মাহফিলে হামলাসহ গাড়ি ভাঙচুর করে চেয়ারম্যান: আল্লাহর কাছে উত্তম বিচার চাইলে হুজুর

প্রকাশিত: ৬:১২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২১

মাহফিলে হামলাসহ গাড়ি ভাঙচুর করে চেয়ারম্যান: আল্লাহর কাছে উত্তম বিচার চাইলে হুজুর

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলায় গোবিন্দপুর ইউনিয়নের নারায়াণপুর গ্রামের মাহফিলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন শামীম গত ৭ ফেব্রুয়ারি রোববার নিজেই মাহফিলের মঞ্চে উঠে ওয়াজরত অবস্থায় মাওলানা এম হাসিবুর রহমানের মাইক কেড়ে নিয়ে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং নিজেকে সন্ত্রাসী এবং গুণ্ডাদের চেয়ারম্যান বলে দাবি করেন।

পরে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী বাহিনী এসে মাওলানা হাসিবুর রহমানের গাড়ি ভাঙচুর করে। তারপর অবস্থা খারাপ হওয়ায় জীবন বাঁচাতে মাওলানা হাসিবুর লাকসাম থানা পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে হুজুর ও তার সফর সঙ্গীদের নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দেন।

গতকাল সোমবার (৯ ফেব্রুয়ারী) বিকাল ৪টা ৪৭ মিনিটে তার ফেসবুকের ভেরিফাইড পেজে মাওলানা হাসিবুর রহমান গাড়ি ভাঙচুরের ছবিসহ চেয়ারম্যানের হামলার ঘটনাটি তিনি নিজ ভাষায় বর্ণনা করেন এবং পৃথকভাবে ওই ঘটনার একটি প্রত্যক্ষ ভিডিও আপলোড করেন। এতে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। সন্ধ্যা ৭টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মাওলানা হাসিবুরের স্ট্যাটাসটিতে লাইক পড়ে ১২ হাজার,কমেন্ট পড়ে ২ হাজার এবং বিভিন্ন জন শেয়ার করে ২ হাজার ২শটি। অপর দিকে হামলার ভিডিও এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৪ হাজার ৫৬৩ জন দেখেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান শামীম হুঙ্কার দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ওই সময় আমি এমন হুঙ্কার না দিলে মাহফিলে উপস্থিত প্রায় ১০/১২ হাজার লোক আমাকে মেরে ফেলতো। মাহফিল পণ্ড করতে গেলেন কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান শামীম বলেন, নিয়ম অনুযায়ী মাহফিলের অনুমুতি নেয়া হয়নি।

মাওলানা এম হাসিবুর রহমানের তার ফেসবুক পেজে দেওয়া স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো, গুণ্ডাবাহিনীর কবলে মাহফিল; আমার গাড়িতে হামলা..

গতকাল কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলায় গোবিন্দপুর ইউনিয়নের নারায়াণপুর গ্রামের মাহফিলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন শামীম-এর নেতৃত্বে তার গুণ্ডাবাহিনী আমার গাড়ি ভাঙচুর করে।

মাহফিলে আমার আলোচনা চলাকালীন স্বঘোষিত এই গুণ্ডা চেয়ারম্যান তার স্বশস্ত্র গুণ্ডাবাহিনী নিয়ে মাহফিলস্থলে এসে মাহফিলে গণ্ডগোল সৃষ্টি করে। তারপর অকথ্য ভাষায় মাহফিলে আগত শ্রোতাগণকে গালিগালাজ শুরু করে এবং আয়োজকগণকে হুমকি দিয়ে বলতে থাকে- আমি গুণ্ডা-মাস্তান থেকে চেয়ারম্যান হয়েছি। যারা মাহফিল আয়োজন করেছো আমি তাদেরকে খুন করবো,কারো লাশ খুঁজে পাওয়া যাবে না।তাদের ঘরবাড়ি মরুভূমি বানিয়ে দিবো। মায়ের পেট থেকে বের করে জবাই করবো–এরকম অকথ্য ও অশালীন কথাবার্তা বলতে থাকে। উপস্থিত হাজার হাজার জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে গেলে পরিবেশ ঘোলাটে হওয়ার আশঙ্কায় আমি সাথে সাথে মোনাজাত দিয়ে মাহফিল শেষ করি।

অতঃপর আমি স্টেজ থেকে নেমে নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশে ফোন করে পুলিশ প্রোটেকশন চাই। এরই মধ্যে স্বঘোষিত এই গুণ্ডা চেয়ারম্যান তার লালিত পালিত গুণ্ডাদেরকে নিয়ে এলাকায় বিভিন্ন গাড়ি পুড়িয়ে দেয়াসহ মাহফিলে আগত বহু লোককে আক্রমণ করেছে। পুলিশ আসতে আসতে তারা আমার গাড়িও ভাঙচুর করেছে। অবশেষে পুলিশের ভাইয়েরা আমাকে নিরাপত্তা দিয়ে আমার লোকজনসহ আমাকে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দিয়েছেন।

এমন লোকেরা জনপ্রতিনিধি হয় কী করে?এদেরকে কারা লালন-পালন করে?এরা মাফিয়াতন্ত্র ক্বায়েম করে জনগণের সেবক না হয়ে শোষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।

আমি,আমার ড্রাইভার ও আমার সফরসঙ্গীগণ নিরাপদ এবং ভালো আছি।দেশ-বিদেশের যারা আমাদের খোঁজ খবর নিয়েছেন তাদের সকলের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি এবং সকলের কাছে দোয়া কামনা করছি।আমাকে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য পুলিশের ভাইদেরকে আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

আমি উত্তম সবর অবলম্বন করলাম এবং আল্লাহর কাছে এসব গুণ্ডা-মাস্তানদের উত্তম বিচার কামনা করছি,নিশ্চয়ই তিনি উত্তম ফায়সালাকারী।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

February 2021
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728  

সর্বশেষ খবর

………………………..