সিলেট ২২শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৩শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:৫৪ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২১
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থেকে পর্যটন নগরী শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে এসেছিলেন এক দম্পতি। রাতযাপনে উঠেছিলেন উপজেলার মৌলভীবাজার সড়কে তামিম রিসোর্ট নামে এক রেস্ট হাউসে। কিন্তু ওই রিসোর্টে ভয়াবহ বিপদের সম্মুখীন হন এ দম্পতি। রিসোর্টের দুই কর্মচারী টিস্যু বক্সের ভেতরে গোপন ক্যামেরা লাগিয়ে রাখেন।
দম্পতির অন্তরঙ্গ দৃশ্য ধারণ করে ব্লাকমেইল করে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে আসছিল ওই রিসোর্টের দুই কর্মচারী। এ ঘটনায় শ্রীমঙ্গল থানায় বুধবার রাতে ভিকটিম কুলাউড়া কালা রায়ের চর এলাকার মুক্তিযোদ্ধা সোহাগ মিয়ার ছেলে রিয়াজউদ্দিন পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে দুই অভিযুক্তকে আসামি করে মামলা করেন।
এমন স্পর্শকাতর ঘটনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শ্রীমঙ্গল থানার এসআই আল আমিনের নেতৃতে একদল পুলিশ মামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কানাইঘাট উপজেলা থেকে রেজোয়ান ও শহরের বিরাইমপুর এলাকা থেকে খালেদ নামে দুই আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
আসামিরা হলেন সিলেট জেলার কানাইঘাট উপজেলার চড়িপারা এলাকার আবুল কালামের ছেলে রেজোয়ান (২৩) ও শহরের বিরাইমপুর এলাকার মৃত শফিক মিয়ার ছেলে খালেদ মিয়া (২৭)।
শ্রীমঙ্গল থানাসূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৯ জুলাই শ্রীমঙ্গলে কুলাউড়া থেকে বেড়াতে আসেন ওই দম্পতি। রাতযাপনে তারা উঠেন উপজেলার মৌলভীবাজার সড়কের তামিম রিসোর্টে।
রিসোর্টের দুই কর্মচারী টিস্যু বক্সের ভেতরে গোপন ক্যামেরা স্থাপন করে দম্পতির শারীরিক মেলামেশার দৃশ্য ধারণ করে। ঘটনার কিছু দিন পর একটা মোবাইল ফোনে রিয়াজউদ্দিনকে ইমু নাম্বারে ফোন করে জানায়, তাদের নোংরা ছবি ও ভিডিও আছে এবং ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ করতে বলে ফোনের লাইন কেটে দেয়।
তার পর গত বছরের ২১ অক্টোবর ‘নাদিরা আক্তার রুমি’ নামে একটা ফেক আইডি থেকে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে রিয়াজউদ্দিনের কাছে তাদের গোপন মেলামেশার দৃশ্যের ছবি পাঠায়। পরে ওই নাম্বার থেকে বাদীর ইমু নাম্বারে কল করে হুমকি দিয়ে জানায়, এই ছবি ও ভিডিও ফেরত পেতে হলে ৫০ হাজার টাকা তাদের দিতে হবে।
যদি টাকা দেওয়া না হয়, তা হলে তাদের এই ভিডিও ও ছবি ইন্টারনেটে ভাইরাল করে দেবে বলে হুমকি দিতে থাকে। এদিকে এমন স্পর্শকাতর ঘটনায় রিয়াজউদ্দিন দম্পতি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। তিনি তাদের সঙ্গে আপসের চেষ্টা চালিয়ে যান। পাশাপাশি আইনের আশ্রয় নেবেন কিনা চিন্তা করতে থাকেন।
বাদীর কাছ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে ইতোমধ্যে তারা ফেসবুকে তাদের বন্ধু ও আত্মীয়স্বজনের কমেন্ট ও ম্যাসেঞ্জারে তাদের নোংরা ছবি ও ভিডিও পোস্ট করতে থাকে।
নিরুপায় হয়ে এই দম্পতি অবশেষে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের শরণাপন্ন হন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ দ্রুত তাদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করে এর মধ্যে থেকে দম্পতির শারীরিক মেলামেশার বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও পাওয়া যায় বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আল আমিন জানান।
প্রাথমিকভাবে আসামিরা পুলিশের কাছে তাদের অপকর্মের স্বীকারোক্তি দিয়েছে। এ ঘটনায় তামিম রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী হারুণ মিয়া জানান, কর্মচারীরা কি করেছে তা আমার জানা নেই। তারা একসময় আমার এখানে ছিল, এখন নেই।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল থানার ওসি (তদন্ত) হুমায়ুন কবির যুগান্তরকে জানান, অভিযোগ পেয়ে আমরা দ্রুত মূল দুই আসামিকে গ্রেফতার করি।
তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ জব্দ করা হয়। আসামিদের রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে। এ ঘটনায় মালিকপক্ষের কোনো সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা তা তদন্ত করে বের করা হবে বলে তিনি জানান।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd