ইয়াবা নিয়ন্ত্রক এসপি মাসুুদ, জড়িত ওসি প্রদীপ, রণজিৎ ও ফরিদ !

প্রকাশিত: ১২:৪৯ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ৩১, ২০২০

ইয়াবা নিয়ন্ত্রক এসপি মাসুুদ, জড়িত ওসি প্রদীপ, রণজিৎ ও ফরিদ !

খায়রুল আলম রফিক :: কক্সবাজারের জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ কক্সবাজারে ইয়াবার নিয়ন্ত্রক । জেলাবাসী তাকে রংবাজ মাসুদ হিসাবেও চেনেন । মাদক ব্যবসা পরিচালনা, মাদক ব্যবসায়ীদের পৃষ্ঠপোষকতা, তার নিয়ন্ত্রিত ওসি ও পুলিশ কর্মকর্তারা মাদক মামলার ভয় দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে ক্রসফায়ার ও হয়রানির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এসপি মাসুদের নিয়ন্ত্রণে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাসের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছিল ৩২ সদস্যের শক্তিশালী একটি বাহিনী । এই বাহিনীতে ৬ জন এসআই, ৫ জন এএসআই ও তিন জন কনস্টেবল নিয়ে গঠিত । এই বাহিনী বিশাল গাড়ি বহরে যাতায়াত এবং মাদক পাচার করত ।

কক্সবাজার সদর থানার তৎকালীন ওসি ফরিদ উদ্দিন , টেকনাফ থানার সাবেক ও চাঁদপুরের ডিবির ওসি রণজিৎ কুমার বড়ুয়া মাদকের সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন । মিয়ানমার থেকে প্রবাহিত নাফ নদী হয়ে বাংলাদেশে ঢুকে ইয়াবা । মাদক পাচারের সাথে ওসি প্রদীপের মত আরো অনেক ওসি জড়িত । উখিয়ার ওসি মর্জিনার নামও জানা গেছে । যদিও সকল কিছুর নেপথ্যে এসপি এবিএম মাসুদ । কোটি কোটি টাকার ইয়াবা ব্যবসা হয়েছে হাত ধরে । তাদের গাড়ির বহর ছিল মন্ত্রী স্টাইলে । কক্সবাজার, টেকনাফসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় সরেজমিনে এলাকাবাসীদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহার হত্যাকান্ডের পর আলোচনায় আসে ওসি প্রদীপ দাশের অন্ধকার জগতের তথ্য। ক্রসফায়ার ‘বাণিজ্য’ ও মাদক ব্যবসায় মতদ দেয়ার মাধ্যমে টাকা কামানোর নেশায় পরিণত হয়েছিল প্রদীপের। কিন্তু তিনি কী একাই এই কাজ করেছেন? না। তার সঙ্গে ছিলেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনও। গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধান ও স্থানীয়দের ভাষ্যে উঠে এসেছে এসপি মাসুদের নানা অনিয়মের তথ্য। মাদকবিরোধী অভিযানের নামে দুর্নীতি, টাকার বিনিময়ে মাদক ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেয়া, বড় মাদক ব্যবসায়ীদের না ধরে চুনোপুঁটিদের ধরা, ক্রসফায়ার বাণিজ্য ছিল ইয়াবা ব্যবসার পাশাপাশি তাদের কর্মকান্ড ।

নিজে ইয়াবার নিয়ন্ত্রক হয়েও এসপি মাসুদ সাধারণ মানুষকে ইয়াবার নামে হয়রানি, মিথ্যা মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে অর্থ আদায় না দিলে ক্রসফায়ারে দিত । নাফ নদী দিয়ে এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে একেকটি চালানে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশ তথা কক্সবাজারে বিশ ত্রিশ লাখ পর্যন্ত ইয়াবা পাচার হয়ে প্রতিদিন এসেছে ।

মিয়ানমারের জলসীমার কাছে গিয়ে ওদের দেশের নৌযান থেকে নাফ নদী হয়ে কক্সবাজারে পাচার করে আনা হয় ইয়াবা । মিয়ানমার থেকে ইয়াবা পাচার হয়ে আসার প্রধান রুট কক্সবাজারের টেকনাফ এবং উখিয়া । এই রুটের নিয়ন্ত্রক এসপি মাসুদ বলে স্থানীয়রা মনে করেন । মাদক ব্যবসায় পুলিশের গাড়ি ব্যবহার করাও অভিযোগ আছে। সাবেক ওসি প্রদীপ, সাবেক ওসি রণজিৎ বড়ুয়া , অপরাপর এসআই, এএসআই, পুলিশ সদস্য ও তাদের সহযোগীরা নির্বিঘে ইয়াবা ব্যবসা পরিচালনা করেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে ।

টেকনাফে সরেজমিনে গিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের সোর্সপ্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, প্রদীপ বাহিনী ইয়াবা পাচার করত কুমিল্লা, ব্রাহ্মনবাড়িয়া, ময়মনসিংহ , ঢাকা আশেপাশেসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে । তারা ব্যাপকহারে ইয়াবা পাচার করত । দেশের বিভিন্ন স্থানে কয়েকজন পুলিশের সদস্য মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত তাদের আটকও করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..