সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৭:৪৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৫, ২০২১
নিজস্ব প্রতিবেদক, গোয়াইনঘাট :: কুয়েতে অগ্নিকাণ্ডে মারা যান সিলেটের গোয়াইনঘাটের খোরশেদ আলম। খোরশেদের মৃত্যু খবরে তার বাড়িতে চলছে মাতম। বাবা-মাসহ স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে এলাকার পরিবেশ। মৃত্যুর খবর পেয়ে শত শত মানুষ ভিড় করছে তাদের বাড়িতে।
স্বজনরা জানান, স্বজনরা জানান, মা-বাবা ও স্ত্রী-সন্তানদের মুখে হাসি ফুটাতে ২৫ বছর আগে কুয়েতে কষ্টের প্রবাসজীবন শুরু করেছিলেন খোরশেদ আলম (৪৮)।
খুব স্বচ্ছলতা ফেরাতে না পারলেও খোরশেদের আয়-রোজগারে কোনোমতে চলে যাচ্ছিলো পরিবার। কিন্তু একটি অগ্নিকাণ্ড ছাই করে দিলো খোরশেদের পরিবারের সদস্যদের সকল স্বপ্ন। তাঁর গ্রামের বাড়িতে এখন কান্নার রোল। মা-বাবা ও স্ত্রী-সন্তানদের আর্তনাদে ভারি খোরশেদের বাড়ির আকাশ।
খোরশেদ গোয়াইনঘাট উপজেলার বাঘবাড়ী গ্রামের নেছার আলীর ছেলে। বিবাহিত জীবনে তিনি ৩ ছেলেসন্তানের জনক। তার সন্তানরা হচ্ছেন- আব্দুল হাকিম (১৫), আব্দুর রাহীম (৮) ও আব্দুল মাজেদ (২)।
কুয়েতের আবদালি এলাকায় একটি কৃষি খামারে কাজ করতেন খোরশেদ। শনিবার (১৪ আগস্ট) স্থানীয় সময় রাত ১টার দিকে ওই খামারে আগুন লাগে। এ অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে সিলেট বিভাগের ৩ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে। এর মধ্যে খোরশেদ একজন। ওই খামারে মোট ২০ জন বাংলাদেশি শ্রমিক কাজ করতেন।
খোরশেদ আলমের স্ত্রী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন আমার স্বামী। তাঁর এমন মৃত্যুতে আমরা দু-চোখে এখন অন্ধকার দেখছি। তাছাড়া আমার সন্তানরা তাদের বাবাকে হারানোর সংবাদে দিশেহারা হয়ে গেছে। আমার শ্বাশুড়ি বার বার অজ্ঞান হচ্ছেন ছেলের মৃত্যু সংবাদ শুনে।
এদিকে, কুয়েতের এ অগ্নিকাণ্ডে খোরশেদ ছাড়াও কামাল উদ্দিন (৫১) ও মোহাম্মদ ইসলাম (৩২) নামের সিলেট বিভাগের আরও দুজন মারা গেছেন। এর মধ্যে কামাল উদ্দিনের বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার জুড়ি উপজেলার মাগুরা গ্রামে ও মোহাম্মদ ইসলামের বাড়ি সিলেট জেলার কানাইঘাট উপজেলার বাটিভারা ফইত গ্রামে।
দুর্ঘটনার শিকার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত সম্পর্কে কিছুই বলতে পারছেন না। তবে ধারণা করা হচ্ছে, গ্যাস কিংবা বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আহত মোহাম্মদ আলকাছ নামে একজন প্রবাসী বাংলাদেশি স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাকিরা চিকিৎসা নিয়ে ঘরে ফিরেছেন।
কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান ও শ্রম কাউন্সেলর আবুল হুসেন দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। মরদেহ দেশে পাঠানো ও আহতদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd