সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:২৩ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ৭, ২০২০
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁদের মধ্যে দুজন মাদ্রাসার শিক্ষক ও দুজন মাদ্রাসার ছাত্র। পুলিশ বলছে, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের বয়ানে উদ্বুদ্ধ হয়ে দুই মাদ্রাসাছাত্র বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর করেছেন।
রাত ২টা ১৬ মিনিটের দিকে পাঞ্জাবি-পায়জামা পরিহিত দুই মাদরাসা ছাত্র পায়ে হেঁটে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যস্থলে আসেন। কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধুর ওই ভাস্কর্যের গা ঘেঁষে থাকা মই বেয়ে উপরে ওঠেন। পিঠে থাকা ব্যাগ থেকে হাতুড়ি বের করে প্রথমে বঙ্গবন্ধুর হাতের উঁচু তর্জনীতে আঘাত করে। হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে প্রথমে হাত ও পরে মুখের অংশে ভাঙচুর করে। প্রায় নয় মিনিট পর একই মই দিয়ে নেমে পায়ে হেঁটে চলে যান তারা। পুলিশ ওই দুই মাদরাসা ছাত্রসহ মোট ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি ড. খ মহিদউদ্দিন এর প্রেস বিফ্রিং থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনের সম্মেলন কক্ষে তিনি এই প্রেস বিফ্রিং করেন।
এসময় তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে প্রথমে দুই ভাই মাদরাসা ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তারা ভিডিও দেখে ভাস্কর্য ভাঙা দুইজনকে চিনতে পারেন। তার দেওয়া তথ্যেও ভিত্তিতে গেল রাতভর অভিযান চালিয়ে ভারত সীমান্তের দৌলতপুরের ফিলিপনগর গোলাবাড়ি গ্রাম থেকে সামছুল আলম এর ছেলে সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদ (২০) ও মিরপুর উপজেলার শিংপুর থেকে সমসের মৃধার ছেলে আবু বক্কর ওরফে মিঠুনকে (১৯) গ্রেপ্তার করে। এরা কুষ্টিয়া শহরের জুগিয়া পশ্চিমপাড়ার ইবনে মাসউদ মাদরাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র।
পরবর্তীতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, একই মাদরাসার দুই শিক্ষক তাদেরকে পালাতে ও সাহস জুগিয়ে সহযোগিতা করেছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে শিক্ষক আল আমিন (২৭) ও ইউসুফ আলীকে (২৬) গ্রেপ্তার করে। আল আমিন মিরপুরের ধুবইল গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে ও ইউসুফ আলী পাবনা জেলার আমিনপুর থানার দিয়াড় বামুন্দি গ্রামের আজিজুল মন্ডলের ছেলে।
ডিআইজি বলেন, ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এই ঘটনায় পুরো দেশ যেমন ব্যথিত হয়েছে আমরাও তাই। এর পেছনে কোনো যোগসূত্র আছে কিনা তা তদন্ত করে বের করা হবে। ইতোমধ্যে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে।
এর আগে শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতের কোনো এক সময় কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে পৌরসভার উদ্যোগে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের মুখ ও হাতের অংশে ভাঙচুর করেন তারা। পরে অভিযান চালিয়ে শনিবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে প্রথমে মাদরাসার দুই শিক্ষক এবং পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রোববার ভোরে ওই দুই ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd