সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১১:০০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৯, ২০২০
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : কুষ্টিয়া জেলার কুমারখামোলী থানার বাশ গ্রামের মো. শহিদুল ইসলাম (৪৭) ২০১৭ সালে ২৩ ডিসেম্বর গ্রামের বাড়ি থেকে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান। মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানার নবগ্রাম মাঠে থেকে ২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর সকালে অজ্ঞাতনামা একজন পুরুষের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরবর্তীতে জানা যায় লাশটি কুষ্টিয়া থেকে নিখোঁজ হওয়া শহিদুল ইসলামের। এই ঘটনার ৩ বছর পরে দুইজন আসামি গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। তারা হলেন- মোসা. রোজিনা বেগম ও তার স্বামী মো. মোমিন।
সিআইডি জানায়, নিহত শহিদুল ইসলামের শ্যালকের স্ত্রী ছিলেন রোজিনা বেগম। এক সময় রোজিনার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কও ছিল নিহত শহীদুলের। পরে বর্তমান স্বামী মোমিনের সঙ্গে মিলে পরিকল্পনা করেই ২০১৭ সালে শহিদুল ইসলামকে হত্যা করেন রোজিনা।
পরিবার ও সিআইডি সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তার রোজিনা শহীদুলের শ্যালকের স্ত্রী। রোজিনার বিয়ের পর থেকে শহীদুল রোজিনার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করে আসছিল। শ্যালকের মৃত্যুর পর শহীদুলের সঙ্গে রোজিনার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু শহীদুলের আর্থিক অনটন এবং তিনি বিবাহিত হওয়ার কারণে এক পর্যায়ে রোজিনা তার সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে মানিকগঞ্জে চলে আসে।
মানিকগঞ্জে এসে আকিজ টেক্সাটাইলে চাকরি নেয় রোজিনা। পরে চাকরির সুবাদে সুপার ভাইজার মোমিনের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় তার এবং বিয়ে করেন তারা। যদিও এ সময় মোমিন বিবাহিত ছিল। শহীদুলের সঙ্গে সম্পর্ক থাকা অবস্থায় রোজিনার সঙ্গে কিছু আর্থিক লেনদেন বিষয় উঠে আসে যা শহীদুল স্থানীয়ভাবে পরে প্রকাশ করছে। সেসব কারণেই বিয়ের পরেও শহীদুল বিভিন্ন সময়ে রোজিনাকে ফোন করত। এক পর্যায়ে রোজিনা তার স্বামী মোমিনকে সব কিছু জানায়। এরপর স্বামী মোমিনের সহায়তায় শহীদুলকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে গলা ও পায়ের রগ কেটে হত্যা করে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শহীদুল নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তার মা মোসা. তমিরুন নেসা বাদী হয়ে গত ২০১৮ সালের ৫ মার্চ কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৩৬৪/৩৪ পেনাল কোড ধারায় একটি সিআর-৫৯/১৮ মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটি থানা পুলিশ, পিবিআই তদন্তের পর সিআইডির কাছে হস্তান্তর করা হয়। সর্বশেষ খুলনা ডিভিশন সিআইডি এ মামলার ২ আসামি রোজিনা ও মোমিনুলকে গ্রেপ্তারসহ মামলার রহস্য উদঘাটন করে। এই বিষয়ে জানতে চাইলে সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মো. জিসান জানান, মামলাটির তদন্তকালীন সময়ে চলতি বছরের ২২ ডিসেম্বর আসামি রোজিনা আক্তারকে (৩০) আশুলিয়া থানার পলাশবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর আসামি রোজিনা আক্তার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। জবানবন্দিতে সে ও তার স্বামী ২০১৭ সালের ২৩ ডিসেম্বর রাত ৮টায় শহিদুলকে গলা ও পায়ের রগ কেটে হত্যা করে বলে স্বীকার করেছে। পরে আসামি রোজিনার দেওয়া স্বীকারোক্তির পরিপ্রেক্ষিতে হত্যাকাণ্ডের অন্যতম সহযোগী মো. মোমিনকে ৭ ডিসেম্বর রাতে নরসিংদী জেলার মাধবদী থানার ইব্রাহিমপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোমিনও ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে বলে জানায় সিআইডি।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd