সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১:৪৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১, ২০২০
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : আসন্ন শীতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে পারে। বাড়তে পারে মৃত্যুর সংখ্যাও। এই শঙ্কায় সরকার ইতোমধ্যে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছে। চালু করেছে ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ কর্মসূচিও। মাস্ক পরা নিশ্চিতে চলছে দেশজুড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
তবুও মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। পাচ্ছে ভয়ও করোনার ভয়াবহতায়। তবে সিলেটে বাড়ছে করোনা রোগী। বাড়ছে মৃত্যুও। সিলেটের করোনা চিকিৎসার একমাত্র বিশেষায়িত হাসপাতাল শামসুদ্দিনেও শীতের শুরুতেই রোগী বাড়তেই শুরু করছে।
সম্প্রতি সিলেটের বিশেষায়িত এ হাসপাতালে করোনা রোগী বাড়তে শুরু করেছে। তবে করোনা চিকিৎসার এই হাসপাতালে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। মিলছে না কাঙ্ক্ষিত সেবা। করোনার ভয়কে পাশ কাটিয়ে বিশেষায়িত এ হাসপাতালে রোগীর আত্মীয়-স্বজনদের আনাগোনা বেড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহিদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা চলছে ঢিলেঢালাভাবে। ডাক্তার, নার্সরাও দায়সারাভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। মিলছে না প্রয়োজনীয় ঔষধও। এজন্য বেশির রোগীকে হাসপাতালের বাইরে থেকে ঔষধ কিনে আনতে হচ্ছে। এছাড়াও জ্বর মাপার থার্মোমিটার, প্রেশার মাপার মেশিনও বিকল অবস্থায় রয়েছে।
এর বাইরে প্রত্যক করোনা রোগীর সাথে হাসপাতালের ভিতরে তিন-চারজন করে আত্মীয়-স্বজন অবস্থান করছেন। দিনভর মানুষ যে-যার ইচ্ছা মতো হাসপাতালে প্রবেশ করছেন। এতে করে এসব মানুষের কাছ থেকে করোনা ছড়াতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছেন সচেতন মানুষ। এদিকে রোগীদের সাথে থাকা লোকজন ও দর্শনার্থীদের নিয়ে চিন্তিত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও।
এ ব্যপারে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে রোগীর সাথের লোকজন ও দর্শনার্থীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি আমিও লক্ষ্য করেছি। এজন্য আমি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আগের মতো কঠোর হতে নির্দেশনা দিয়েছি। যাতে কোনোভাবেই হাসপাতালে অতিরিক্ত লোকজন থাকতে না পারেন।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালের জ্বর মাপার থার্মোমিটার, প্রেশার মাপার মেশিন বিকল হবার কথা নয়। কারণ এগুলো কয়েকটা করে দেয়া আছে। তারপরও আমি খোঁজ-খবর নিয়ে দেখবো। যদি কোনো কিছুর ঘাটতি থাকে তাহলে সেগুলো পূরণ করা হবে। কারণ আমাদের কাছে সবকিছু পর্যাপ্ত আছে।
সিলেট বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য)’র কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিলেট বিভাগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১২৬৫৩ জন আর মারা গিয়েছিলেন ২১৮ জন এবং সুস্থ হয়েছিলেন ১০৪৫১ জন।
আর ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ১৩ হাজার ৬৪২ জন, মৃত্যু বেড়ে ২৩০ আর সুস্থ হয়েছিলেন ১২ হাজার ১৫৫ জন। অন্যদিকে সবশেষ নভেম্বর মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত মৃত্যু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪৪ জনে, আক্রান্ত ১৪ হাজার ৬১৬ জন আর সুস্থ হয়েছেন ১৩ হাজার ৪০২ জন।
অর্থাৎ সিলেট বিভাগে গত দুমাসের আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হার বিবেচনা করলে দেখা যায়, অক্টোবর মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৮৯ জন, মারা গেছেন ১২ জন আর সুস্থ হয়েছেন ১৭০৪ জন। আর নভেম্বর মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৭৪ জন, মারা গেছেন ১৪ জন আর সুস্থ হয়েছেন ১২৪৭ জন।
অন্যদিকে নভেম্বরের প্রথম ১৫ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৫১ জন, মারা গেছেন ৬ জন আর সুস্থ হয়েছেন ৫২৩ জন এবং নভেম্বরের শেষ ১৫ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৫২৩, মারা গেছেন ৮ জন আর সুস্থ হয়েছেন ৭২৪ জন।
অর্থাৎ নভেম্বরের শেষ ১৫ দিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যু বেড়েছে। বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, শীত বাড়ার সাথে সাথে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এদিকে শীতে করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে।
শীতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে পারে উল্লেখ করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন-প্রান্তে রোগী কিছুটা বেড়েছে। এমন বাস্তবতায় তিনি সবাইকে আরও সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd