জামান-মুক্তাদির’র ঠান্ডা লড়াই : অন্ত:সার শূন্য সিলেট বিএনপি

প্রকাশিত: ১১:২৯ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৫, ২০২১

জামান-মুক্তাদির’র ঠান্ডা লড়াই : অন্ত:সার শূন্য সিলেট বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক :: মুক্তাদির বলয়ের হানার ফলে অন্তসারশূন্য হয়ে পড়ছে সিলেট বিএনপি। স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা এডভোকেট শামসুজ্জামান জামানের পদত্যাগের পর পদত্যাগের হিড়িক পড়ে গেছে সিলেটবিএনপিতে। বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে পদত্যাগ ঘোষনা দিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক দল সিলেট-এর শতাধিক নেতা। প্রথম থেকেই সিলেট বিএনপিতে প্রভাব বলয় ও আধিক্য গড়ে উঠেছিল ইলিয়াস বলয়ের। আর এম ইলিয়াস আলীর ডানহাত ছিলেন এডভোকেট শামসুজ্জামান জামান। তারা দুজন মিলে নানা আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্যদিয়ে তিলে তিলে গড়ে তুলেছিলেন শক্তিশালী দল সিলেট বিএনপি। ইলিয়াস আলী নিখোঁজের পর থেেেক তারই রাজনৈতিক সহচর একমাত্র জামানই হাল ধরে রেখেছিলেন সিলেট বিএনপির।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক পদে থাকা এডভোেেকট শামসুজ্জামান জামানই ছিলেন সিলেট বিএনপির একমাত্র রক্ষাকবচ। অতীতে সিলেটে সরকার বিরোধী যত আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে সবটিতেই ইইলয়াস আলীর অবর্তমানে অগ্রণীর ভ’মিকায় ছিলেন এডভোকেট জামান। ২০০৮ সালে বিএনপির অন্যতম প্রতিষ্টাতা মরহুম এমপি খন্দকার আব্দুল মালিকের পুত্র বিশিষ্ট ব্যবসায়ী খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরে আগম ঘটে সিলেট বিএনপিতে।এর পর তিনি হয়ে যান বিএনপি চেয়ার পার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্ঠা। আর তখন থেকেই ইলিয়াস-জামান বলয়ের বিপরীতে সিলেট বিএনপিতে মুক্তাদির বলয় নামের আরেকটি বলয় গড়ে তুলতে শুরু করেন তিনি। আর এর পর থেকে শুরু হয় দলের পদপদবী নিয়ে দু’বলয়ের মধ্যে ঠান্ডা লড়াই। খন্দকার মুক্তাদির কেন্দ্রের মাধ্যমে জেলা ও মহানগর কমিটিতে দলের উচ্চাসনে বসাতে শুরু করেন নিজ বলয়ের এমন সব নেতাকর্মীদের, বিএনপির দীর্ঘ অন্দোলন সংগ্রাম, জেল-জুলুম ও ত্যাগ-বির্সনে যাদের নুন্যতম কোন ত্যাগ ও ভূমিকা নেই। আর একারণেই ক্ষোভ দানা বাঁধকে থাকে সিলেট বিএনপিতে। দীর্ঘদিনের চাপা এ ক্ষোভের স্ফিারন ঘটিয়ে ১৮ আগষ্ট বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সামসুজ্জামান জামান পদত্যাগ ঘোষনা করেন। দলের গুরু দায়িত্বশীীল নেতা হওয়া সত্বেও তার মতামত ও পরামর্শ উপেক্ষা করে ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না কেের সিলেট জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি ঘোষণা করায় পদত্যাগ করেন তিনি।
এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার (২৫ আগস্ট) সিলেট জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর শাখার স্বেচ্ছাসেবক দলের শতাধিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাকর্মীরা পদত্যাগ করেছেন। সিলেট নগরের মিরাবাজারস্থ একটি হল রুেিম সংবাদ সম্মেলনে করে তারা পদত্যাগ করার ঘোষণা দেন। পদত্যাগ কারীদের মধ্যে সিলেট জেলার ১৪টি উপজেলা ও পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রয়েছেন।
সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আলতাফ হোসেন বিলাল বলেন, একযুগ ধরে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ব্যানারে আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা রেখে যারা জেল-জুলুম গুমসহ নানাধি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাদেরকে বাদ দিয়ে নিস্ক্রিয় ও অযোগ্য এমনকি কমিটিতে ব্যাংক কর্মকর্তাকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি হাস্যকর কমিটি উপহার দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সভাপতি (সিলেট বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত) ও সিলেট জেলার সাবেক আহবায়ক এডভোকেট সামসুজ্জামান জামানের যোগ্য ও সাহসী নেতৃত্বে সিলেটের রাজপথের আলোচিত আন্দোলনের মধ্যে এম. ইলিয়াস আলী নিখোঁজের দীর্ঘ আন্দোলন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবনে থেকে বিতাড়িত করার প্রতিবাদে আন্দোলন, ৯৪দিনের অবরোধের কঠিন কর্মসূচী, ৫ জানুয়ারি নির্বাচন প্রতিহত আন্দোলন, ২০১৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সিলেট হযরত শাহজালাল (রঃ) জিয়ারত আগমনে বাঁধাদানকারী যুবলীগ-ছাত্রলীগকে প্রতিহত করে নেত্রীকে স্ব-সম্মানে সার্কিট হাউজে পৌঁছানো। ৮ফেব্রুয়ারী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রায়ের প্রতিবাদে রাজপথে মিছিল, মিটিং, অবস্থান ধর্মঘট, মানববন্ধন ধারাবাহিক কর্মসূচীগুলো এবং তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সরকারের বিভিন্ন সময় অপপ্রচার, হুলিয়া ও সাজানো রায়ের প্রতিবাদে রাজপথে সকল আন্দোলন-সংগ্রামে এবং উপজেলা ও পৌরসভার আন্দোলনের পাশাপাশি জেলা ও মহানগরের সকল কর্মসূচিতে নিজেদের সাধ্যমতো সর্বোচ্চ ত্যাগ ও পরিশ্রম করেছেন। শত শত মামলা, জেল-জুলুম, নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন। সাম্প্রতিক ঘোষিত কমিটিতে সেই রাজপথ কাঁপানো আন্দোলন সংগ্রামী-পরিশ্রমী ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের কোন মূল্যায়ন করা হয়নি। এতে করে ত্যাগী ও পরিশ্রমী নেতাকর্মীদের চরম অবমূল্যায়ন এমনকি অপদস্ত করা হয়েছে। ফলে নেতাকর্মীদর দলথ্যাগ ছাড়া কোন গত্যন্তর নেই।
বুধবার সংবাদ সম্মেলন কেের পদত্যাগকারী নেতাকর্মীরা হলেন- সিলেট সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক শাহিদুল ইসলাম কাদির, জৈন্তুাপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক আলতাফ হোসেন বিলাল, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সুজন মিয়া, গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক আবুল কালাম, জকিগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক হাসান আহমদ,বালাগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক হেলাল আহমদ, গোলাপগঞ্জ পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক রাজু আহমদ চৌধুরী,কানাইঘাট উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক নাজিম উদ্দিন,কানাইঘাট পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মিজানুর রহমান, জকিগঞ্জ পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সাইফুল ইসলাম সাচ্চু, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলে সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আবুল খয়ের,কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক গিয়াস উদ্দিন বতুল্লা,গোয়াইনঘাট উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক এখলাছুর রহমান,কানাইঘাট উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ফারুক আহমদ মেম্বার, গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক রেজাউল ইসলাম রেজা, জকিগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ওয়েছ আহমদ চৌধুরী, জকিগঞ্জ পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক কাওছার আহমদ, বালাগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক শেখ মো.সাবের আহমদ,জৈন্তুাপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মিসবাহ আহমদ, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক সালমান আহমদ নান্টু,জালাল উদ্দিন,রাজু আহমদ,আখতার আলী, কালাম আহমদ,মখলিছ আহমদ,আরিফ আহমদ,আব্দুল আহাদ পারভেজ,সিদ্দেক আহমদ, কানাইঘাট উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক মিজান আহমদ, কানাইঘাট উপজেলার স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক বদরুল ইসলাম, গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক মাহমুদুল ইসলাম বাচ্চু, মো.আছলাম, সাদিকুর রহমান বাবলু, জৈন্তাপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক কামাল হোসেন, মাহবুবুল আলম শাহিন,রুমেল আহমদ,সাইফুল উল্যা আহমদ,জামিল আহমদ, কিবরিয়া আহমদ,জকিগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক আবুল হোসেন,সামাদুর রেজা,বিশ্বনাথ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সাজ্জাদ আলী শিপলু ,শেখ শাহজাহান আহমদ। এছাড়াও বিভিন্ন উপজেলার ও পৌর শাখার নেতাকর্মীরা পদত্যাগ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন-আমিন আহমদ,মিছবাহুর রহমান,খোকন মিয়া,আলা উদ্দিন আলী,শমসের হোসেন,হান্নান আহমদ,রাব্বি হোসেন,দিলওয়ার হোসেন,শায়েস্তাউর রহমান,আলাল মিয়া,বদরল ইসলাম,মিনহাজ উদ্দিন,শহিদ আহমদ,জাকারিয়া হোসেন,আহমেদ জামিল,রুম্মান আহমদ,ফয়েজ আহমদ প্রমুখ।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..