খানাখন্দকে ভরা নগরের রাস্তাঘাট : স্মাট সিটি সিলেট যেন মরণফাঁদ

প্রকাশিত: ১১:২৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৫, ২০২১

খানাখন্দকে ভরা নগরের রাস্তাঘাট : স্মাট সিটি সিলেট যেন মরণফাঁদ

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেট নগরকে আলোকিত ও স্মাট সিটি করার দোহাই দীর্ঘদিনের। কিন্তু কথিত স্মাট সিটি ক্রমশ: নগর হয়ে ওঠছে মরণফাঁদ। খানাখন্দকে রাস্তাঘাট ভরে গেছে খানাখন্দকে। নগরের কেন্দ্রস্থলের দুএকটি রাস্তা ছাড়া সব ক’টি রাস্তার ভগ্নদশা ও জলাবদ্ধতা চরমে। সামান্য বৃষ্টি হলেই কোথাও কোথাও রাস্তায় হাটুপানি জমে যায়। বন্দ হয়ে যায় যানচলাচল। বিশেষ করে সিলেট সুনামগঞ্জ সড়কের সুবিদবাজার লন্ডনীরোড, পাঠনটুলা এলাকা দিয়ে বৃৃষ্টির সময় যানচলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। ফলে এসব এলাকার যাত্রীদের প্রায়ই পায়ে হেটে বাসাবাড়িতে পৌঁছাতে হয়। জলাবদ্ধতা ছাড়াও নগরের অধিকাংশ রাস্তায় প্রচুর খানা খন্দক।
নগরের আম্বরখানা-টিলাগড় সড়কটি সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সিলেট-এর। সড়কটির আম্বরখানা, বড়বাজার রাস্তার মুখ, পিডিবি অফিস সংলগ্ন এলাকা, ইলেক্ট্রি সাপ্লাই পর্যন্ত মাত্র কয়েকশ ফুটের মধ্যে রয়েছে অসংখ্য খানাখন্দ। কোথাও কোথাও পুকুরাকৃতির গর্ত। পিচ উঠে গিয়ে অবস্থা এমন হয়েছে যে, রিকশায় একবার এই রাস্তায় গেলে শরীরের হাড়গোড় বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। রিকশা বা অটোরিকশা যাত্রীদের সিট বা রড আঁকড়ে ধরে পড়ে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচার সংগ্রাম করতে হয় প্রায়ই। সড়কটির ইলেক্ট্রিসাপ্লাই পর্যন্ত অংশে প্রতিদিন নাজেহাল হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। ছোট ছোট পুকুরসম অসংখ্য গর্তময় সড়ক দিয়ে রিকশা বা অন্যান্য যানবাহনে চলাচলে যাত্রীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ অবস্থায় রাস্তাটি নিয়ে গোটা এলাকায় চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। তবে সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, সড়কটি তাদের অধীন হলেও হলেও তা সংস্কারের দায়িত্ব নিয়েছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন। বৃষ্টির কারণে সংস্কারে বিলম্ব হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
শাহী ঈদগাহর বাসিন্দ হেলাল আহমদ বলেন, সেই কবে শেষ হয়েছে আম্বরখানা শাহী ইদগাহ সিটি করপোরেশনের ড্রেনেজে ব্যবস্থার উন্নয়ন । এরপর গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে অযত্ন-অবহেেলায় পড়ে রয়েছে। সংস্কার কাজ হয় নি। কদিন আগে শুরু হলেও কাজের গতি অনেকটা কচ্ছপের মত। একটা গাড়িতে করে চলছে দু’পাশের মাটি সরানো ও ফিনিশিংয়ের কাজ। কিন্তু মূল রাস্তায় যে পুকুরের মতো গর্ত, সেগুলো সংস্কারের কোন লক্ষণই দেখা যাচ্ছেনা। যাত্রীদের কোমর ভাঙার মত অবস্থা হয়।
দিনের পর দিন মাসের পর মাস সিলেট মহানগরের এত গুরুত্বপূর্ণ সবক’টি রাস্তা এভাবে পড়ে থাকছে কেন? জানতে রাস্তাটির মালিক পক্ষ সড়ক ও জনপথ বিভাগ সিলেটের নির্বাহী প্রকৗশলী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, এটি আমাদের রাস্তা, এতে কোন সন্দেহ নেই। তবে সিলেট সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড শেষে এটি তাদেরই সংস্কারের কথা। কারণ এই সড়কের সাথে সিটি করপোরেশনের পানির লাইনসহ অন্যান্য স্থাপনার একটি যোগসূত্র বা সম্পর্ক রয়েছে। আর সেকারণে আমাদের সাথে মেয়রের আলোচনা শেষে সড়কটি সংস্কারের দায়িত্ব নিয়েছে সিটি করপোরেশন। তিনি বলেন, সংস্কারের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। খুব তাড়াতাই মূল কাজ শুরু হবে।
মূল নগর সিলেট সার্কিট হাউস-কালীঘাট- মাছিমপুর বাস্তার বেহাল দশা চরমে। ভগ্নদশায় জরাজীর্ণ নাইওরপুল-শিবগঞ্জ, কীনব্রিজ-তোপখানা-শেখঘাট প্রভৃতি মেই রাস্তা। আর পাড়া-মহল্লার রাস্তাগুলোতে কর্তৃপক্ষের নজরের বাইরেই থাকে।
আরেকটি বিষয় প্রানিধানযোগ্য, সিলেট নগরের রাস্তঘাট উন্নয়ন কাজে শত শত কোটি টাকা ব্যয় করা হলেও অপরিকল্পিত ও অনিয়মের আশ্রেেয় কাজ হওয়ায় রাস্তার ভগ্নদশা পিছু ছাড়ছে না নগরের। প্রকৌশলী ও ঠিকাদাররা। পরবর্তী আরেকটি প্রজেক্টের আশায় এমনভাবে কাজ করেন যােেত দ্রুত রাস্তায় খানাখন্দকের সৃষ্টি হয়ে যায়। রাস্তার কাজে কখনো আশপাশের সাথে লেভেল ঠিক রাখা হয় না। এছাড়া অনেক স্থানে রাস্তার মধ্যভাগ নিচু থাকে এবং বৃষ্টির পানি জমে থেকে খানাখন্দকের সৃষ্টি হয় এবং ক্রমে তার বৃহদাকার ধারন করে।
এব্যাপারে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমানের বক্তব্য নিতে চাইলে অনেক ক্ষেত্রে তিনি সাংবাদিকদের ফোন রিসিভ করেন না।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..