্বসাধারণের ‘আতঙ্ক’ হয়ে উঠেছেন থানার ওসি মাহমুদুল ইসলাম । তার শেল্টারেই চলছে গ্রেফতার বাণিজ্য, মাদক ব্যবসায়ীদের কার্যক্রম, জমি- জমার দরবার শালিস । যদিও স্বশরিরে তিনি থানায় বেশির ভাগ সময়ই থাকেন অনুপস্থিত। মোবাইল ও দালালদের মাধ্যমেই নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন । সন্ত্রাসীদের মদদ দেন ওসি । অভিযোগ উঠেছে, বর্তমান সময়ে ত্রিশাল থানা পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় আস্তানা গড়ে উঠেছে জঙ্গি সংগঠন পরিচারনাকারীদের । একটানা তার নানান কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন ত্রিশালের মানুষ ।
এক সময়ের ছাত্রদলের ভিপি থাকা ওসি মাহমুদুল ইসলাম কোন অদৃশ্য শক্তির ইশারায় ? গুরুত্বপূর্ণ থানায় ওসি হিসাবে পোস্টিং নেন তা নিয়েও আলোচনা- সমালোচনা হচ্ছে ।
ময়মনসিংহ- ঢাকা মহাসড়ক, ফুটপাত, ভাঙ্গারি ব্যবসাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে থানা পুলিশের নামে ওঠে মাসোয়ারা। ওসির সাথে মাদক কারবারি, ছিনতাইকারী, ডাকাত, দুর্ধর্ষ ও মামলার আসামিসহ অপরাধীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে বলেও নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে । যদিও ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পান না। ইতিপূর্বে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও শাস্তির পরিবর্তে তাকে পুরস্কৃত করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতনদের মাধ্যমে। করোনার এই সময়ে জুয়া, মাদক বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্ষুব্ধ ত্রিশালের জনপ্রতিনিধিরাও । উপজেলার সর্বত্র মাদক সেবন ও ব্যবসার প্রসার ঘটছে। মাদক সেবন ও ব্যবসা আগে কিছুটা গোপনে হলেও এখন প্রকাশ্যে হচ্ছে। অনেকেই এখন নতুন করে মাদকের ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছেন। এ নিয়ে সবাই ভয়ের মধ্যে আছেন। কয়েক মাস ধরে মাদকবিরোধী অভিযান নেই বললেই চলে । মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে ।
জানা গেছে, ওসির নিয়ন্ত্রিত দালাল চক্র ত্রিশাল থানা নিয়ন্ত্রণ করে, থানা চলে দালালের মাধ্যমে। দালালের কথায় ওসি আসামি ধরে-ছাড়ে। এতে ভালো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে মামলা দিতে গেলে নথিভুক্ত হয় না। আর মিথ্যা মামলা হলে নথিভুক্ত হতে সময় লাগে না। পরোয়ানাভুক্ত বিভিন্ন মামলার আসামি গ্রেফতার অভিযান অনেক কমে গেছে । যেকারণে ওয়ান্টেভুক্ত আসামিরা ঘুরে বেড়াচ্ছে । তারা বাদী পক্ষ , স্বাক্ষী এবং সাধারণ মানুষজনকে ভয়ভীতিও দেখায় ।
বিষয়গুলি ওসিকে অবহিত করা হলেও আইনানুগ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না । পলাতক আসামি গ্রেফতারে পুলিশের গড়িমসির বিষয়টি দু:খজনক বলেও অনেকে জানিয়েছেন ।
উপরোক্ত অভিযোগ অস্বীকার করে ওসি মাহমুদুল ইসলাম বলেন, এসব মিথ্যা।আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত ।
জানাগেছে,ওসির বিভিন্ন অনিয়ম ও গ্রেফতার বানিজ্যের কারনে ত্রিশালের মাননীয় সংসদ সদস্য আলহাজ রুহুল আমিন মাদানী তার বদলি বিষয়ে একটি ডিও লেটার দাখিল করেন। ইতি মধ্যে ওসি এমপির মহোদয়ের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে সমালোচনায় আসছেন? অভিযোগ আছে কয়েক ধষন মামলার আসামী আটক না করে শালিশের নামে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..