সিলেট ২২শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৩শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:১৬ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২১
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়ের আয়োজন করায় মামার বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া কিশোরী নাজমার নীড়ে ফেরা অনিশ্চিত হয়ে গেছে। মামাদের বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করছিল নাজমা। এ বছর অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার কথা থাকলেও আর্থিক সংকটের কারণে তা আর হয়নি।
মামাদের পছন্দ করা পাত্রের বয়স বেশি হওয়ায় বাড়ি ছেড়ে গত তিন দিন আগে পালিয়ে যায়। পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার চরবিশ্বাস থেকে বাউফলের উদ্দেশ্যে রওনা হলে পথে দশমিনার জোড়া ব্রিজের কাছে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে পথচারীরা উদ্ধার করে গত বুধবার বিকালে দশমিনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন তাকে।
এদিকে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ায় মামা ও নিজের আপন ভাইও নাজমার দায়িত্ব নিতে অনীহা প্রকাশ করেছেন। এখন পুলিশই নাজমার একমাত্র ভরসা বলে জানান নাজমা।
দশমিনা থানার ওসি মো. জসিম বলেন, পরিবার বা স্বজনদের কেউ নাজমাকে নিতে না চাইলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে সেফহোমে রাখার চিন্তা রয়েছে।
গলাচিপার দক্ষিণ চরবিশ্বাস গ্রামের মৃত শফিক হাওলাদারের মেয়ে নিরা নাজিফা রহমান নাজমা। নাজমার বাবা শফিকুল মারা যাওয়ার পরই অন্যত্র বিয়ে করে নাজমাকে তার মামার বাড়ি রেখে মা কুলসুম চলে যান। মামা দুলাল সিকদারের বাড়িতে থেকেই পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিল সে। কিন্তু মামার আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় গত সপ্তাহের কোনো এক সময় একই ইউনিয়নের চরবিশ্বাস গ্রামে পাত্র ঠিক করেন।
মামাদের ঠিক করা পাত্র নাজমার পছন্দ হয়নি বলে জানিয়ে দেয় মামা দুলাল সিকদারকে। আর এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন মামা। ওই রাতে মোবাইলে মায়ের সঙ্গে কথা বলে বিয়েতে অসম্মতির কথা জানিয়ে দেয় নাজমা।
এর পরদিন সকালে বড়ভাই পারভেজের বাড়ি বাউফলের উদ্দেশে রওনা দেয়। কিন্তু ক্লান্ত থাকায় দশমিনার জোড়া ব্রিজের কাছে গেলে মাথা ঘুরে রাস্তায় পড়ে যায়। অজ্ঞান অবস্থায় পথচারীরা তাকে দশমিনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করিয়ে দেন।
এ বিষয়ে নাজমা জানায়, আমি ভাই, মা-মামার কাছেও যেতে চাই না। পুলিশ আমাকে যেইহানে পাডাইবে আমি যামু। কিন্তু আর মামা-ভাইয়ের বাড়ি যামু না।
গলাচিপার চরবিশ্বাস ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চৌকিদার মো. খলিলুর রহমান বলেন, চেয়ারম্যানের নির্দেশমতো আমি নাজমার মামাদের কাছে যাই। কিন্তু তারা এ বিষয়টি পাত্তা দিতে চায় না। ওর (নাজমা) মায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। কিন্তু দীর্ঘদিন আগে নাজমার মা আরেকটি বিয়ে করে বাউফলে থাকেন। সেখানকার ঠিকানা না থাকায় সমস্যা হচ্ছে।
এ বিষয়ে গলাচিপা উপজেলার চরবিশ্বাস ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জেল হোসেন বাবুল মুন্সি বলেন, খবর শুনে আমি নাজমার মামা দুলাল সিকদারকে ডেকে পাঠাই কিন্তু তিনি আসেননি। পরে ছোট মামা জালালের কাছেও চৌকিদার পাঠিয়েছি। তিনিও ঘটনাটি এড়িয়ে থাকতে চান। সব কিছুই আমি প্রশাসনকে অবহিত করেছি।
এ প্রসঙ্গে দশমিনা থানার ওসি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, পরিবারের লোকজন অনীহা প্রকাশ করলে আইনিভাবে সেফহোমে রাখা হবে। তার আগে আমরা আবারো পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করব।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd